Monday, August 3, 2020

গুরুচাঁদ চরিত পর্ব :- 23 সভা আয়োজন


বিনয়ে ঈশ্বর কহে গুরুচাঁদ ঠাঁই।


“দয়া করে তীরে চল এই ভিক্ষা চাই।।


তব আগমনে ধন্য আলয় আমার।


আমার সৌভাগ্য বল কিবা আছে আর?


তব পিতা ভাগ্যবান শ্রী হরি ঠাকুর।


উদ্ধারিল জগতের অনাথ আতুর।।


নমঃশূদ্র সবে ধন্য সে রতন পেয়ে।


মনক্ষুণ্ণ এবে, সবে রতন হারায়ে।।

তবু শান্তি পাই মনে তুমি ত রয়ে’ছ।


নমঃশূদ্র উদ্ধারিতে কত না করেছ।।


তব তুল্য কেহ নাই এ নমঃকুলে।


তুমি ত নমঃর রাজা বুঝিনু সকলে।।


পিতা যাঁর ধর্ম্মরাজ প্রভু হরিশ্চন্দ্র।


শিরে তাঁর রাজছত্র বুঝিলাম মর্ম্ম।।


মম গৃহে হয় সভা তোমার ঘটনা।


দয়া করে গৃহে গিয়ে পূরাও বাসনা।।’


ঈশ্বরের স্তুতি বাণী গুরুচাঁদ শুনি।


নামিলেন ভূমিতলে ছাড়িয়া তরণী।।


সাঙ্গ পাঙ্গ চারিধারে চলে সারি সারি।


শ্রী হরি বলিয়া সবে করি শ্রী হরি।।


চলেছেন গুরুচাঁদ বাড়ীর উপর।


কেমনে বর্ণিব শোভা অতি মনোহর।।


রাজতুল্য ব্যক্তি বটে ঈশ্বর গাইন।


রুপি’ছে কদলী বৃক্ষ করিয়া লাইন।।


থরে থরে ফুলরাশি শোভে মাল্য কারে।


দেবদারু – পত্র দোলে তাহার ভিতরে।।


ঘাট-সন্নিধানে দ্বার অর্দ্ধৃ বৃত্তাকারে।


মঙ্গল কলসী শোভে উভে দুই ধারে।।


সিংহদ্বার – সম দৃশ্য সু – উচ্চ প্রাচীর।


পত্র পুস্প আচ্ছাদিত অতি সুগম্ভীর।।


এই রূপ চারিস্থলে চারিটি দুয়ার।


চলে গেছে রাজপথ তাহার ভিতর।।


ধীরে চলে গুরুচাঁদ শিরে ছত্র ধরি।


পাশে পাশে চলিছেন শ্রী বিধু চৌধুরী।।


মন্ত্রীবর যজ্ঞেশ্বর তার পিছে চলে।


হাতে – হাত ধরি রামতনু কথা বলে।।


সবার অগ্রেতে পথ দেখায় ঈশ্বর।


চারিদিকে উঠে ধ্বনি জয় জয়কার।।


ঠেলাঠেলি ফেলাফেলি চলে চারিভিতে।


সবে চায় গুরুচাঁদে একটু দেখিতে।।


রূপ দেখি পালটিতে নাহি পারে আঁখি।


নারীগণে হুলুধ্বনি করে থাকি থাকি।।


জয় হরিচাঁদ জয় সর্ব্বলোকে কয়।


জয় গুরুচাঁদ ধ্বনি উঠিল সভায়।।


বাড়ী ‘ পরে গুরুচাঁদ উদয় হইল।


সু-শ্বেত বিছানা করি বসিবারে দিল।।


নাট-মণ্ডপেতে বসে দয়াল ঠাকুর।


ঘর বেড়ি হুড়া-হুড়ি হ’তেছে প্রচুর।।


সবে বলে ‘ পথ ছাড় মোর দেখা চাই।


এমন মোহন-রূপ আর দেখি নাই।।


এই রূপ চোখে যদি নাহি হল দেখা।


বৃথাই জীবন মোর শুধু বেঁচে-থাকা’।।


কিসে যেন ভুলায়েছে যত নর -নারী।


কেহ বলে ‘হরিপুত্র’ কেহ বলে ‘হরি’।।


যেমন যাহার মন সেই দেখে তাই।


শুধু মাত্র শব্দ শুনি ‘তারে দেখা চাই’।।


এই ভাবে বেলা হল প্রথম প্রহর।


জলযোগ করে প্রভু গৃহের ভিতর।।


ভিড় কিন্তু নাহি কমে ক্রমে বেড়ে যায়।


কেবা মানা করে তা’তে কেবা কান দেয়।।


গগনে হইল বেলা দ্বিতীয় প্রহর।


স্নান করি গুরুচাঁদ করেন আহার।।


উপস্থিত লোক যত আহারাদি কৈল।


সভা করিবারে সবে সভাগৃহে গেল।।

No comments: