Friday, September 18, 2020

গুরুচাঁদ চরিত পর্ব :- 77 তারকচন্দ্র–অমর

মার্গশীর্ষ শেষভাগে তারিখ একুশে।


কায়া ছাড়ি গোস্বামীজী চলে নিজে দেশে।।


দিকে দিকে উঠে ঘোর ক্রন্দোনের রোল।


পশুপাখী, নরনারী সবে উতরোল।।


অপূর্ব্ব শক্তির কথা প্রত্যক্ষ ঘটনা।


মৃত্যু-পরে যেই বার্ত্তা হইল রটনা।।


চন্দ্রদীঘলীয়াবাসী জগদীশ নাম।


ব্রাহ্মণ কুলেতে জন্ম সেই গুণধাম।।


যেদিন তারকচন্দ্র দেহ তেয়াগিল।


সে দিনতে তেঁহ বটে শহরেতে ছিল।।


নামেতে মাদারীপুর শহর সুন্দর।


আড়িয়ালখাঁর পার সুঠাম বন্দর।।


পথিমধ্যে সে তারক তারে দেখা পায়।


ডেকে বলে “জগদীশ শুনহে আমায়।।


ব্রহ্মপুত্রে যাইবারে করিয়াছি মন।


গৃহে ফিরে আর আমি যাবনা এখন।।


আমার দৌহিত্র আছে মম গৃহ পরে।


তার লাগি এই জুতা কিনেছি শহরে।।


তুমি এই জুতা দিয়ে যাও তার লাগি।


তব ঠাঁই এইবারে বিদায় যে গামি।।”


জগদীশ পরে তবে দেশেতে ফিরিল।


দেশে আসি জয়পুরে উপস্থিত হল।।


আসি শোনে সেই দিনে জুতা কিনিয়াছে।


একদিন পূর্ব্বে তাঁর গোস্বামী মরেছে।।


হায়! হায়! কবি দ্বিজ কান্দিতে লাগিল।


দেশে দেশে সে ঘটনা সকলে কহিল।।


আজো সেই জুতোজোড়া আছে জয়পুরে।


সকলে রেখেছে তাহা তারক-মন্দিরে।।


তারকের লীলা খেলা বেলা শেষ হল।


সাধু জনে সবে মিলে হরি হরি বল।।

 

১৩১০ সাল হইতে ১৩২০ সাল পর্যন্ত ঘটনাবলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ

তের শত দশ সালে মধুর শারদ কালে


আরম্ভিল দশভূজা-পূজা।


সপ্তম এডওয়ার্ড করিলেন দেহত্যাগ


শ্রীপঞ্চম জর্জ হল রাজা।।


বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন করিল বাঙ্গালীগণ


“স্বদেশী বলিয়া হ’ল খ্যাত।।


কেহ গেল দ্বীপান্তর কেহ ম’ল ফাঁসি পর


আন্দোলন করে অবিরত।।


আসিল অম্বিকাচরণ ভুলে নমঃশূদ্র গণ


‘স্বদেশী’ সাজিতে হ’ল ব্যস্ত।


প্রভুর নিকটে যায় ভুল ভাঙ্গে দয়াময়


বাক্যযুদ্ধে সকলি পরাস্ত।।


প্রভু যবে করে রাগ আন্দোলন করে ত্যাগ


রাজভক্ত হইল প্রমাণ।।


স্বজাতির দুঃখ হেরে রাজশক্তি ধরিবারে


ইচ্ছঅ করে প্রভু ভগবান।।


নামেতে ডক্টর মীড ধন্য রাজ-পুরোহিত


তাঁর সনে হৈল আলাপন।


প্রেম-গুণে হ’ল বন্দী মীড এল ওড়াকান্দী


স্কুল আরো গড়িল মিশন।।


বঙ্গ এক হল জুড়ে লাট এল ফরিদপুরে


প্রভু তাঁরে করে দরশন।


লাট চিনিলেন তাঁরে তাই বলে উচ্চঃস্বরে


“নমঃশূদ্র-পিত” এইজন।।


হ’ল “দিল্লী দরবার” মেডেলাদি পুরস্কার


রাজভক্ত প্রজা সবে পে’ল।


লাট আসি পুনরায় ফরিদপুর জেলায়


গুরুচাঁদ সে ‘পদক দিল।।


অযথা চন্ডাল গালি নমঃশূদ্র কুল-কালী


মুছিয়া ফেলিতে আয়োজন।


দেশে দেশে আন্দোলন করিল শ্রীগুরু চরণ


চেষ্টা করে নমঃশূদ্রগণ।।


মীড তা’তে দিল সায় কলঙ্ক মুছিয়া য়ায়


নমঃশূদ্র হইল নির্ম্মল।


ঘরে ঘরে শিক্ষা দিতে প্রভু ইচ্ছা করে চিতে


তার লাগি করে আন্দোলন।।


লইয়া স্বজাতি বৃন্দ সভা করে গুরুচন্দ্র


এক সভা করিব বর্ণন।


গোপীনাথ পুর বাসী সকলে জানা’ল আসি


সভা তারা করে আবাহন।।


গুরুচাঁদ মত দেয় মীডে সঙ্গ করি লয়


সভা পরে দিল দরশন।


মীডেরে রাখিতে বাধ্য ইচ্ছা করে ভবারাধ্য


সভাপতি করিবে তাঁহারে।।


কেশব ডাক্তার তায় বহু আপত্তি জানায়


আর বহু কটু উক্তি করে।


নিন্দা করে সাহেবেরে প্রকাশ্য সভার পরে


মীড মনে ভাবে অপমান।


সে সব শুনিয়া কাণে প্রভু দুঃখ পেয়ে মনে


ক্রোধে বলে “ওরে ধরে আন।।


এতই হয়েছে ধন্য কা’র নাহি রাখে মান্য


ভদ্রাভাদ্র না মানে অতিথি।


কিসে এত অহঙ্কার? দেখা’ব সভার পর


শোচনীয় হবে ওর গতি।।”


প্রভু এই রূপে কয় কেশব ডাক্তার তায়


স্তব্ধ হয়ে রহিল সভায়


মনে গণি অপমান কিছু পরে চলি যান


উপস্থিত কুটুম্ব-আলয়।।

 

 

 

উপাধি মজুমদার প্রতিপত্তি বহুতর


সেই গৃহে চলিল ডাক্তার।


তাদের বুঝায়ে কয় স্বজাতির সে সভায়


বড় কর্ত্তা করে কটুত্তর।।


কুটুম্বের অপমানে সবে ব্যথা পেয়ে মনে


সভা গৃহে হ’ল উপস্থিত


শুনিয়া সকল কথা গুরুচাঁদ জ্ঞান-দাতা


প্রত্যুত্তর করে সমুচিত।।


সবারে ডাকিয়া বলে “উত্তর শুনিতে হ’লে


চল সবে আপন ভবনে।


তোমাদের গৃহে বসি সকল উত্তর রাশি


দিব আমি বিবিধ বিধানে।।


তোমরা’ত নহ পর কুটুম্বিতা পরস্পর


তব ঘরে মোর ঘরে আছে।


তোমাদের বাড়ী গিয়ে সবারে একত্রে নিয়ে


আলোচনা করা যাবে পাছে।।


সবে খুসী হ’ল তাতে অতিশয় যতনেতে


প্রভুকে আনিল নিজ গৃহে।


আহারাদি করি শেষ দয়াময় হৃষীকেশ


সবার ডাকিয়া তবে কহে।।


“শুন সবে ভ্রাতৃগণ কথা এক পুরাতন


তোমাদের বংশে ঘটে যাহা।


তোমাদের নাহি মনে কিন্তু আমি নিশিদিনে


ভুলিতে পারিনা কভু তাহা।


নামেতে দুর্গাচরণ এই বংশে মহাজন


সম্পর্কেতে ছিলেন শ্বশুর।


বড় দুঃখ পেল তিনি আমি তাহা সব জানি


সেই দুঃখ করিলাম দূর।।”


অতঃপর দয়াময় সকল খুলিয়া কয়


যে ভাবেতে চাঁদসী ডাক্তার।


বিবাহের উপলক্ষ্যে প্রত্যক্ষে এবং পরোক্ষে


বহু দুঃখ মনে দিল তাঁর।।


সব কথা বলা হ’লে মজুমদারেরা বলে,


“ইনি হ’ন পরম বান্ধব।


ঠিক ঠিক বলিয়াছে তাতে কিবা দোষ আছে


মন্দ কার্য্য করিল কেশব।।”


বহু যত্ন করে পরে প্রভুকে রাখিল ঘরে,


দুই দিনে আসিতে না দেয়।


তৃতীয় দিবস কালে সকলে ডাকিয়া বলে


গুরুচাঁদ প্রভু দয়াময়।।


“ঢাকা যেতে হবে মোর আর নাহি কর জোর


“এবে দেশে করিব প্রস্থান।


বান্ধবের এই রীতি সুঃখে থাকে সাথী


মান কিম্বা হোক অপমান।।”


এভাবে বিদায় নিয়ে আপনার গৃহে গিয়ে


ঢাকা যেতে করিল উদ্যোগ।


যজ্ঞেশ্বর তাতে কয় “মীড সাথে যেতে চায়”


প্রভু কয় “বড় শুভ যোগ।।”


ঢাকা নমঃশূদ্র সভা বিচিত্র সভার শোভা


নমঃশূদ্র সবে যোগ দিল।


জ্ঞানী গুণী সাধু যাঁরা সকলে কহিল তাঁহা


সভাপতি গুরুচাঁদ ভরসা।।


অর্ব্বাচীন একজন তাতে রুষ্ট তার মন


বি,এ, পাশ তিনি একজন।


বিদ্বান থাকিতে ঘরে অন্য সভাপতি করে


হল যেন বৃশ্চিক দংশন।।


ক্ষোভ সম্বরিতে নারে প্রতিবাদ উচ্চস্বরে


সভামধ্যে করিল তখন।


বলে “একি ব্যবহার উপযুক্ত কেহ আর


নাহি নাকি এই সভা পরে?


বিদ্বানের সমাদর বোঝা গেল অতঃপর


নাহি হবে নমঃশূদ্র ঘরে?

 

 

 

জানি উনি ধনবান তাতে পাবে শ্রেষ্ঠ মান?


এই রীতি মানা নাহি যায়।


আমার মন্তব্য এই এইমতে আমি নেই


সভাপতি কর পুনরায়।।


বিশ্বাস শ্রীযজ্ঞেশ্বর ক্রোধে কাঁপে থর থর


ডেকে বলে সভাজন ঠাঁই।


“স্বজাতি বান্ধব বর্গ আমি অতীব অযোগ্য


দু’টী কথা বলিবারে চাই।।


বাবুটীকে নাহি চিনি তবু মনে অনুমানি


বি,এ কিম্বা এম,এ পাশ উনি।


জানি না কয় পুরুষে আছে বিদ্বানের বেশে


দেশ মধ্যে কত বড় ধনী।।


আমি যতদূর জানি নমঃশূদ্র শিরোমণি


তার বংশে আছে কি না আছে।


যদি কেহ থাকে ভাই তাহাতে আপত্তি নাই


সভাপতি হোন নেচে নেচে।।


এই কিবা ব্যবহার? এই নাকি সদাচার?


এই নাকি বিদ্যাশিক্ষা-জ্ঞঅন?


শুন বাবু বলি বার্তা, সভাপতি যেঁই কর্তা


মুনি ঋষি তাঁরে করে ধ্যান।।


বিদেশী ইংরাজ জাতি এই মীড মহামতি


যাঁর রাজ্যে বাস করি মোরা।


তিনি দেখ নতমুখে সম্মান দিয়াছে এঁকে


বসে আছে যেন বাক্য-হারা।।


‘বিদ্যঅ’ বলে অহঙ্কার করিয়াছ সভা পর


বল দেখি বিদ্যা কাকে কয়?


বিদ্যার আদিতে যাহা কভু কি দেখেছ তাহা


তার সাথে আছে পরিচয়?


শুন হে বিদ্বান বাবু বিদ্যা বুদ্ধি সব কাবু


হাবু ডুবু করে যাঁর কাছে।


বিদ্যার জননী যাঁরে সদা পূজে সদাচারে


দেখ তিনি বসিয়া রয়েছে।।


গুণ-মধ্যে রাজা ধর্ম্ম বিদ্যা বুদ্ধি জ্ঞান কর্ম্ম


সবে তাঁর পদানত দাস।


সেই ধর্ম্ম যাঁর বুকে তুমি তাঁরে কোন মুখে


“যোগ্য নহে” করিলে প্রকাশ?”


এই ভাবে কথা কয় যজ্ঞেশ্বর মহাশয়


হেনকালে দাঁড়াইলা মীড।


সভাজনে সম্বোধিয়া বাজে কথা বাদ দিয়া


কথা বলে রাজ পুরোহিত।।


মিষ্ট ভাষে ধীরে ধীরে বলিলেন বাবুটিরে


তাতে বাবু হইল লজ্জিত।


দাঁড়াইয়া করজোড়ে প্রভুকে বিনয় করে


ক্ষমা চাহি নিল যথোচিত।।


যথোচিত সভা হয় ফিরে এল দয়াময়


নিজ বাস ওড়াকান্দী ধামে।


সন্দেহ মীডের মনে কাজ করি কি কারণে


খৃষ্টান না হল এই গ্রামে।।


জানিয়া মীডের মন প্রভু যায় ঘন ঘন


মীড সঙ্গে আলাপন করে।


প্রভু কহে কিবা করি আমার’ত ইচ্ছা ভারী


শশী যেন কোন ভাব ধরে।।”


দেশবাসী জনে কয় “শোন সব মহাশয়


খৃষ্ট-ধর্ম্ম মনে লাগে ভাল।


খৃষ্টান হেইতে মনে ইচ্ছা করে প্রতি ক্ষণে


শুধু বাধা ভেবে পরকাল।।”


এ কথা প্রচার হয় আনন্দিত মীড তায়


ঘন ঘন করে যাতায়াত।


নাম তার বিশ্বেশ্বর ওড়াকান্দী পরে ঘর


খৃষ্টান হইল আকস্মাৎ।।


দেশবাসী জুটি সবে কহে সবে কলরবে


নমঃশূদ্রে নাহি আর রক্ষঅ।


শশীবাবু ছিল দুরে কেহ গেল তাঁর ধারে


পত্র যোগে কেহ করে ভিক্ষা।।

বাবু শীঘ্র বাড়ী চল রসাতলে দেশ গেল


তব পিতা কি জানি কি করে।


জাতি দিল বিশ্বেশ্বর মনে হয় পরস্পর


সবে যাবে খৃষ্টানের ঘরে।।”


শুনি এই সমাচার ব্যস্ত হ’য়ে অতঃপর


শশী বাবু গৃহেতে আসিল।


প্রণমি পিতার পায় করজোড়ে কথা কয়


আঁখি যুগ করে ছল ছল।।


প্রভু তাঁরে বলে হাসি “কি কারণে ওহে শশি


কার্য্য ছাড়ি আসিয়াছ গৃহে?


দেশবাসী সবে বুঝি তোমাকে এনেছে আজি


আমাকে বুঝাতে সমারোহে।।


তার আবশ্যক নাই সব আমি টের পাই


যার কাজ সেই ভাল জানে।


আমাকে খ্রীষ্টান করে হেন শক্তি কেবা ধরে


সব কথা আছে মোর প্রাণে।।


তুমি কার্য্যস্থলে যাও সবাকারে বলে দাও


বৃথা চিন্তা কেন সবে করে।


জাগাতে পতিত জনে কত ভাব ওঠে মনে


মোর কেহ বুঝিতে না পারে।।”


পিতৃ মুখে শুণি বাণী সকলে ডাকিয়া আনি


শশী বাবু বলিলেন কথা।


সবে শান্তি পে’ল প্রাণে শশীবাবু কার্য্যস্থানে


চলিলেন মনে একাগ্রতা।।


প্রভু ত্যাগ করে ভাণ মীডেরে ডাকিয়া কন


“শোন মীড আমি যাহা বলি।


তোমাকে বিশ্বাস করি আছি তব ভাব ধরি


হিন্দু ধর্ম্ম দিছি জলাঞ্জলি।।


পূজিতাম দশভূজা আর কত ছিল পূজা


সব ছাড়ি খৃষ্ট-নীতি শুনি।


ভাবিয়াছি ধর্ম্ম ভরে মীড হেথা বাস করে


ধর্ম্মপ্রাণ মীড গুণমণি।।


ধর্ম্ম মধ্যে জাতি নাই ধর্ম্ম আছে সব ঠাঁই


তার মধ্যে আছে তারতম্য।


যে-ধর্ম্ম সহজ পথে চালায় জীবন রেথ


সেই ধর্ম্ম সর্ব্ব-জন-গম্য।।


যাতে নাই ছলা কলা তাতে নাই কথা-বলা


সহজ ইচ্চায় নাচে প্রানে।


যার আছে পরচার নিশ্চয় তাঁর


ক্ষুদ্র শক্তি ইথে নাহি আন।।


বল তুমি কোন মতে বিশ্বেশ্বর আকস্মাতে


খৃষ্ট-ধর্ম্ম করিল গ্রহণ।


মোর মনে এই লয় ঠেকিয়া পেটের দায়


হিন্দুধর্ম্ম করেছে বর্জ্জন।।


যেই ধর্ম্ম এই ভাব ঘোর স্বার্থন্ধ স্বভাব


সেই ধর্ম্ম আমি নাহি লব।


আমার পিতার ধর্ম্ম সরল সহজ ধর্ম্ম


তাই মেনে নমঃশূদ্র রব।।


এক কথা মহাশয় তোমাকে বলিতে হয়


তব গীর্জ্জা মোর গৃহ ধারে।


তোমার মিশন ধারে তুলি তাহা অতঃপরে


রাখ সেথা পবিত্র আচারে।।


তোমাদের যে-আচার আমাদের ব্যবহার


ভিন্ন ভিন্ন আছে চির দিন।


অশিক্ষিত মোরা সবে হতে পারে কোন ভাবে


গীর্জ্জা তব হইবে মলিন।।”


শুনিয়া প্রভুর কথা মীড হেঁট করি মাথা


বহু চিন্তা উঠে তার মনে।


“যথা আজ্ঞা” বলি মুখে হৃদয়ে পরম দুঃখে


চলি গেল আপন ভবনে।।


কিছু দিন পরে তার চলি গেল পর পার


শ্রীসুরেন্দ্র ঠাকুর সুজন।


দেশবাসী সবে তায় কান্দিয়া আকুল হয়


শোকাকুল হল সর্ব্বজন।।

সনাতন নির্ব্বিকার গুরুচাঁদ মহেশ্বর


ধরা যেন সহে ধরা-ভার।


জন্ম মৃত্যু সম তাঁর কে আপন কেবা পর


চক্ষে বারি নাহি পর তাঁর।।


দেশবাসী জনে জনে প্রভু বলে দিনে দিনে


“কেহ যেন না হয় খৃষ্টান।


তারে দিয়ে যেবা কাজ সব শেষ হল আজ


নিজ ধর্ম্ম রাখ অধিষ্ঠান।।


সমাজের ব্যাধি যত করিবারে অবগত


দেশে দেশে করয়-ভ্রমণ।


ক্রমে তাহা সবাকারে ইচ্ছা করি বলিবারে


যদি গুরু দেয় শ্রীচরণ।।


এবে শুন মধু বাণী কোন ভাবে গুণমণি


পুনরায় পূজে দশভূজা।


কেন পূজা ছাড়ি দেয় কেন করে পুনরায়


কোন ভাবে করে মহা তেজা।।


কিবা ইচ্ছা মনে তাঁর কিবা জানি সমাচার


শুধু মনে যেই টুকু দেখি।


ব্যাখ্যা কিছু নাহি জানি ধরিয়া লেখনীখানি


ইতিহাস তার অত্র লিখি।।


সুবিজ্ঞ রসিক যত পদে করি দন্ডবৎ


এই মাত্র করি নিবেদন।


কল্পকত গুরুচান্দে যে-ফল রয়েছে বেন্ধে


আমি শুধু দিই বিবরণ।।


রসলিপ্সু ভক্ত যাঁরা সেই ফল পিয়ে তাঁরা


রস যাহা কর আস্বাদন।


আমি দীন দুরাচারী কোন গুণে ফলে ধরি


জন্ম তাই গেল অকারণ।।

 

No comments: