Saturday, August 22, 2020

গুরুচাঁদ চরিত পর্ব :- 47 শ্রীযুক্ত কুমুদ বিহারী মল্লিক ও অন্যান্যের চাকুরী প্রাপ্তি

উনিশ শ সাত অব্দে শ্রীশশীভূষণ।


কার্য্য পেয়ে করিলেন বিদেশে গমন।।


এই সমাচার গেল সকলের কাছে।


সকলের প্রাণ তাতে আনন্দেতে নাচে।।


তাঁরা সবে মনে ভাবে নিশ্চয় এখন।


নমঃশূদ্রে কার্য পাবে না হবে লঙঘন।।


আদি-বাধা শশী বাবু দিয়াছে ভাঙ্গিয়া।


খোলা পথে যাব মোরা নিশ্চিন্ত হইয়া।।


এত ভাবি সবে জুটি ওড়াকান্দী এল।


প্রভুর নিকট পুনঃ কহিতে লাগিল।।


দয়া করি শোন প্রভু করি নিবেদন।


উপায়-বিহীন মোরা সবে অভাজন।।


উপায় করুন প্রভু অগতির গতি।


হতাশা হয়েছি মোরা সকলে সম্প্রতি।।


প্রভু বলে ভয় নাই শুন বাপধন।


সকলে চাকুরী পাবে না হবে লঙ্ঘন।।


মীডেরে সকল কথা বলিয়াছি আমি।


কিছুকাল থাক সবে চুপ করে থামি।।


বলিতে বলিতে কথা মীড উপস্থিত।


মীডেরে দেখিয়া প্রভু বড় পুলকিত।।


আদরে আসনে তারে প্রভু বসাইল।


অঙ্গুলি নির্দ্দেশ করি সব দেখাইল।।


মীড বলে ‘বড়কর্তা’ বুঝিয়াছি সব।


এই কার্য হলে তবে জাতির গৌরব।।


এরা সবে দরখাস্ত করিয়াছে কিনা?


চাকুরী হয় না কভু দরখাস্ত বিনা।।


সকলে মীডেরে কহে দিয়াছে দরখস্ত।


কিন্তু কোন খোঁজ নাই দুঃখ এই মস্ত্।।


মীড বলে চিন্তা নাই ভেঙ্গেছে দুয়ার।


শশী কার্য্য পেয়ে হল এই জাতি উদ্ধার।।


শীঘ্র করি কলিকাতা যাইতেছি আমি।


দেখি গিয়ে দরখাস্ত কোথা গেছে থামি।।


এত বলি তাহাদিগে বিদায় করিল।


কিছু দিন পরে মীড কলিকাতা গেল।।


কুমুদের কার্য্য লাভে বাধা কিছু হল।


ভিন্ন-জেলা-বাসী বলি সাহেব কহিল।।


কুমুদের কাছে সব গেল সমাচার।


মনো দুঃখে সে কুমুদ করে তাহাকার।।


উপায় কি করে ভেবে গেল ওড়াকান্দী।


প্রভুর নিকটে গিয়া বলিতেছে কান্দি।।


বড়ই নিরাশ-চিত্তে আসিয়াছি হেথা।


উপায় করুন প্রভু সর্ব্বফল দাতা।।


সকল শুনিয়া প্রভু বলিল তাঁহারে।


“ভয় নাই তুমি গিয়া বল সহেবেরে।।


ওড়াকান্দীবাসী তুমি বাস এ জেলায়।


এই কথা বল গিয়া যাহা ভাগ্যে হয়।।


অভিভাবকের কথা জিজ্ঞাসা করিলে।


আমাকে অভিভাবক দিও তুমি বলে।।


আমি বলি ভয় নাই চাকুরী মিলিবে।


নিশ্চয় ডেপুটী তুমি এই বঙ্গে হবে।।


প্রভুর বাক্যেতে তেহ মূঢ় আস্থা করি।


কথামত কাজ করি পাইল চাকুরী।।


চাকুরী সনদ পত্র এল ওড়াকান্দী।


গুরুচাঁদে করে পূজা করজোড়ে বন্দি।।


মোহন তারিণী আর শ্রীরাধা চরণ।


নিজ মনোমত কার্য পেল সবজন।।


নমঃশূদ্র কার্য পেল প্রভুর দয়ায়।


চারি ধারে সবে বলে জয় জয় জয়।।


জয় গুরুচাঁদ ধ্বনি গাহে সর্ব্ব লোক।


নমঃশূদ্র প্রাণে পায় অনন্ত পুলক।।


আনন্দে সকলে কহে শুন সবে ভাই।


ঘরে ঘরে এইরূপ ছেলে থাকা চাই।।


দলে দলে মেয়ে ছেলে ছুটিল ইস্কুলে।


প্রাণে পণে ছুটি সবে বিদ্যা পাবে বলে।।


বিদ্যার তরঙ্গে নমঃশূদ্র ঝাঁপ দিল।


গুরুচাঁদ কৃপাগুণে এ সব ঘটিল।।

 

No comments: