Friday, May 1, 2020

সমাবর্তন উৎসবে মানুষটার জন্য একটা চেয়ার অবধি রাখা হয়নি। অথচ পদাধিকার বলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য, সমস্ত রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তাঁরই অধীনে।

সমাবর্তন উৎসবে মানুষটার জন্য একটা চেয়ার অবধি রাখা হয়নি। অথচ পদাধিকার বলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য, সমস্ত রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তাঁরই অধীনে।

লোকটা রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। লোকটা অপমানিত বোধ করেছিল।

তার মনে হয়েছিল এটা তার ব্যক্তিগত কোনো অপমান নয়। চেয়ারটা, আমাদের সংবিধান-প্রদত্ত যে চেয়ারটা---তার অপমান।

তবুও, লোকটা সেটা নিজের অপমান বলেই মেনে নিয়েছিল। 

এরপরেও লোকটা অপমানিত হয়েছে।

যখনই দেখেছে প্রশাসনের কোনো স্তরে কমিউনিকেশনের অভাব, নির্লজ্জ দলতন্ত্র জাঁকিয়ে বসেছে, যখনই তা নজরে এসেছে, সে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে চিঠি লিখে জানিয়েছে, এবং যথারীতি ফল না মেলায় অপমানিত বোধ করেছে।

লোকটা অপমানিত হয়েছে। তা নিয়ে মিম নেমেছে, তা নিয়ে ঠাট্টা হয়েছে, তা নিয়ে প্রচুর খিল্লি হয়েছে। 

কিন্তু লোকটা থামেনি।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েও লোকটাকে অসম্মানিত হতে হয়েছিল।তখন কিন্তু লোকটা বলেনি যে অপমানিত বোধ করছি। বলেছিল, ওরা ছাত্রছাত্রী, আমার ছেলেমেয়ের মতো। আমি ওদের সঙ্গে বসতে রাজী, ওদের সব কথা শুনতে রাজী।

কী দরকার ছিল বলুন তো? আগের সব রাজ্যপালদের মত চুপচাপ চেয়ারে বসে, ফিতে কেটে, দু-চারটে মিটিং করে , সব ফাইল হাসিমুখে সই করে কাটিয়ে দিতে পারত তো। কী দরকার ছিল?

কিন্তু না।

লোকটা ভেবেছিল, এই রাজ্যটার নাম পশ্চিমবঙ্গ। #বাঙ্গালীর_রাজ্য। একদা গোপালকৃষ্ণ গোখলে বলেছিলেন, "What Bengal thinks today, India thinks tomorrow." লোকটা সেই কৃষ্টি, সেই সংস্কৃতিকে উপলব্ধি করতে এসেছিল। লোকটা ভেবেছিল, 

#বাঙ্গালীর_রাজ্যে_এসে_নতুন_কিছু_শিখবে। অনেক কিছু শিখবে, অনেক কিছু জানবে।

কিন্তু লোকটা আজ দেখছে এই অবস্থা। যেখানে তথ্য লুকিয়ে রাখা হচ্ছে, যেখানে কোদালকে কোদাল বলা যায়না। বললে পুলিশের বাড়ি খেতে হয়।

লোকটা এসব দেখে অপমানিত বোধ করেছে। লোকটা ভেবেছে, এটা #বাঙ্গালার_সংস্কৃতির_অপমান। সেটা তার নিজেরই অপমান ভেবেছে লোকটা।

আজও যখন এই মহামারীর সময়ে তথ্য লুকিয়ে রাখা হচ্ছে, লোকটা বসে থাকেনি। লোকটা চিঠির পর চিঠি লিখে যাচ্ছে। বারবার চিৎকার করছে, কেন্দ্রীয় দলকে এভাবে আপনি আটকাতে পারেন না। এভাবে ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার বিষয়টি অবহেলা করতে পারেন না। আপনি চূড়ান্ত ব্যর্থ, নিজের অপদার্থতা লুকিয়ে রাখতে আপনি অন্যদের দোষারোপ করছেন। নিজের দায়িত্ব পালন করুন ।

এবং, অপমানিত বোধ করছে। নিজের জন্য নয়। আমার, আপনার জন্য। লোকটা ভবিষ্যতেও অপমানিত বোধ করবে।

আপনারা খিল্লি করতে থাকুন। মিম বানাতে থাকুন। লোকটা সীমিত ক্ষমতার মধ্যে তার নিজের যতটুকু কাজ সেটা করেই যাবে। সংবিধানের আওতায় থেকেই।

শ্রদ্ধা নেবেন, মাননীয় রাজ্যপাল জগদীশ ধনখড়ে।
(সংগৃহীত)

No comments: