Thursday, March 5, 2020

চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়

চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়
----------------------------------------                                    

ছোট থেকেই একটা গান শুনে এসেছি, "চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়" । অনেকেই হয়তো শুনে থাকবেন । ১৯৪৯ সালে তৎকালীন বিতর্কিত বাবরী মসজিদে রামলালা কে প্রতিষ্ঠা করা থেকে, ফৈজাবাদ জেলা আদালতে মামলা যা ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ ৭০ বছর লাগাতার আইনি লড়াই করে, রামমন্দিরের আইনি স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠা করেছে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা । অথচ মহামান্য সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে কেন্দ্রীয় সরকার ট্রাস্ট গঠনের দায়িত্ব পেয়ে, সবার আগে প্রতারণা করেছে হিন্দু মহাসভার সাথে । হিন্দু মহাসভার একজন প্রতিনিধিরও জায়গা পেলেন না সরকার গঠিত রামমন্দির ট্রাস্টে । এমনকি হিন্দু মহাসভার তৎকালীন ফৈজাবাদ জেলা অধ্যক্ষ ও রামমন্দির মামলায় রামলালাকে পূজা করার দাবি নিয়ে যিনি প্রথম মামলাটি করেছিলেন, মাননীয় সর্বোচ্চ আদালত সেই গোপাল সিং বিশারদ কে ২০১৯ দেওয়া সর্বশেষ রায়ে পূজারী বলেও ঘোষণা করেছেন, যদিও ১৯৮৬ সালে তিনি রামলোকে প্রয়াত হয়েছেন কিন্তু হিন্দু মহাসভা আবেদন রেখেছিল, স্বর্গীয় গোপাল সিং বিশারদের সূযোগ্য পুত্র রাম সিং বিশারদকে সেই স্থলে রামমন্দিরের পূজারী ঘোষণা করা হোক । কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার সেই সব প্রস্তাবে কর্নপাত না করে এমন কিছু মানুষকে এই ট্রাস্টের ট্রাস্টি করেছেন, যাদের এই রামমন্দির আন্দোলনে দূরদূরান্ত পর্যন্ত কোন সম্পর্ক নেই ।  তাই সারা দেশ জুড়ে হিন্দু মহাসভার প্রতিটি একনিষ্ঠ সৈনিক ক্ষোভে ফুঁসছেন । 

অন্যদিকে বিজেপির আই টি সেল ও বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে তাদের মুখপত্র স্বস্তিকা পত্রিকা লাগাতার মিথ্যে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে রামমন্দির নিয়ে । হিন্দু মহাসভার প্রশ্ন, বিজেপির আদবানি ছাড়া এমন একজন  তাদের নেতার নাম বলুন  যিনি রামমন্দির আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন ? অনেকেই বাবরী মসজিদ ধ্বংসের উল্লেখ করে, রে রে করে তেড়ে আসবেন, কিন্তু অপ্রিয় সত্যটা হল, বাস্তবে সেদিন তারা বাবরী মসজিদ ভাঙেননি, ভেঙেছেন রামমন্দির, হ্যাঁ রামমন্দির, কারন ঐ বিতর্কিত সৌধটি কোনদিন মসজিদ ছিলো না, অন্তত মাননীয় সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় অনুযায়ী, মুসলিম পক্ষ কোনভাবেই ঐতিহাসিক প্রমান দিতে পারেননি যে, "মীর বাকি" বলে বাবরের কোনদিন কোনো সেনাপতি ছিলো ! আরো ভয়ঙ্কর তথ্য হল, সেদিন মসজিদের নামে তারা শুধু মন্দিরই ভাঙেননি, হিন্দু মহাসভার প্রতিষ্ঠিত যে রামলালাকে নিয়ে ভোট বাজারে বিজেপি আখের গুছাতে ব্যস্ত, সেই রামলালার ডান হাতটিও ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলেন গর্বিত আন্দোলনকারীরা । 

চরম বাস্তব হল,  রামমন্দির বা ভগবান রামকে নিয়ে, কিংবা হিন্দুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিজেপির বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই, তারা রাম, রামমন্দির ও হিন্দুত্ব বেচে শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিঁকে থাকতে চায় । এর প্রথম প্রমাণ হল, বিজেপি দলটির দলীয় সংবিধান, যেখানে হিন্দু জাতীয়তাবাদের ছিটেফোঁটাও নেই, বরং সোচ্চারে গান্ধীর মস্তিষ্ক প্রসূত সমাজবাদ ও "সর্ব ধর্ম সমভাব" সংজ্ঞা দিয়ে একমাত্র স্তুতি করা হয়েছে ধর্মনিরপেক্ষতা বা সেক্যুলারিজমের । ১৯৮০ সালে জন্ম নেওয়ার পর থেকে নয় বছর ধরে তাই, বিজেপি রামমন্দির বা হিন্দুত্বের জন্য একটা কথাও খরচ করেনি । এলাহাবাদ উচ্চ ন্যায়ালয়ের রামমন্দির সংক্রান্ত রায় নিয়ে যখন সারা দেশ উত্তাল, সেই সময় বিজেপি এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে এবং ১৯৮৯ সাল থেকে ভারতীয় জনমানষে হিন্দুত্বের প্রতি, হিন্দু জাতীয়তাবাদের প্রতি যে আগ্রহ দেখা দিয়েছিল, উন্মাদনা দেখা দিয়েছিল, সেটিকে নিজেদের ভোটের ঝুলিতে ভরতে, তারা হিন্দুত্ববাদী সাজে এবং এখনও পর্যন্ত সেই মুখোশ পড়ে তারা ভেতর থেকে গান্ধীর সমাজবাদকেই প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে ।  ভারতবর্ষকে এক স্বচ্ছ, সুন্দর, সুস্থ দেশ হিসেবে দেখার স্বপ্ন অনেক মনীষী ও স্বাধীনতা সংগ্রামীরাই দেখেছিলেন কিন্তু বিজেপির প্রচারিত স্বচ্ছ ভারত অভিযানে, তাই একমাত্র মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর চশমাই স্থান পায় । যদিও বিজেপি হিন্দুত্বের কথা বলে, কিন্তু যে গান্ধীর সমগ্র জীবনের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করলে তাকে হিন্দু বিরোধী বললেও অত্যুক্তি করা হয় না, তার ভাবধারা প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করে । দেশের সর্বত্র বিজেপি কর্মীদের, গান্ধী পদযাত্রা অনুষ্ঠান করার নিদান দেয় । অথচ ঘরের পাশেই বাংলাদেশ দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে হিন্দু মা-বোনদের উপরে যে অকথ্য অত্যাচার হয়ে আসছে, তার বিরুদ্ধে একটি শব্দও খরচ করেন না । বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতে আসলে, তাকে প্রশংসার বন্যায় প্লাবিত করা হয় এবং বিশ্বের দরবারে এই ভাবমূর্তি তুলে ধরা হয়, যেন বাংলাদেশে হিন্দুরা সুরক্ষিত আছেন, খুব সুখ শান্তিতে জীবন কাটে তাদের ।  কিন্তু বাস্তব অতি ভয়ংকর, মোটামুটি এই বাংলার সব মানুষই তা জানেন । 

বিজেপি যে হিন্দু জাতীয়তাবাদের কথা মৌখিকভাবে প্রচার করে, সেই হিন্দু জাতীয়তাবাদের জনক যারা, সেই বিখ্যাত মনীষী, মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দী, মহারাজা মহেন্দ্র প্রতাপ সিং, লালা লাজপত রায়, বালগঙ্গাধর তিলক, রাসবিহারী বসু, বিপিনচন্দ্র পাল, ডঃ শিবরাম বালকৃষ্ণ মুঞ্জে, স্বামী শ্রদ্ধানন্দ, জগৎগুরু শঙ্করাচার্য ডঃ কৃতকোটি, জগৎগুরু শঙ্করাচার্য ভারতীকৃষ্ণ তীর্থ,স্বতন্ত্রতা বীর বিনায়ক দামোদর সাভারকার, এদের কারো কথাই, বিজেপির চিন্তন শিবিরের বড় বড় নেতাদের মাথায় আসে না । যখন কোন সরকারি প্রকল্প অথবা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য, কোন বৃহৎ আকার স্থাপত্য নির্মাণের পরিকল্পনা করেন তারা, তখনও উহ্য থাকে এইসব হিন্দু জাতীয়তাবাদী নেতাদের নাম ।  অথচ এদের নাম ভাঙিয়েই মেকি হিন্দু জাতীয়তাবাদী সেজে, মানুষের কাছে ভোট ভিক্ষা চাইতে এতোটুকু লজ্জা করে না বিজেপি নেতাদের ।

পশ্চিমবাংলার অবস্থাও তথৈবচ । বিগত বছরগুলিতে এই বাংলার বুকে, নেই নেই করে প্রায় শতাধিক জায়গায় মুসলিমদের দ্বারা হিন্দুদের উপরে দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে । দীর্ঘ সময় ধরে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার থাকলেও, এই নিয়ে বঙ্গ বিজেপির ব্যাপক কোন আন্দোলন অথবা হিন্দুদের পাশে দাঁড়ানোর কোনো সদর্থক ভূমিকাই চোখে পড়ে না । বরং সামনে থেকে শাখা সংগঠন হিসাবে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বজরং দল এবং তাদের একনিষ্ঠ ছেলেরা যে আন্দোলন এবং মুসলিম অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল, তারা যখন মিথ্যে মামলায় জেলায় জেলায় জর্জরিত হয়েছেন এবং অধিকাংশ জায়গায় অত্যাচারিত, নিজের গ্রাম ও শহর থেকে বিতাড়িত এবং আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন, তখন এই বিজেপি নেতারা সব কিছু দেখেও চোখ বন্ধ করে রেখেছেন । অর্থাৎ তারা চান, বাংলায় হিন্দুদের লাশের উপর তাদের সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে ।  হিন্দুরা যত অত্যাচারিত হবে, সেই সহানুভূতি তাদের ভোট বাক্স ভরাতে সাহায্য করবে ।  একে কষাইয়ের  রাজনীতি বলে । এই বাংলার একজনও বজরং দলের কর্মী বা বিজেপির একদম নিচুতলার, দলের জন্য সবকিছু উৎসর্গ করে দেওয়া কর্মীরা, জোর গলায়, বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন না, যখন বিপদে পড়েছেন, আইনি সমস্যায় পড়েছেন অথবা তৃণমূলের অত্যাচারের সম্মুখীন হয়েছেন, তখন কোন বিজেপি নেতাকে তার পাশে পেয়েছেন ! 
পশ্চিমবঙ্গের মানুষ, তৃণমূলের মুসলিম তোষণের রাজনীতি এবং সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সব ক্ষেত্রেই তোলা আদায়ের রাজনীতি, সিন্ডিকেটের রাজনীতি, মাস্তানির রাজনীতি থেকে মুক্তি চেয়েছিল । আর তাই বিকল্প হিসেবে বিজেপির ঝুলিতে ভরিয়ে ছিল তাদের আশীর্বাদ ।  কিন্তু বিগত কয়েক বছরে বিজেপির ভূমিকা মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে ।  এরা শুধুমাত্র পরজীবী হিসেবে, তৃণমূলের বি-টিম হিসেবে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত ।  সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে কথাগুলি আরো স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সাধারণ মানুষের সাথে বিজেপির রাজনৈতিক নেতাদের কোনো সম্পর্কই নেই । একটা বাচ্চা ছেলেও জানে যদি কোন ঘটনা বা কোনো দুর্নীতির তদন্ত শুরু করা হয়, তবে ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে ।  ২০১৩ থেকে আজকে দেখতে দেখতে সাত বছর পার  হয়ে যাবার পরেও শুধুমাত্র সিবিআইয়ের জুজু দেখিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলা ছাড়া, বিজেপির নেতারা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য এক ফোটা চোখের জল ফেলেন নি । তাদের সমবেদনা জানাতে কোন আন্দোলন অথবা সদর্থক ভূমিকা নেননি ।  শুধুমাত্র ব্ল্যাকমেইলিং করে নিজেদের আখের গুছিয়েছেন ।  অন্যদিকে নারদা স্ট্রিং অপারেশন এর মত ঘটনায়, যেখানে আদালত ভিডিও ফুটেজের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছে, সেটি নিয়েও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি । পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সহায়তায় সেফ-জোন এ নিয়ে যাওয়া ও পুরো তদন্ত প্রক্রিয়া রাতারাতি ধামাচাপা দেওয়ার সফল প্রয়াস আদতে যে তৃনমূল-বিজেপি দুই দলের মধ্যে আপোষে বোঝাপড়ারই ফল, সেটা এই রাজ্যের প্রতিটি মানুষের কাছেই আজ আর কোনো গোপন বিষয় নয়, চরম সত্য ।  আমরা প্রায়ই দেখি এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখে বিজেপি বিরোধিতার কথা বললেও, নরেন্দ্র মোদিকে কোমরে দড়ি পড়ানোর কথা কথা বললেও, বাস্তবে তিনি ফুলের স্তবক নিয়ে ছুটে যান, বাংলার হস্তশিল্প উপহার দেন বিজেপি নেতাদের এবং দিল্লীতে যে কোন আইন পাশের ব্যাপারে সংসদে রাজ্যসভায়, বিরোধী দলের থেকে তার সমর্থন তুলে নিয়ে, বিজেপি সরকারের আইন পাশ করানোর গুরু দায়িত্ব পালন করেন ।  অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি নেতারা তৃণমূল বিরোধিতার কথা বললেও, বাস্তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতবার দিল্লিতে অর্থের জন্য দরবার করেছেন কিংবা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে দেখা করেছেন, দুহাত ভরে অর্থ দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমোকে ।  তারা একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেন, সৌজন্য বিনিময় করেন, অথচ মানুষকে ধোকা দেওয়ার জন্য মুখে বিরোধিতার কথা বলেন ।  বাস্তবে বঙ্গ বিজেপি ও  তৃণমূলের গোপন গাঁটছাড়া, ধীরে ধীরে, ভোরের আলো ফোটার মত, মানুষের কাছে, যত দিন যাচ্ছে স্পষ্ট হয়ে উঠছে ।

একসময় অটল বিহারী বাজপেয়ী বলেছিলেন, হিন্দু মহাসভা একটি ঘুমন্ত অজগর, একে কখনো জাগিও না । এ যদি জাগে, তবে আমাদের পুরো দলটিকেই গিলে নেবে, কারণ হিন্দু মহাসভার আন্দোলনগুলোর ওপরেই বিজেপি দলটি টিঁকে আছে । বিগত বহুবছর ধরে বিজেপি তাই চেষ্টা করে আসছে, কোনভাবেই যেন হিন্দু মহাসভা তার প্রাপ্য সম্মান এবং আন্দোলন গুলির রূপরেখা মানুষের কাছে তুলে না ধরতে পারে ।  কিন্তু এভাবে হিন্দু মহাসভাকে থামিয়ে রাখা যাবে না । আগামী দিনে হিন্দু মহাসভা তার প্রাপ্য সম্মানের জন্য, দেহের শেষ রক্তবিন্দুটুকু দিতে প্রস্তুত এবং হিন্দু মহাসভার আন্দোলন গুলিকে চুরি করে যারা নিজেদেরকে মানুষের কাছে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, তাদের মুখোশ খোলার জন্য সর্বতোভাবে চেষ্টা করবে ।

আবার এই প্রতিবাদী লেখাটির প্রথম লাইনটি মনে করিয়ে দিতে চাই,  "চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়" । একই সাথে রবীন্দ্রনাথের  কবিতার দুটি ছত্র, 
---"হে মোর দুর্ভাগা দেশ যাদের করেছ অপমান অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান" ।

।। জয় অখন্ড হিন্দু রাষ্ট্র ।। 
।। বন্দেমাতরম্ ।। 

মহন্ত স্বামী সুন্দর গিরী মহারাজ
রাজ্য সভাপতি, পশ্চিমবঙ্গ, 
অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা ।।

No comments: