Wednesday, March 18, 2020

মতুয়া মাতা সরস্বতী হীরা অরুণ বিশ্বাস


আসবে কুঁড়ি,ফুঁটবে ফুল, মন কাননে।
নয়ন মেলে দেখতে পারি,অঞ্জন টেনে ।।
নয়ন খানি দেখবো টানি,বাহারি শোভা ।
ফুলে ফুলে ভরে যাবে,মন হবে লোভা ।।

আনলাম কিনে গঞ্জ থেকে,চারা-র দল ।
আসলো কুঁড়ি ফুল কাননে,ঢেলেছি জল ।।
দিয়েছি চারায় জৈব সার,ধরে মুকুল ।
 দেখবো ফুলের শোভা,ফুঁটবে নানা ফুল।।

অলি কুল আসবে ছুটে,বসে কতো ফুলে ।
মৌমাছিরা পাগল পারা,মধু নেবে তুলে ।।
বাড়ির শোভা বাড়ে অতি, দেখি মনোরম ।
আখি মেলে জুড়ায় তৃপ্তি, রঙ অনুপম ।।

আসলে কেহ ফুল নিতে, করেছি বারণ ।
অপরূপ সৃষ্টি দেখো,রবি দিলো কিরণ ।।
কোন দেবতা চরণে দিবে,পুষ্প অঞ্জলি ।
সবার বড়ো রবি ঠাকুর, আমরা মালি ।।

ফুল নিতে আসতো নিত্য,পড়শি কাকিমা ।
কা‘র পূজা দেবে,অশ্রু জলে,বলো কাকি-মা ?
নাই কোনো সুফল তাতে,শুধু আনা গোনা ।
মন কভু শোনে বারণ, খুশি থাকে মনা ?

দিয়েছি একটা জবা ফুল, আর দেব না ।
খুশি মনে বাড়ি গেছে,পেয়ে মন গয়না ।।
আসি আবার ফুল নিতে, অন্য এক দিন ।
কথার মালা গেঁথে কাকি,কেনো মন হীন !

ঝরে যাবে ফুল ঠিকই, দাও না একটা ?
রেখেছি কাকি-র কথা, ভরে যদি মনটা ।।
খেয়েছো ভাত ?- বাবা ,বেলা হলো অনেক ?
 খেয়ে নিও আগে ভাগে,শরীর তবে ঠিক ।

নিত্য এসে খবর নিতো , বাবা ঘরে আছো ?
ক‘টা দিন আছে মাসের, পঞ্জিকা টা খোঁজে ?
বলেছে কতো, জ্ঞানি কথা, জীবন সায়াহ্নে,
পাড়ি দিলো, দূর পথ, সূরয অপরাহ্নে ।

জিজ্ঞাসা করি সব শেষে, বলো, কাকি-মা ?
করলে পূজা সরস্বতী, বিদ্যা দেবে, কী মা ?
বলেছে আমায়, কাকি-মা,শ্রেষ্ঠ ব্রত কর্ম ।
পাবেনা কখনো খেতে, যতো করো ধর্ম ।।

আসেনা আগের মতন, এখন কাকি-মা ।
যতন ‘মা’-র বেড়ে গেছে, ব্যাধি করো ক্ষমা ।। 
মাতা পিতা আদর মাখা, নাম সরস্বতী ।
একেছে আল্পনা নিপুণ হাতে, গুণে অতি ।।

বলেছে কাকি, ‘বাবা’, মূখ্যু সুখ্যু মানুষ ।
মানুষ হতে লাগে সবার, মান ও হুশ ।।
তোমরা জানো লেখাপড়া, অনেক টা বেশ ।
বিয়ে দিলো দশ বছরে,শিক্ষা হোলো শেষ ।

স্মৃতি শক্তি প্রখর ছিলো, স্বরণে কথা ।
বলতো আমায় কত নাম,মানশ খাতা ।।
‘কাকা’ ছিলো ড্রেস মাষ্টার,গোপালগঞ্জে ।
মনলোভা মানুষ ছিলো,চিত্ত মনরঞ্জে ।।

‘মতুয়া মনোরঞ্জন’ ছিলো, স্বার্থক নাম ।
ছিলো মতুয়া আলোচক,গুণে মন ধাম ।।
সহসা ঠাই নিলো কাকা,হরি নিত্য ধামে ।
বৈঠা বিহীন তরী চলে,আগমে নিগমে ।।

মতুয়া হারলো এক, সফল গুণি কর্মি ।
দুই পুত্র এক কন্যা,‘মতুয়া’ পথ ধর্মি ।।
‘মতুয়া মাতা’ গুণ গাঁথা,কী বলবো আর !
স্বামী যত্ন ছিলো তাঁর,হৃদ কণ্ঠ হার ।।

দু-এক টাকা, দিলে কাকা,রাখতো জমা ।
সংসার তৈজস পত্রে,থাকেনা যেনো কমা ।।
দেখেছি দু-নয়ন মেলে,কাকিমা কেমন ?
‘মতুয়ামাতা’ কাজে গুণে, কেবলি এমন।।

রাখিতো যতন করে,ঘর-বাহির জল ।
ধরতে পারেনা কভু কাকা,ত্রুটি সকল ।।
বলেছে আমায় তাঁহার, অন্তিম কথা ।
দেহ তরী ঢুবে গেলে,জানাও মোর বার্তা ।।

স্মৃতি সমাধি যেনো করে, ঘরের পাশে ।
ত্রিশূল দণ্ড খানা দিও, তাঁর সকাশে ।।
পদ ধ্বনি শুনবো সবার, মন হরশে ।
থাকে যদি কোনো গুণ,আমার পরশে ।।

সেটুকু গ্রহন করো,ভাসে তব আকাশে ।
অসার ফেলে দাও,সুধা সর শুধু ভাসে ।।
শেষ যাত্রা অন্তিম আশা,তোমাকে সুধাই ।
থাকলে মনে, ওদের সকাশে,বলো তাই ।।

 উড়ে আসে পাখি দল, নীড়ে ফেরে সবাই ।
 সন্ধ্যা মাল্য শঙ্খ ধ্বনি, জয় ডঙ্কা বাজাই ।।
হারায়ে যায় শুভদিন, আর তো ফেরেনা ।
গোনা দিন ফুরায় তবু, হরিতে শান্তনা  ।।

লেখক পরিচিতি :- Arun biswas
https://www.facebook.com/biswas.arun.77

No comments: