মতুয়া মাতা সরস্বতী হীরা অরুণ বিশ্বাস


আসবে কুঁড়ি,ফুঁটবে ফুল, মন কাননে।
নয়ন মেলে দেখতে পারি,অঞ্জন টেনে ।।
নয়ন খানি দেখবো টানি,বাহারি শোভা ।
ফুলে ফুলে ভরে যাবে,মন হবে লোভা ।।

আনলাম কিনে গঞ্জ থেকে,চারা-র দল ।
আসলো কুঁড়ি ফুল কাননে,ঢেলেছি জল ।।
দিয়েছি চারায় জৈব সার,ধরে মুকুল ।
 দেখবো ফুলের শোভা,ফুঁটবে নানা ফুল।।

অলি কুল আসবে ছুটে,বসে কতো ফুলে ।
মৌমাছিরা পাগল পারা,মধু নেবে তুলে ।।
বাড়ির শোভা বাড়ে অতি, দেখি মনোরম ।
আখি মেলে জুড়ায় তৃপ্তি, রঙ অনুপম ।।

আসলে কেহ ফুল নিতে, করেছি বারণ ।
অপরূপ সৃষ্টি দেখো,রবি দিলো কিরণ ।।
কোন দেবতা চরণে দিবে,পুষ্প অঞ্জলি ।
সবার বড়ো রবি ঠাকুর, আমরা মালি ।।

ফুল নিতে আসতো নিত্য,পড়শি কাকিমা ।
কা‘র পূজা দেবে,অশ্রু জলে,বলো কাকি-মা ?
নাই কোনো সুফল তাতে,শুধু আনা গোনা ।
মন কভু শোনে বারণ, খুশি থাকে মনা ?

দিয়েছি একটা জবা ফুল, আর দেব না ।
খুশি মনে বাড়ি গেছে,পেয়ে মন গয়না ।।
আসি আবার ফুল নিতে, অন্য এক দিন ।
কথার মালা গেঁথে কাকি,কেনো মন হীন !

ঝরে যাবে ফুল ঠিকই, দাও না একটা ?
রেখেছি কাকি-র কথা, ভরে যদি মনটা ।।
খেয়েছো ভাত ?- বাবা ,বেলা হলো অনেক ?
 খেয়ে নিও আগে ভাগে,শরীর তবে ঠিক ।

নিত্য এসে খবর নিতো , বাবা ঘরে আছো ?
ক‘টা দিন আছে মাসের, পঞ্জিকা টা খোঁজে ?
বলেছে কতো, জ্ঞানি কথা, জীবন সায়াহ্নে,
পাড়ি দিলো, দূর পথ, সূরয অপরাহ্নে ।

জিজ্ঞাসা করি সব শেষে, বলো, কাকি-মা ?
করলে পূজা সরস্বতী, বিদ্যা দেবে, কী মা ?
বলেছে আমায়, কাকি-মা,শ্রেষ্ঠ ব্রত কর্ম ।
পাবেনা কখনো খেতে, যতো করো ধর্ম ।।

আসেনা আগের মতন, এখন কাকি-মা ।
যতন ‘মা’-র বেড়ে গেছে, ব্যাধি করো ক্ষমা ।। 
মাতা পিতা আদর মাখা, নাম সরস্বতী ।
একেছে আল্পনা নিপুণ হাতে, গুণে অতি ।।

বলেছে কাকি, ‘বাবা’, মূখ্যু সুখ্যু মানুষ ।
মানুষ হতে লাগে সবার, মান ও হুশ ।।
তোমরা জানো লেখাপড়া, অনেক টা বেশ ।
বিয়ে দিলো দশ বছরে,শিক্ষা হোলো শেষ ।

স্মৃতি শক্তি প্রখর ছিলো, স্বরণে কথা ।
বলতো আমায় কত নাম,মানশ খাতা ।।
‘কাকা’ ছিলো ড্রেস মাষ্টার,গোপালগঞ্জে ।
মনলোভা মানুষ ছিলো,চিত্ত মনরঞ্জে ।।

‘মতুয়া মনোরঞ্জন’ ছিলো, স্বার্থক নাম ।
ছিলো মতুয়া আলোচক,গুণে মন ধাম ।।
সহসা ঠাই নিলো কাকা,হরি নিত্য ধামে ।
বৈঠা বিহীন তরী চলে,আগমে নিগমে ।।

মতুয়া হারলো এক, সফল গুণি কর্মি ।
দুই পুত্র এক কন্যা,‘মতুয়া’ পথ ধর্মি ।।
‘মতুয়া মাতা’ গুণ গাঁথা,কী বলবো আর !
স্বামী যত্ন ছিলো তাঁর,হৃদ কণ্ঠ হার ।।

দু-এক টাকা, দিলে কাকা,রাখতো জমা ।
সংসার তৈজস পত্রে,থাকেনা যেনো কমা ।।
দেখেছি দু-নয়ন মেলে,কাকিমা কেমন ?
‘মতুয়ামাতা’ কাজে গুণে, কেবলি এমন।।

রাখিতো যতন করে,ঘর-বাহির জল ।
ধরতে পারেনা কভু কাকা,ত্রুটি সকল ।।
বলেছে আমায় তাঁহার, অন্তিম কথা ।
দেহ তরী ঢুবে গেলে,জানাও মোর বার্তা ।।

স্মৃতি সমাধি যেনো করে, ঘরের পাশে ।
ত্রিশূল দণ্ড খানা দিও, তাঁর সকাশে ।।
পদ ধ্বনি শুনবো সবার, মন হরশে ।
থাকে যদি কোনো গুণ,আমার পরশে ।।

সেটুকু গ্রহন করো,ভাসে তব আকাশে ।
অসার ফেলে দাও,সুধা সর শুধু ভাসে ।।
শেষ যাত্রা অন্তিম আশা,তোমাকে সুধাই ।
থাকলে মনে, ওদের সকাশে,বলো তাই ।।

 উড়ে আসে পাখি দল, নীড়ে ফেরে সবাই ।
 সন্ধ্যা মাল্য শঙ্খ ধ্বনি, জয় ডঙ্কা বাজাই ।।
হারায়ে যায় শুভদিন, আর তো ফেরেনা ।
গোনা দিন ফুরায় তবু, হরিতে শান্তনা  ।।

লেখক পরিচিতি :- Arun biswas
https://www.facebook.com/biswas.arun.77

Comments

Popular posts from this blog

গুরুচাঁদ চরিত পর্ব :- 97 নিখিল বঙ্গ নমঃশূদ্র সম্মেলন বা খুলনা কনফারেন্স

Hindus are on the verge of extinction in the Grass of the Python, according to the helpless affectionate.

the sacrifice of Sri Guru Gurchand Thakur's whole life, I am trying to raise my mind