স্মৃতি বড় বেঈমান।

স্মৃতি বড় বেঈমান। এই তো কয়েকদিন আগেই অজান্তে কেটে গেলো মে মাসের ৩০ তারিখ !!

অনিতা দেওয়ান- নামটা কি একটু চেনা চেনা ঠেকছে না? বিশেষ করে প্রবীণ প্রজন্মের কাছে?--- আচ্ছা, মনে পড়ছে না? ঠিক আছে, বান তলার কথা মনে পড়ছে? ৩০শে মে ১৯৯০ এর কথা .....?

ভুলে যাওয়াটাই খুব স্বাভাবিক...। মাঝে অনেকগুলো দিনের ব্যাবধান। হয়তো বা প্রজন্মেরও...।

তবে জেনে নিন, এক তথাকথিত সভ্য দেশের অসভ্য সরকারের পাশবিক ইতিহাস! 
বিচারের বানী যেখানে নিভৃতে কাঁদে, চোখের জল বাস্প হয়- আর্তনাদের হাহাকার বাতাসে গুমরে মরে!

৩০ মে, ১৯৯০। রেণু ঘোষ, উমা ঘোষ সহ আরও একজন অফিসার ও তার ড্রাইভার যখন সন্ধ্যে সাড়ে ছয়টা নাগাদ ফিরছিলেন। গোসাবায় একটি টীকাকরণ কর্মসূচী সেরে তাঁরা ফিরছিলেন কোলকাতায় । সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা নাগাদ যখন তারা ই.এম বাইপাসের কাছে বানতলায় পৌঁছান, তখন সিপিএমের পার্টি অফিসের কাছে জনা পাঁচেক মুসলমান যুবক, তাদের গাড়ি থামানোর চেষ্টা করলে, তাদের পাশ কাটাতে গিয়ে গাড়িটি উল্টে যায়। 

এসময় আরও ১০/১২ জন মানুষ, প্রত্যেকেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের, ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তারা সবাই মিলে গাড়িতে থাকা ড্রাইভার এবং স্বাস্থ্যকর্মী অনিতা দেওয়ান, উমা ঘোষ ও রেনু ঘোষকে টেনে হিঁচড়ে গাড়ি থেকে বের করে এবং গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। গাড়ি চালক তাদের বাধা দিতে গেলে তাকে মেরে তার পুরুষাঙ্গে আঘাত করে প্রায় থেঁতো করে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রাখে। 

তিন হিন্দু যুবতী মেয়েকে ১৫/২০ জনে মিলে পার্টি অফিসের পাশের ধানক্ষেতে নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। একজন মহিলা বাধা দিতে গেলে তাকে হত্যা করে এবং অন্য দুজনকে ধর্ষণ করে ফেলে রাখে।

রাত সাড়ে এগারোটার দিকে পুলিশ গিয়ে সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার ক'রে মেয়েদেরকে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে এবং ড্রাইভারকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করে। মেয়েদের অবস্থা এতটাই খারাপ ছিলো যে, প্রথমে ডাক্তাররা তিন মেয়েকেই মৃত মনে করেছিলো। কিন্তু তাদের মধ্যে দুজন বেঁচে ছিলো। 

হাসপাতালে নেওয়ার পরও জীবিত একজনের যোনীর মধ্যে ১২ ইঞ্চি সাইজের একটি ধাতব টর্চলাইট দেখে একজন মহিলা ডাক্তার অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। ড্রাইভারের দেহে ৪৩ টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছিলো এবং তার পুরুষাঙ্গ পিষে যাওয়ায়, সেটার কার্যক্ষমতা সর্ম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। ঘটনার ৫ দিনের মাথায় ঐ ড্রাইভার মারা যান।

পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, প্রশান্ত সূর, ধর্ষকদের রক্ষা করার জন্য বলেছিলো, "আক্রমণকারীরা তাদের শিশুপাচারকারী মনে করে আক্রমন করেছিলো।" 

কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, স্বাস্থ্য বিভাগের এই দল কিছু সংখ্যালঘু মেয়েকে জন্ম নিয়ন্ত্রণের উপকারিতা সম্পর্কে বুঝিয়েছিলো। এটাই ছিলো তাদের অপরাধ। জন্ম নিয়ন্ত্রণ ইসলামে নিষিদ্ধ। একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের পয়দা করে ফায়দা লুটে- ভারত দখলের পথে প্রধান বাধা; তাই এমন নৃশংসভাবে ধর্ষণ ও খুন করে শাস্তি দেয় ঐ তিন  মেয়ে এবং তাদের গাড়ির ড্রাইভার যুবককে। 

এবার দেখা যাক, পশ্চিমবঙ্গের জগদ্দল পাথর, মুসলমানদের তাড়া খেয়ে পূর্ব বঙ্গ থেকে পালিয়ে আসা পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানপ্রেমী মূর্খমন্ত্রী জ্যোতি বসু এই ঘটনা সম্পর্কে কী বলেছিলো ? 

তিনি বলেছিলেন, "ধর্ষণের ঘটনা স্বাভাবিক, “এরকম ঘটনা তো কতই হয়”

তাহলে, তিনযুগ ধরে এঁদের হাতে ছিলো পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের দেখভালের দায়িত্ব। 

ইতিহাস ভোলে না কিছুই।

Comments

Popular posts from this blog

কাঁদে নিদারাবাদ

🕉ঈশ্বর ছাড় দেন, কিন্তু ছেড়ে দেন না!!🕉

বর্ন প্রথা