Wednesday, April 19, 2023

মহিলাদের চেয়ে পুরুষের লজ্জা বেশী!


একবার এক স্কুলে স্থানীয় মহিলারা একটি সাধারণ সভার আয়োজন করেছিলেন।
সেখানে কথা বলতে যেয়ে এক মহিলা বললেন যে, "মহিলাদের চেয়ে পুরুষের লজ্জা বেশী।"
কথাটা শেষ করতে না করতেই একজন ভদ্রমহিলা উঠে দাঁড়ালেন। প্রতিবাদের সুরে বললেন, 'দিদি, আপনার কথাটা মানতে পারলাম না। পুরুষ মানুষের আবার লজ্জা দেখলেন কোথায়?
ওরা তো বেশরম- বেলাজ।
প্রথম মহিলা দ্বিতীয় মহিলাকে থামিয়ে বললো, "দিদি, আপনি কি করেন?
তিনি বললেন, এই স্কুলে শিক্ষকতা করি।
প্রথম মহিলা বললেন, কয়জন পুরুষ আর কয়জন মহিলা শিক্ষক আছেন এই স্কুলে?
তিনি বলেন, আমরা সমান সমান- চার জন পুরুষ চার জন মহিলা। হাসি মুখে উত্তর দিলেন ভদ্রমহিলা।
প্রথম মহিলা বললেন, "দিদি আপনি কি কোন দিন আপনার পুরুষ সহকর্মীদের পেট-পিঠ দেখেছেন?"
ভদ্রমহিলা ভ্রু কুচকে তাকালেন।
বললেন তার মানে..?
প্রথম মহিলা বললেন, "দেহ প্রদর্শন করা নির্লজ্জতা। কিন্তু এই কাজটা সাধারণত পুরুষেরা করে না। আপনার যদি কখনো ইচ্ছে হয়, আপনার কোন পুরুষ সহকর্মীর পেট কিংবা পিঠ দেখবেন, তাহলে তাকে ডেকে বলতে হবে ভাই আপনার শার্ট কিংবা পাঞ্জাবীটা একটু উপরে তুলুন তো, আমি আপনার পেট কিংবা পিঠ তা একটু দেখব।
সেই ভাই তখন নির্ঘাত আপনাকে পাগল মনে করবে।
আর আপনার পেট-পিঠ কতভাবে কত এ্যাংগেলে কত শত পুরুষ- মহিলা দেখছে তার কি কোন হিসাব আছে?

পুরুষেরা পেট/পিঠ বের করা পোষাক পরে বাইরে কিংবা অফিস-আদালতে যাবে না, এটা তাদের স্বাভাবিক লজ্জা। যা থাকা উচিত ছিল মেয়েদের। অথচ মেয়েরা কিভাবে গলাটা আর একটু বড় করে কাঁধ এবং বুকের উপরি অংশ বের করা যাবে, কিভাবে জামার হাতার উপরি অংশ কেটে মাসেল দেখানো যাবে- সেই
চেষ্টা করে।

লজ্জাহীনতা মেয়েদের অস্থিমজ্জায় এমনভাবে ঢুকে গেছে যে, এ বিষয়টাকে তারা লজ্জার বিষয় বলে মনেই করে না!

অনুগল্প : লজ্জা

Monday, April 10, 2023

মুশকিল হয়েছিল, শ্মশানে তাঁর পাদুটো কিছুতেই পুড়ছিল না!

তিনি হলেন আটচল্লিশ ইঞ্চি ছাতিওয়ালা ফুটবলার গোষ্ঠ পাল।
খালি পায়ে ফুটবল খেলতেন।
অপর দিকে ইংরেজ খেলোয়াড়রা খেলত বুট পরে।
ইংরেজ খেলোয়াড়রা  গোষ্ঠ পালের দুর্ভেদ্য চীনের প্রাচীর,  কিছুতেই ভেদ করতে পারত না।
 লাথি মেরে বল উড়িয়ে দিত গোষ্ঠ পাল ইংরেজদের দিকে।
শোনা যায়,ছোটবেলায় স্বামী বিবেকানন্দের বাণী  পড়ে ফুটবল খেলার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন।
স্বামীজি বলেছিলেন,
গীতা পাঠের চেয়ে ফুটবল খেলা ভাল।
তাই গোষ্ঠ পালের মনে হল বলে লাথি মেরে ইংরেজের পদাঘাতের জবাব  দিতে হবে।
এভাবেই গোষ্ঠ পালের ফুটবলে মিশে গিয়েছিল ফুটবল আর দেশপ্রেম।
বিশিষ্ট রাজনৈতিক  নেতা অতুল্য ঘোষ একসময় বলেছিলেন যে, 
গোষ্ঠ পাল স্বাধীনতা সংগ্রাম না করেই  একজন  স্বাধীনতা সংগ্রামী। 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথম আলাপে  সস্নেহে বলেছিলেন, 
তুমিই তাহলে চীনের প্রাচীর গোষ্ঠ পাল! 
১৯৬২ সালে ভারতবর্ষে  তিনিই ফুটবলে  প্রথম পদ্মশ্রী সম্মান লাভ করেন।
তিনি ছিলেন একজন মনেপ্রাণে বাঙালি।
রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কার নিতে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রপতির আপ্তসহায়ক নির্দেশ পাঠালেন, গোষ্ঠ পাল যেন গলাবন্ধ কোট পরে আসেন।
গোষ্ঠ পাল জানিয়ে দিলেন তিনি কোট পরবেন না।  
ধুতি পাঞ্জাবী পরে পুরস্কার নেবেন।
রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে গোষ্ঠ পালের কথাই মেনে নেওয়া হল।
এই হলেন গোষ্ঠ পাল!
 গোষ্ঠ পাল মারা যাওয়ার পর শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হল।
আগুনে মৃতদেহের  সব পুড়ে গেল।
কিন্তু  আগুনে  গোষ্ঠ পালের পা দুটো কিছুতেই পুড়ছে না দেখে গোষ্ঠ পালের ছেলে শৌরীশ পাল নিমতলা শ্মশানে উপস্থিত  ফুটবলার শৈলেন মান্নাকে বললেন,  বাবার পা দুটো  পুড়ছে না কেন? 
 শৈলেন মান্না তখন বলে উঠলেন,  গোষ্ঠদার পা যে " সোনার পা।" 
অত সহজে কি পোড়ে?
গতকাল ছিল বিখ্যাত ফুটবলার গোষ্ঠ পালের প্রয়াণ দিবস ( ১৮৯৬ - ১৯৭৬)।  
আমাদের গভীর শ্রদ্ধা রইল।

© পীযূষ দত্ত
তথ্যসূত্রঃ
গোষ্ঠ পালের জীবন নিয়ে নানা লেখা  ও পত্রিকার প্রতিবেদন।
এর ওপর ভিত্তি করে আমার এই লেখা।

Follow অহর্নিশ - Ahornish

শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের বাণী


১. নির্বোধ সরল জাতি মূল নাহি বোঝে।
যে যাহা বলিয়া যায় তাই শুনে মজে।
কি বলিব দুঃখের কথা বুক ফেটে যায়, 
শত্রু কি বান্ধব এরা চেনে নাকো হয়।।

২.বোকা যদি নমঃশূদ্র নীতি নাহি জানে 
শ্রাদ্ধ বিবাহে ব্যয় করে অকারণে।।

৩. ব্রাহ্মণের দুর্নীতি শুরু হলো জানা 
ব্রাহ্মণ্যবাদের প্রতি জেগে ওঠে- ঘৃণা। 
ব্রাহ্মণ রচিত সব অভিনব গ্রন্থ 
ব্রাহ্মণ প্রধান মার্কা বিজ্ঞাপন যন্ত্র।।
ব্রাহ্মণের স্বার্থে তারে শাস্ত্র লেখে তারা।
শাস্ত্রের বিধান মানে অব্রাহ্মণ যারা।।
ব্রাহ্মণ কি অধিকারী দীক্ষাগুরু যারা।
ফাঁকি দিয়ে প্রণামী টাকা নেয় তারা।।
ব্রাহ্মণ প্রধান মার্কা যত শাস্ত্র গ্রন্থ 
সবাই জানিবে শুধু শোষণের যন্ত্র।। 

৪. ভেগধারী বৈষ্ণবের ভিক্ষা নাহি দিবে।
ভিক্ষা দিলে ব্যাভিচার বাড়িয়া  চলিবে।।

৫. স্বর্গের চাবি রাখে ব্রাহ্মণ সুজন ,
পদধুলি দানে করে পাপের মোক্ষন।
জন্ম মৃত্যু বিবাহ আদি কিছু ফাঁক নাই, 
পদে পদে বিপ্র পদে কিছু দেয়া চাই।।

৬.দেবতা মন্দির সবে গড় ঘরে ঘরে।
নিত্যপূজা কর সেথা সরল অন্তরে।।
এইখানে বলি আমি এক সমাচার।
দেবতা মন্দিরে পূজা করিবে কাহার।।
বিশ্বভরে এই নীতি দেখি পরস্পর।
যে যারে উদ্ধার করে সেই তার ঈশ্বর।।
ক্ষত্রগনে রামচন্দ্র রক্ষা করেছিল।
রামকে ঈশ্বর বলি ক্ষত্রিয় মানিল।।
খৃষ্ট আসি জন্মিল খৃষ্টানের ঘরে।
যতেক খৃষ্টান তারা তাঁর পূজা করে।।
এইরূপে খৃষ্ট, কৃষ্ণ কিংবা মহম্মদ।
বিভিন্ন জাতির তারা পরম সম্পদ।।
তোমাদের এইকুলে হরি অবতার।
দয়াকরে নমঃশুদ্রে করিল উদ্ধার।।
তাঁর পূজা কর সবে তাঁর ভক্ত হও।।
নিজ ঘরে ভগবান ফেলে কোথা যাও।।

৭. নরাকারে ভূমন্ডলে যত জাতি আছে ,
এক জাতি বলে মান্য পাবে মোর কাছে।।
       শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ চরিত।

নিচের ছবিটি খুবই দুর্লভ একটি ছবি।



ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের মৃতদেহ। শশ্মানে নিয়ে যাওয়ার পর বিদ্যাসাগরের মৃতদেহের যে দুটি ছবি তোলা হয়েছিল এ ছবিটি তাদের মধ্যে একটি।মৃতদেহকে বসিয়ে রাখাতে ছবিটি অস্বাভাবিক এবং দৃষ্টিকটু হয়েছে, বসে আছেন বাঁদিক থেকে ঈশান চন্দ্র, শম্ভু চন্দ্র, সূর্য কুমার অধিকারী ও পঞ্চম ব্যক্তি নারায়ন, চতুর্থ জনের পরিচয় জানা যায়নি।

১৮৯১ সালের ২৯ জুলাই বাংলা তথা ভারতবর্ষের নারী জাগরণের অগ্রদুত মারা যান।আজ আমাদের ছেলে মেয়েদের শোবার ঘরে শাহরুখ-সালমানের ছবি পাওয়া যায়।অথচ প্রতিটি ভারতবর্ষের তরুনদের বিশেষ করে মেয়েদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত এই অসামান্য মেধাবী,দানবীর মহৎপ্রান মানুষটির প্রতি।

Monday, April 3, 2023

প্ল্যাটফর্মে বসেই পড়াশোনা করেন প্রায় ১২০০ পড়ুয়া

গয়া-মুগলসরাই জংশনের ব্যস্ততম সাসারাম রেল স্টেশন। এই স্টেশনের একটি বিশেষত্ব রয়েছে। এই স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের অনেকটা অংশ জুড়ে সকাল-সন্ধ্যা পড়াশোনা করেন বহু পড়ুয়া।সকালের দু’ঘণ্টা এবং সন্ধ্যায় দু’ঘণ্টা প্ল্যাটফর্মে বসেই পড়াশোনা করেন প্রায় ১২০০ পড়ুয়া।২০০২-২০০৩ সালের দিকে প্রথমে কয়েকজন ছাত্র স্টেশনে এসে পড়াশোনা শুরু করে। এরা মূলত প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা। যেখানে বিদ্যুত্ পৌঁছয়নি এবং মোটা টাকা দিয়ে কোচিং সেন্টারে পড়ার ক্ষমতাও যাদের নেই তারাই স্কুল-কলেজের পড়া সেরে চাকরির জন্য এখানে এসে নিজেদের তৈরি করেন। সিনিয়ররা এখানে জুনিয়রদের সাহায্য করেন কোন পদ্ধতিতে এগিয়ে গেলে সুবিধা হবে বলে দেন। তাই এই সংখ্যাটা দিনে দিনে বেড়ে চলেছে। অনেকে তো এই স্টেশনের আলোয় সারারাত পড়বে বলে স্টেশনেই থেকে যান। এই সমস্ত পড়ুয়াদের সাহায্যে এগিয়ে এসে পটনা রেল পুলিশের সুপারিন্টেডেন্ট জিতেন্দ্র মিশ্র বেশ অভিনব একটা ব্যবস্থা করে দেন। পড়ুয়াদের জন্য তিনি নির্দিষ্ট পরিচয়পত্রেরও ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এই পরিচয়পত্র নিয়ে বিনা বাধায় ওই পড়ুয়ায়া প্ল্যাটফর্মে পড়াশোনা করতে পারেন। মোটকথা যেটা বলতে চেয়েছিলাম শিক্ষা ক্ষেত্রে যেখানে প্রতিদিন প্রতিপদে আমাদের বাংলা পিছিয়ে যাচ্ছে সেখানে বাংলা থেকে দুই দশক আগেও ঢের পিছিয়ে থাকা বিহার আজ গোটা ভারতবর্ষকে শিক্ষা ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে। বিহারী খান স্যারের অনলাইন কোচিং এর ফলোয়ার আজ প্রায় 2 কোটির বেশি ভারতীয়। ভারত বছরে ১০০ জন আইপিএস, আইএস পেলে তার সবথেকে বেশি অংশটাই বিহারের।  এক আজব জাদুককাঠিতে বিহারের শিক্ষা ক্ষেত্রে নকশা বদলে গিয়েছে। কারণ সেখানকার শিক্ষা মন্ত্রী চুরি করে না। মুখ্যমন্ত্রী চোরদের নিরাপত্তা দেয় না। 
সাংবাদিক মলয় দাসের একটা লেখা পড়ছিলাম, দুর্দান্ত লিখেছেন ভদ্রলোক। বাঙালির উৎসব প্রীতি এবং ভিক্ষার দানে মেতে থাকার আনন্দ বাঙালিকে আজ মাটিতে আছড়ে ফেলছে। বেশিদিন নেই যেদিন বাঙালি তার মেধা সম্পূর্ন ত্যাগ করে বিহার কর্ণাটকের ঘরে ঘরে শ্রম ফেরি করতে বেরোবে। শিক্ষা সমাজের মেরুদন্ড তৈরি করে। সেই মেরুদন্ড যখন ভেঙে দেওয়া হয়, পাড়ার গুন্ডা মস্তাদের পুনর্বাসনের নামে যখন শিক্ষক বানানো হয়। তখন সেই সমাজ নিম্নগামী, রুচিহীন, ভঙ্গুর সমাজে পরিণত হবে এটাই অতি সাধারণ বিষয়। 
Malay Das এর লেখাটা সঙ্গে  দিলাম পড়ে দেখতে পারেন। 
বিহার একসময় তাচ্ছিল্যের পাত্র ছিল। তাচ্ছিল্যের কারণও ছিল। লালুজীর মেয়ে ডাক্তারি এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ফার্স্ট হয়ে দিল্লিতে পড়তে গেল, এবং ফেল করলো। সেটা বুঝিয়ে দিল শিক্ষাব্যবস্থার কি হাল। শিক্ষাহীন বিহারে ছিল জাতপাতের রাজনীতি, মাফিয়া রাজ। তাদেরকে শিক্ষা না দিয়ে লড়াই লাগিয়ে দেওয়া হত অন্যদের সাথে। বাইরের কেউ বিহারে চাকরির পরীক্ষা দিতে যেতে পারতো না। স্টেশনের বাইরে বেরোতে দেওয়া হতো না। সারা দেশ হাসতো বিহারকে নিয়ে, লোক হাসা-হাসি করতো লালুজীকে নিয়ে।
বিহারের নতুন জাগরণ হলো নীতিশ কুমারের হাত ধরে। পরীক্ষায় টোকাটুকি বন্ধ করলেন। পাশের হার অনেক কমে গেল। তিনি অটল রইলেন। কোয়ান্টিটি নয় জোর দিলেন কোয়ালিটির ওপর। যে মদ থেকে প্রচুর রাজস্ব আসতো, সেই মদ বন্ধ করলেন রাজ্যকে বাঁচানোর জন্য। কড়া হাতে দমন করলেন জাতপাতের রাজনীতি। দলিত আর রণবীর সেনার লড়াই, রক্তপাত বন্ধ হল। নতুন বিহারের অঙ্কুরোদগম হল। মানসিকতা পরিবর্তন হল বিহারের। হাত পাতা বা‌ গা-জোয়ারি করে নয়, নিজের যোগ্যতায় অর্জন করতে শিখল সর্বভারতীয় চাকরি।
দু'টি ঘটনা আমার নিজের দেখা। প্রথমটি কনকনে এক শীতের ভোরে গয়া বাসস্ট্যান্ড; চায়ের দোকান। বৃদ্ধ চা ওয়ালার কষ্ট শুনে স্থানীয় একজন পরামর্শ দিলেন, ছেলেকে তো দোকানে বসাতে পারো। ফুঁসে উঠলো দোকানদার। আপনাদের ছেলে গভমেন্ট নকরি করবে, আমার ছেলে চা বেচবে? আমি ছেলেকে আইপিএসের কোচিংএ ভর্তি করিয়েছি। ও অফিসার বনবে বাবু। 
অবাক হয়েছিলাম। এক চা'ওয়ালাও এইভাবে ভাবতে পারে!! আর একবার আমাদের স্কুলে একটা গ্রুপ'ডি পরীক্ষার সিট পড়েছিল। বিহার ইউপি থেকে দলে দলে ছেলে এসেছিল পরীক্ষা দিতে। জেনারেল কম্পার্টমেন্টে গাদাগাদি করে এসে, প্ল্যাটফর্মে শুয়ে পরীক্ষা দিয়ে গেছিল।বলেছিল যেখানে যে চাকরির বিজ্ঞাপন বেরোয়, ওরা ফর্ম ফিল আপ করে। চাকরির জন্য সব কষ্ট সহ্য করতে রাজি তারা।....
এরপর দেখেছিলাম একটা খবর। বিহারের সাসারাম প্ল্যাটফর্মে প্রতিদিন বিকেলে জড়ো হয় কয়েকশো ছেলে। গ্রামে তাদের পাওয়ার থাকে না। প্ল্যাটফর্মে ইন্টারনেটের সুবিধা আর কারেন্ট দুই'ই পাওয়া যায়। সেই সুযোগ নিয়ে তারা স্টাডি করে জিআই, জিকে, কারেন্ট টপিক, অংক, ইংরাজি। লক্ষ্য একটাই সরকারি চাকরি পেতে হবে। সারা ভারত অবাক হয়ে দেখেছিল সেই ছবি। চাকরি পাবার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এক যুব সমাজ।
আবার গতকাল ভাইরাল হয়েছে একটি ছবি। পাটনার গঙ্গার তীরে সপ্তাহের শেষে জমায়েত হয়েছে বহু যুবক। রেলের চাকরির ফ্রি কোচিং আর টিপস দেওয়া হচ্ছে সেখানে। সেই কোচিং নিতে গঙ্গার তীর ভরে গেছে।
এবার আমাদের দিকে যদি তাকাই। গর্বিত বাঙালি জাতি। আমরাও ভিড় করি, তবে মেলায়, পুজোয়, মিছিলে, উৎসবে। চাকরির প্রতি আমাদের আগ্রহ কম। আমরা ক্লাব, রাজনীতি ইত্যাদি নিয়ে ব্যস্ত। ফ্রি নেট পেলে পাবজি খেলি, রিল বানাই, ফেসবুক করি, সিনেমা দেখি। দিনের শেষে বলি ওরা মাউরা, গুঠখা, খোট্টারা আমাদের সব দখল করে নিল। তারপর ভিড় করি বেকার'ভাতার লাইনে। ফলে যা হবার তাই হয়, আমরা মাটি কুপিয়ে ১০০ দিনের কাজে সেরা হই, আর ওরা আইএএস, আইপিএস হয়।
একটা পিছিয়ে পড়া রাজ্য নিজের চেষ্টায় উঠে দাঁড়াচ্ছে, প্রতিষ্ঠার জন্য লড়ে যাচ্ছে, আমরা কি শিখছি কিছু ? নাকি ইতিহাস আর আত্মগরিমায় আজও তৃপ্তির চোঁয়া ঢেঁকুর তুলেই যাচ্ছি? মানসিকতায় পরিবর্তন দরকার। তাহলেই ভিক্ষা দিয়ে, প্রাদেশিকতার জিগির তুলে, জাতপাত দিয়ে মাতিয়ে রাখা যাবে না আর। এই ছবি, এই ঘটনাগুলো কি একটুও ভাবায় না! বাঙালির এই জড়ত্ব কি ঘুচবে না! জানি না এ কোন অন্ধকার সময়!

#telentedmusicians #happyhour #Facebookchat #india #hahahaha