Sunday, July 26, 2020

'আমরা তোদের মা.কে কেটে খাই৷'.......


ধর্মতলায় জনৈক বাম নেতাকে প্রকাশ্যে বি.ফ খেতে দেখে বাঙ্গালার সাধারন মানুষ ঘৃণায় মুখ ফিরিয়েছিলো৷ কেন সেদিন এই 'অভিনব' 'বি.ফ প্রতিবাদ'টি ধিক্কৃত হয়েছিলো, তা কোনো প্রগতিশীলই বোঝেন নি৷ বি.ফ স্টেকের ছবি ইয়াম্মি ক্যাপশানে সোশাল মিডিয়ায় দিলে বা 'আহা, কি নরম তুলতুলে মাংস, গো' মর্মে নাল ঝরালে 'অশিক্ষিত' হি.ন্দু জনগোষ্ঠী ক্ষিপ্ত হয়, এর পেছনে দীর্ঘ ইতিহাস আছে৷ উপমহাদেশে কোন প্র্যাকটিসিং বা পলিটিক্যাল হি.ন্দুর কাছে(অন্তত যিনি নিজেকে হি.ন্দু বলে দাবী করেন) বিফ নিছকই একটি ফুড হ্যাবিট নয়, হতে পারে না৷ গো.মাং.স আমার, আপনার অস্তিত্বের উপরে আব্রাহামিক আগ্রাসনের একটি বহুল ব্যাবহৃত হাতিয়ার৷

মুঘল যুগে যাওয়ার প্রয়োজন নেই৷ ১৯৪৬ সালের অক্টোবর মাসের নোয়াখালীকেই দেখা যাক৷

হি.ন্দু.দের জীবন কিভাবে বিভীষিকার অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল তা স্মরণ করতে এখনও আঁতকে ওঠেন বেগমগঞ্জ থানার পাঁচ গাঁও-এর মানুষ।

📌" আমাদের পাশেই একটা ব্রাহ্মণ পরিবার ছিল। ওরা ছিল চার ভাই। কু.রবানির দিন ওদের ঠাকুর মন্দিরের সামনে গরু কাটা হল, তারপর ঝুড়ি করে ওদের চার ভাইয়ের ঘরেই মাংস পাঠিয়ে দেওয়া হল। ওরা তাে এসব দেখে একেবারে আঁৎকে উঠেছে আর কী! অনেকে ঘৃণায় বমি করতে শুরু করল। ব্যাস, আর যায় কোথায়। গ্রামের সমস্ত মুসLমান ওদের বাড়ি ঘিরে ধরল। বলল, শালা মা.লা.উ.ন, হারা.মজাদা, আমাদের খাে.দার প্রসাদ অপমান করলি! বিচার বসল, ওদের শাস্তি হল। বাড়ির সব পুরুষকে নাকে খৎ দিতে হল, জরিমানা ধার্য্য হল ২৫০ টাকা।"

শিউলির গােবিন্দপুর গ্রামের এক বৃদ্ধ সজল চোখে জানিয়েছেন কী বীভৎস মানসিক অত্যাচার তাদের সহ্য করতে হয়েছিল। আমরা দু-তিন জন হিন্দু এক সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলছি দেখলেই মুসLমানরা আমাদের টিটকারী দিয়ে ছড়া কাটতঃ

“ওহে পূর্ব পাকিস্তানের বাঁশরি৷ দেখ, বর্ণহি.ন্দু কথা কয় হাত ঠারি, মুখ ঠারি।”

 উপরের এই বর্ণনাগুলির মধ্যে ক্ষীণতম সত্যের অপলাপ নেই। ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত Bengal Press Advisory Committee-র রিপাের্টেও হিন্দুদের এই করুণ অভিজ্ঞতার কথা ব্যক্ত হয়েছে। ঐ সমস্ত নথিপত্র দেখলে বােঝা যায়, নােয়াখালি 'দাঙ্গা'র মাটি তৈরী করার জন্য কী ধুরন্ধর পরিকল্পনার আশ্রয় নেওয়া হয়েছিল। এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অন্যতম পন্থা ছিলো গো.মাং.স খাইয়ে ধর্মান্তরণ৷ এটাই ইতিহাস৷ এইটাই আমার আপনার, প্রতিটা হি.ন্দু.র ইতিহাস৷ 'Food has no religion' হ্যাজ দেওয়ার আগে একটু মনে রাখবেন৷

কয়েকজন ভুক্তভোগীর জবানবন্দি এইস্থলে উল্লেখ করা হলো.....

📌শ্রী উপেন্দ্রচন্দ্র গােপ, পিতা-শ্রী রামবল্লভ গোপ জাতি-গােয়ালা সাং ছয় আনী টবগা, ১৩নং টবগা ইউনিয়ন, থানা রামগঞ্জ, জিলা- নোয়াখালী 

 আমি কুমিল্লা কালেক্টরীতে পিয়নের কাজ করি। পূজার ছুটিতে বাড়ি আসিয়াছিলাম। গত ১১/১০/৪৬ইং শুক্রবার বেলা আনুমানিক ৯টায় পাঁচ শত মুসLমান আমাদের বাড়ীতে চড়াও হয়। ইহারা সকলেই স্থানীয় লােক। অধিকাংশকে চিনি। উহারা বলে, "আমাদের দীন মানিলে তোমাদের ধনপ্রাণ রক্ষা পাইবে, অন্যথায় সব কিছু যাইবে। যদি দীন মানিতে রাজি থাক তবে আমাদের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের বাড়ি (আলি আজ্জম ভূঞা পিতা:- মৃত এবাদ আলী ভূঞা, সাং ছয় আনী টবগা) আস।" আমরা প্রাণের ভয়ে বাড়ীর পুরুষেরা উহাদের সঙ্গে যাইতে রাজী হই। এইরূপভাবে আমাদের স্বশ্রেণি ছয়টি বাড়ীর পুরুষদিগকে প্রেসিডেন্টের বাড়ী নিয়া হাজির করা হয়। প্রেসিডেন্ট আমাদের বলে; "তােমরা মুসLমান হইতে রাজী আছ কিনা? অনাথায় তােমাদের কি ঘটিবে আমি নিতে পারি না।" অগত্যা আমাদিগকে রাজি হইতেই হইল। তখন আমাদিগকে প্রেসিডেন্টের বাড়ীতেই মুসLমানী দীক্ষা দেওয়া হয়। আমরা বাড়ীতে ফিরিয়া আসি। রবিবার দিন সকালবেলা আমাদের বাড়ির কাহারও কাহারও দ্বারাই আমাদের একটি গরু জবাই করান হয়। আরও কোন কোন বাড়ীতে ঐরূপ করান হয়। আমাদের বাড়ীর আমার জেঠাতাে ভাই মৃত মহিমচন্দ্র গােপের বিধবা মেয়ের (২০/২২ বৎসর দুইটি মেয়ে আছে) সহিত আমার আর এক জ্যাঠাতাে ভাই মৃত গিরিশচন্দ্র গােপের পুত্র শ্রী সুরেশচন্দ্র গােপের (১৮/১৯ বৎসর) মুসLমানী মতে বিবাহ দেওয়া হয়। অন্যান্য কোন কোন বাড়ীতেও ঐ জাতীয় বিবাহ হয়। ইহার পর আমাদের বাড়ীতে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা হয় এবং আমাদিগকে এক পংক্তিতে বসিয়া মুসLমানদের সহিতই আহার করিতে বাধ্য করা হয়। অনেক কাকুতি মিনতিতে গাে.মাংস ভক্ষণ হইতে নিষ্কৃতি দেওয়া হয়। এদিকে কাছারী খুলিয়া যাওয়াতে আমি প্রেসিডেন্টের নিকট কুমিল্লা যাওয়ার অনুমতি প্রার্থনা করি। তিনি আমাকে কুমিল্লার কালেক্টরের কাছে জ্বরের অজুহাতে ছুটি চাহিয়া আবেদন করিতে বলেন। ডাকটিকিট না পাইয়া আমি বিনাটিকিটে ঐ মর্মে আবেদন করি। অতঃপর প্রেসিডেন্টকে না জানাইয়াই শুক্রবার (১৮/১০/৪৬ ইং) বাড়ী হইতে চলিয়া আসি। অদ্য নােয়াখালীতে আসিয়া পৌছাই। আমাদের গ্রামের হি.ন্দু বাসিন্দাদের নিরাপত্তার জন্য অবিলম্বে সেখানে সশস্ত্র পুলিশ অথবা সৈন্য পাঠান প্রয়ােজন। এই বিবরণ পড়িয়া ইহারা মর্মার্থ অবগত হইয়া ইহাতে দস্তখত করিলাম।

ইতি
শ্রী উপেন্দ্রচন্দ্র গোপ

📌নাম-বিপিনচন্দ্র দাস ঠিকানা- গ্রাম গুলিশা, জিলা ত্রিপুরা, থানা চাদপুর, পাে:- গুলিশা, পেশা পানের ব্যবসা

গ্রামের বহু বাড়ীতে আগুন লাগান হয়। ভয়ে আমরা এবং গ্রামের আরও হি.ন্দু পরিবার বাড়ী পরিত্যাগ করিয়া জঙ্গলে ও কচুরীপানার তলে আশ্রয় লই। এভাবে একরাত্রি কাটাইবার পর পরের দিন অতিকষ্টে চাঁদপুর রিলিফ ক্যাম্পে আশ্রয় বই।শুনিয়াছি বহু হিন্দু পরিবার মুসLমান করা হইয়াছে তাহাদিগকে গােমাংস ভক্ষণ করানো হইয়াছে এবং তাহাদের নতুন নামকরণ হইয়াছে।

ইতি,
শ্রী বিপিন চন্দ্র দাস

📌নাম-শ্রী উপেন্দ্র কুমার পাল, ঠিকানা- গ্রাম- মজুপুর, থানা:- লক্ষ্মীপুর, জিলা-নোয়াখালী

দুর্গাপূজার ৫/৬ দিন পূর্বে আমি বাড়ী হইতে রওনা হইয়া শ্রীহট্ট জিলার অন্তর্গত বদরপুর বেড়াইতে গিয়াছিলাম। বদরপুর স্টেশনে যাইয়া দেখিতে পাইলাম আমাদের নােয়াখালির লােক প্রায় ১০০০ জমা হইয়াছে। ইহার মধ্যে আমার নিজ গ্রামের একটি লােকও দেখিতে পাইলাম না। অন্যান্য গ্রামের লােকের মুখে শুনিলাম আমাদের লক্ষ্মীপুর থানার সমস্ত গ্রাম আগুন দিয়া পােড়াইয়া দিয়াছে। জিনিষ সকল লুট করিয়া লইয়া গিয়াছে। কতক মানুষকে মুসLমান করিয়া লইয়া গিয়াছে। আর যাহারা মুসLমান হইতে চাহে নাই তাহাদিগকে কাটিয়া ফেলিয়াছে। কুমারী মেয়ে দিকে বলপূর্বক বিবাহ করিয়াছে। এই খবর শুনিয়া আমি তৎক্ষণাৎ দেশে রওনা হইয়াছি। বদরপুর হইতে চৌমুহনী পর্যন্ত নােয়াখালির প্রচুর লােক দেখিয়াছি। বেগমগঞ্জ থানা পার হইয়া কিছুদূর যাওয়ার পর রাস্তায় কতকগুলি মুসLমান একত্র হইয়া বলে যে যদি মুসLমান হইয়া গরুর মাংস খাও তবে দেশে যাইতে পারিবে নচেৎ যাইতে দিবনা। আমি মুসLমান হইতে স্বীকৃত হই নাই। ফিরিয়া আসিতে পথে বেগমগঞ্জ থানায় গেলাম এবং দারােগাবাবুকে দুইজন পুলিশ দেওয়ার জন্য অনুরােধ করিলাম। তিনি উক্তর দিলেন পারিব না। ম্যাজিষ্ট্রেটের অনুমতি লইয়া আস। তখন নিরুপায় হইয়া কলিকাতা চলিয়া আসিলাম। আমার পরিবারের একটি লােকেরও খোঁজ পাই নাই।

ইতি
শ্রী উপেন্দ্রকুমার পাল

📌নাম—শচীন্দ্র কুমার ভৌমিক, ঠিকানা- গ্রাম-জয়কৃষ্ণপুর, জিলা-নোয়াখালী, থানা বেগমগঞ্জ, পাে:-ঘাইচাদ, পেশা:- গুড়ের ব্যবসা।

আমাদের গ্রামের চতুর্পাশ্বের গ্রামে মুসLমানরা আগুন লাগাইয়া দেয়। বহু হি.ন্দু পরিবারকে মুসল.মান করিয়া তাহাদের গাে.মাংস ভক্ষণ করানো হয়। যে দু একটি বড় বড় পরিবার ধর্মান্তর গ্রহণে অস্বীকার করে তাহাদের পরিবারের সকল লােককে কাটিয়া ফেলা হয়। যুবতী মেয়েকে বলপূর্বক বিবাহ করা হয়। অনেক শিশুকে প্রজ্বলিত অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হইয়াছে। এই সকল নিদারুণ অত্যাচার কাহিনী প্রতিদিনই আমরা পার্শ্ববর্তী গ্রাম হইতে পাইতাম। সেই ভয়ে আমি আমাদের গ্রাম আক্রান্ত হওয়ার পুব্বেই গ্রাম ছাড়িয়া চলিয়া আসি। পার্শ্ববর্তী গ্রামে যখন আগুন লাগে তখন ঐ সকল গ্রাম হইতে বহু আশ্রিত আমাদের গ্রামে আশ্রয় লয়। তাহাদের নিকট শুনিতে পাই যে অত্যাচারী মুসLমানগণ তাহাদেরই প্রতিবেশী বন্ধুবান্ধব। 

ইতি
শচীন্দ্রকুমার ভৌমিক 

******

 ইতিমধ্যে অনেক স্বেচ্ছাসেবক সংস্থা নােয়াখালি যেতে আরম্ভ করলাে। তারা অজ পাড়াগাঁয়ে এক হাঁটু জল-কাদা ভেঙে গ্রামগুলােতে উপস্থিত হয়ে দেখলো, হিন্দুরা সব মুসLমান হয়ে বসে আছে। কারো কারো ঘরের দাওয়ায় গো.রু জবাই করা হয়েছে ক.লমা পড়ানো হয়েছে, মুখে বলপুর্বক গো মাংস ঠুসে দেওয়া হয়েছে৷ মহিলাদের চোখ ফুলে জবা ফুলের মতাে লাল হয়ে আছে। তাদের বাড়ির বিবাহযােগ্য কন্যাদের মুসLমানরা অপহরণ করে নিয়েছে। অতএব, তারা জাতিচ্যুত৷ তারা প্রশ্ন করলেন—হিন্দু.রা কি তাদেরকে আবার সমাজে গ্রহণ করবে? তারা কি আমাদের হাতে জল খাবে? ঐ সময়ে রামকৃষ্ণ মিশন থেকে 'পূর্ববঙ্গ ও হিন্দু সমাজ’ নামক একটা বই প্রকাশিত হয়, তাতে নিম্নলিখিত ধর্মগুরুরা বিধান দিয়েছেন, ধর্মান্তরিত হিন্দুদের বিনা বাধায় সমাজে গ্রহণ করার আহ্বান জানানাে হয়েছে। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে ছিলেন.....

১.পুরীর গোবর্ধন মঠের জগৎগুরু স্বামী যোগেশ্বর আনন্দ তীর্থ
২. দাক্ষিণাত্যের কামকোটি পীঠের জগদগুরু শ্রীমৎ শঙ্করাচার্য্য
৩. পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য 
৪. ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী
৫. মহাত্মা গান্ধী
৬. গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজ 
৭. স্বামী মাধবানন্দ, সাধারণ সম্পাদক রামকৃষ্ণ মিশন 
৮. কাশীর পন্ডিতসমাজ

 নোয়াখালীতে যে হি.ন্দুরা গোমাংস খেয়ে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন, একেবারেই 'My food,My choice' এর ধুনকি তুলে নয়, বরং Compulsion বশত, তাদের এবং গোটা হি.ন্দুসমাজের প্রতি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আহ্বান ছিলো,'আমাদের সহস্র সহস্র ভ্রাতা-ভগিনী এইভাবে নতিস্বীকারে বাধ্য হইয়া হিন্দু সমাজের গণ্ডীর বাহিরে চলিয়া গিয়াছেন বলিয়া আমি মনে করিতে পারি না। তাঁহারা হিন্দু ছিলেন, তাহারা এখনও হিন্দু এবং তাহারা আমরণ হিন্দু থাকিবেন। আমাকে করিতে হইবেকোন ব্যক্তিই এরূপ কোন কথা তুলিতে পারিবেন না। এই নির্দেশের বহুল প্রচার করিতে হইবে। প্রায়শ্চিত্তের কথা উঠিতেই পারিবে না। যখনই কোন মহিলাকে উপদ্রুত অঞ্চল হইতে উদ্ধার করা হইবে, বলপূর্বক তাহাকে বিবাহ করা হইলেও তিনি বিনা বাধায় স্বীয় পরিবারে ফিরিয়া যাইবেন। যে সকল কুমারীকে উদ্ধার করা হইবে, যতদুর সম্ভব তাহাদিগকে বিবাহ দিতে হইবে। যদি হিন্দুসমাজও দূরদৃষ্টির সহিত বর্তমান বিপদ উত্তীর্ণ না হইতে পারে, তবে ইহার ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন।'বহুনিন্দিত রক্ষণশীল হি.ন্দুসমাজ সেদিন এই নির্যাতিতদের দুরে ঠেলে দেয় নি,বরং পরিত্রাণে এগিয়ে এসেছিলো৷ ফের স্বধর্মে ফিরিয়েছিলো ধর্মান্তরিত হি.ন্দুদের৷

  চুড়ান্ত অনিচ্ছাসত্ত্বেও সেদিন হি.ন্দুরা প্রবল চাপে গো.মাংস খেতে বাধ্য হয়েছিলো৷আর আজ? গো.মাংস নেহাতই চয়েজ! কেউ বাধা দিলেই সে রিগ্রেসিভ হি.ন্দু! যেহেতু, কাবাব, হালিম, নেহারি খেতে ভালো৷ অতএব দোষের কি আছে? এই সরল সত্যটাই যদি পুর্ব পাকিস্তানের হি.ন্দুরা বুঝতো তবে দিব্যি ক.লমা পড়ে জমি, ভিটে, আমবাগান, পুকুর দখলে রাখতে পারতো৷ নেহাতই বোকা ছিলো, তাই ধর্ম বাঁচাতে শেষমেষ রিফিউজি ক্যাম্পে ডোলের লাইনে দাঁড়ালো৷ ফলস্বরুপ, বাপ ঠাকুদ্দা বিফ মুখে তোলেনি, এই 'গোনাহগারী' র জন্য আজ ছেলে নাতি জাকারিয়াতে হাত চেটে ত.ওবা করছে৷ ধর্মের মত একটা ভোগাস জিনিসের জন্য রসনা সুখ বিসর্জন দেওয়া? আহ ছি ছি হারাম৷

 আপনি হয়ত জানেন না শাস্ত্রে কি আছে। আপনি হয়ত শাস্ত্রবাক্যে তেমন বিশ্বাসী নন। বা শাস্ত্র থেকে নিজের মতামতের সপক্ষে অন্য কোন নিদান তুলে আনবেন৷হয়ত,নতুন করে শাস্ত্র লিখতে বসে পড়বেন৷

 কিন্তু, ভেবে দেখুন স্রেফ গো মাংস খাবে না বলেই, নিজের দেশ, ভিটে মাটি ছেড়ে অনিশ্চিতের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেওয়া, পুরো বাঙ্গালাকে পাকিস্তানে পরিণত হতে দেবো না, এই রক্তপ্রতিজ্ঞায় ঝাঁপিয়ে পড়া আপনার পুর্বপুরুষদের আত্মত্যাগের ইতিহাসকে বিফ স্টেকের সাথে খাচ্ছেন৷ শাস্ত্রজ্ঞ হোন বা না হোন, যদি একমুহুর্তও নিজেকে হিন্দু বলে ভেবে থাকেন, যদি কখনো কালেক্টিভের স্বার্থে ভেবে থাকেন,তবে বিফ খাওয়া আপনার সাজে? শাস্ত্র ছাড়ুন৷ আপনার বিবেক কি বলে??

ভাবুন৷ ভাবা প্র্যাকটিস করুন৷৷৷

তথ্যসুত্র:-

১.অকথিত কাহিনী, রবীন্দ্রনাথ দত্ত
২.নোয়াখালী নোয়াখালী, শান্তনু সিংহ
৩.সাতচল্লিশের ডায়েরী, নির্মল কুমার বসু
৪.পশ্চিমবঙ্গের স্রষ্টা শ্যামাপ্রসাদ, দীনেশ চন্দ্র সিংহ

No comments: