Saturday, August 22, 2020

গুরুচাঁদ চরিত পর্ব :- 49 ধর্ম্ম ও কর্ম্ম সম্মিলনে শ্রীশ্রীহরি–গুরুচাঁদ

আর দিন ভক্তগণে প্রভু ডাকি কয়।


“শুন শনু সাধুগণ শূণ্য পরিচয়।।


এক ব্যক্তি ছিল তার বৃহৎ সংসার।


বহু পুত্র কন্যা দাস দাসী ছিল তাঁর।।


বহু লোক হয় যদি এক পরিবারে।


কি দশা ঘটিতে পারে বুঝহ অন্তরে।।


কর্ম্মক্ষয় পঞ্চপুত্র শুধু কর্ম্ম করে।


বাকী সব নিদ্রালস থাকে দূরে দূরে।।


ভূমি আদি চাষ করি যত কিছু হয়।


পঞ্চ পুত্র সব করেপিতা সাথী রয়।।


কার্যাশেষে সন্ধ্যাকালে পুত্র পঞ্জ জনে।


পিতা ডাকি কাছে লয় মধুর বচনে।।


ধর্ম্মতত্ত্ব, প্রেমালাপ, পিতা কহি যায়।


ভক্তিভরে শুনে তারা বসিয়া তথায়।।


একদিন পঞ্চপুত্র পিতার নিকটে।


আপন মনের কথা বলে অকপটে।।


তারা সবে কার্য করে অন্যে নিদ্রা যায়।


এই চিন্তা তাহাদিগে বহু দুঃখ দেয়।।


পিতার নিকটে তাই বলিল খুলিয়া।


কথা শুনি পিতা তবে বলিল হাসিয়া।।


“বৃথা দুঃখ কর সবে শুন দিয়া মন।


তোমাদের যোগ্য নহে এসব বচন।।


কোন জনে বল পিতা কর্ম্মভার দেয়।


তারে ভার দেয় পিতা যারে ভার সয়।।


আর দেখ পঞ্চ-পুত্র কথা মিথ্যা নয়।


আমি সঙ্গে থাকি সব কাজের সময়।।


তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে সদা আমি রই।


তোমাদের দুঃখে দুঃখী সুখে সুখী হই।।


তোমরা বান্ধব মোর প্রিয় হতে প্রিয়।


কর্ম্মগুণে পেয়ে মোরে দুঃখ না করিও।।


আর দেখ প্রেতিবেশী সবে এই কয়।


পঞ্চ ভাই সবে সৎ অতি মহাশয়।।


অলস পড়িয়া যারা কার্য নাহি করে।


শুধু শুধু অন্ন-ধ্বংস করে এ সংসারে।।


তাহাদের কথা কেহ নাহি আনে মুখে।


পিতৃস্নেহে-হারা তারা থাকে মহাদুঃখে।।


তোমরা কি হতে চাও তাদের মতন?


যশহীন শান্তিহীন সুখেতে মগন?


তোমাদের পক্ষে ভাগ্য এরূপ প্রকার।


জীবনেতে কভু নাহি পাবে অবসর।।


চিরকাল দুঃখে যাবে কর্ম্মের মাঝারে।


কিন্তু সদা সঙ্গে পাবে শ্রীহরিচাঁদেরে।।


আর যদি সুখভোগ করিবারে চাও।


ভক্তি ছেড়ে ভুক্তি নিয়ে সংসার পাতাও।।


কোন পথ চাই সবে বল মোর ঠাঁই।


যাহা চাবে তাহা পাবে ইথে ভুল নাই।।


এই কথা প্রভু যদি বলিল প্রবন্ধে।


ভক্ত সবে অশ্রুনীরে ভাসে প্রেমানন্দে।।


করজোড় করি ভক্ত করে নিবেদন।


‘জড় সুখে প্রভু মোরা চাহিনা কখন।।


যত দুঃখ হয় হোক শঙ্কা নাহি করি।


তুমি যদি সাথে থাক অকুল কান্ডারী।।


যেই কর্ম্ম দিবে প্রভু প্রাণপণ করি।


অবশ্য সাধিব তাহা বাঁচি কিম্বা মরি।।


শক্তি, ভক্তি, একাসনে আসিয়া বসিল।


ধর্ম্ম-কর্ম্ম-সম্মিলন শ্রীগুরু করিল।।

 

মতুয়া-জীবন-পট বিভিন্ন আকারে।


দেখা দিল কর্ম্মক্ষেত্রে ধর্ম্ম-ভিত্তি পরে।।

 

No comments: