Thursday, March 5, 2020

ভারতবর্ষে হিন্দু গণহত্যা-২


দেবালয় শহরে মুসলমান জানােয়ারের দল তিন দিন ধরে হত্যা, আক্রমণ, লুণ্ঠন ও ধর্ষণ চালায়। সেখানকার দুর্গ হিন্দু বন্দীতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। সমস্ত পুরুষ বন্দীকে হত্যা ও নারী বন্দীদের মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে বিলি করে। দেবালয়ের প্রধান মন্দির, যার চূড়া এত উঁচু ছিল যে সমুদ্রে বহু দূর থেকে তা দেখা যেত। সেই মন্দিরকে মসজিদ বানানো হয় এবং তার চূড়ার গৈরিক পতাকা নামিয়ে ইসলামের পতাকা ওড়ানো হয়। এবং ৩০ হাজার হিন্দু নারীকে ক্রীতদাসী হিসাবে বাগদাদে পাঠানো হয়। পরে ব্রাহ্মণাবাদ থেকে আরও ১ লক্ষ ক্রীতদাস বাগদাদে পাঠানো হয়(10) ইসলামী মুলুকের তৎকালীন খলিফা জানোয়ার হাজ্জাজ মারা গেলে দেখা যায় তার কারাগারে তখনও ১,৩০,০০০ হিন্দু নারী ও শিশু বন্দী রয়েছে। 
এর প্রায় ৩০০ বছর পরে আর এক মুসলমান জানোয়ার ভারত লুণ্ঠন করতে আসে। ইতিহাসে সে গজনীর মামুদ নামে অধিক পরিচিত। মামুদের প্রধান মন্ত্রী আল উস্ত্রী তার মনিবের দানবীয় কাজকর্ম তারিখ-ই-য়ামিনী গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করে গিয়েছে। পুরুষপুর বা আজকের পেশায়োরে মামুদের দানবীয় হত্যাকাণ্ড বর্ণনা করতে আল উবী লিখছে, “বেলা তখনও দুপুর হয়নি, মুসলমান বাহিনী আল্লার শত্রু কাফেরদের শক্তিশালী ঘাঁটি দখল করে নিল। ১৫ হাজার হিন্দু কেটে তাদের দেহ কার্পেটের মত জমিতে বিছিয়ে দেওয়া হল এবং তা জন্তু জানােয়ার ও পাখীদের খাবারের পরিণত হল। আল্লা আমাদের দখলে এত লুটের মাল এনে দিলেন যা এক অবিশ্বাস্য ব্যাপার, যার মধ্যে ছিল সুন্দর পুরুষ ও সুন্দরী মহিলা সহ ৫,০০,০০০ ক্রীতদাস। সেদিন ছিল ৩৯২ হিজরীর ৮ই মহরম (২৭ শে নভেম্বর, ১০০১ খ্রীঃ)।(11) 

এরপর নন্দনায় লুটের বর্ণনা করতে উত্তী লিখছে, “সুলতান হিন্দুস্থান থেকে মূর্তিপূজা বিদায় করে দেশকে পবিত্র করলেন এবং সব মন্দিরকে মসজিদে রূপান্তরিত করলেন। প্রচুর লুটের মাল সহ সুলতান ফিরে চললেন। এ ছাড়া এত ক্রীতদাস তার সঙ্গে ছিল যে ক্রীতদাসের দাম সস্তা হয়ে গেল। সাধারণ মুদিখানার মালিকও ক্রীতদাসের মালিক হয়ে গেল” (12) 
এরপর থানেশ্বরের গণহত্যা বর্ণনা করতে উৎবী লিখছে, “থানেশ্বরের প্রধান ছিলেন খুবই অবাধ্য এবং তাকে শিক্ষা দিতে সুলতান সসৈন্যে উপস্থিত হল।...এত কাফের কাটা পড়ল যে রক্ত গড়িয়ে নদীতে পড়ল এবং নদীর জল বিবর্ণ ও পানের অযােগ্য হয়ে গেল)। এ ব্যাপারে ফেরিস্তা লিখছে, 
“মুসলমান বাহিনী গজনীতে ২,০০,০০০ ক্রীতদাস নিয়ে উপস্থিত হল। প্রত্যেক সৈন্য এত ক্রীতদাস ভাগে পেল যে গজনীকে ভারতের একটা শহর বলে মনে হতে লাগল।”(14) 
এরপর মামুদ সােমনাথের মন্দির ধ্বংস করে। মন্দিরের শিবলিঙ্গকে ভেঙে টুকরাে টুকরাে করা হয়। কিছু খণ্ডাংশ গজনীতে নিয়ে গিয়ে সেখানকার জাম এ-মসজিদের সিঁড়ি হিসাবে ব্যবহৃত হয়। মন্দির লুঠ করে মামুদ অন্ততপক্ষে ২০,০০,০০০ স্বর্ণমুদ্রা গজনীতে নিয়ে যায়। এখানে লক্ষ্যণীয় ব্যাপার হল, মহম্মদ বিন কাসেম থেকে গজনীর মামুদ পর্যন্ত মুসলমান আক্রমণকারীরা লুটপাট করে আবার দেশে ফিরে যায়। ভারতে সাম্রাজ্য স্থাপন করে ভারতের রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করার কোন অভিপ্রায় ওই সব লুণ্ঠনকারীদের ছিল 
। 
এ ব্যাপারে মহম্মদ ঘােরী হল প্রথম ব্যক্তি যে দিল্লী অধিকার করে, ভারতে মুসলমান শাসনের প্রবর্তন করে। কোরাণের জিহাদের তত্ত্ব দ্বারা উদ্দীপিত এই সব মুসলমান নরপশুর দল ভারতের রাজনৈতিক ক্ষমতা হস্তগত করে কি পৈশাচিক নরমেধ যজ্ঞের অনুষ্ঠান করতে পারে তা বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয়। তাই মহম্মদ ঘােরী থেকে শুরু করে মােগল সম্রাট আওরঙজেবের শাসনকাল পর্যন্ত চলল হিন্দুর এক গ্লানিময় পরাধীনতার ইতিহাস, যার স্থায়ীত্ব ছিল প্রায় ৫৫০ বছর। এই সুদীর্ঘ পরাধীনতার কথা বর্ণনা করতে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন, “প্রতি নিয়ত বিনাশের আশঙ্কার মধ্যে আমাদের পূর্বপুরুষগণকে শতাব্দীর পর শতাব্দী অতিবাহিত করিতে হইয়াছে।” 

মুসলমান বর্বরদের দ্বারা ভারত দখলের ব্যাপারে ঐতিহাসিক উইল ডুরান্ট বিশ্বের সভ্য জগতকে সতর্ক করার জন্য লিখছেন, “মুসলমানদের দ্বারা ভারত বিজয় সভ্য জগতের কাছে একটি অত্যন্ত নিরুৎসাহের ঘটনা, কারণ এই ঘটনা এই বার্তা বহন করছে যে, বহুমূল্যবান, মানবিক ও উৎকৃষ্ট সভ্যতা, মুক্ত চিন্তার সংস্কৃতি ও শান্তির পরিবেশ বাইরে থেকে আসা অথবা দেশের মধ্যেই গড়ে ওঠা বর্বরদের দ্বারা যে কোন মুহূর্তে ধ্বংস প্রাপ্ত হতে পারে”(15) 

Reference:
10. H. M. Elliot & J. Dowson, ibid I, 179 
11. ft. M. Elliot & J Dowson, ibid, II, 27 
12. H. M. Elliot & J, Dowson, ibid, II, 39
13. H. M. Elliot & J, Dowson, ibid, II. 40-41. 
14. H. M. Elliot &J. Dowson, ibid II, 28?
15. Will Durant, The Story of Civilization (as quoted by J. D. Sen in Juhad in India, p-11).


https://www.facebook.com/groups/590050411814603/

No comments: