* হিজড়া *
✍দেবাশীষ রায় চৌধুরী
(পুনঃপ্রকাশিত)
লেখার নামটা পড়ে অনেক পাঠকেরই নাক চোখ একটু কুঁচকে যেতে পারে কেউবা পাশ কাটাতে পারেন।
আমি কিন্তু সেদিন পাশ কাটাতে পারিনি।
কলকাতার দিকে একটা বিশেষ কাজ ছিল। বাস পেয়ে গেলাম। এমনকি জানলার ধারে একটা বসার সিটও পেয়ে গেলাম।
অনেকটা পথ। ঠান্ডা গরম হাওয়ায় একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে ভাত ঘুমের মৌতাত নিচ্ছি।
এমন সময় তেনারা বাসে উঠলেন।
জনা তিনেক হবে। না, যাত্রী হিসেবে নয়। যাত্রীদের থেকে কিছু পয়সা তুলতে।
হঠাৎ চড়াৎ চড়াৎ হাততালির এবং কড়কড়ে গলার আওয়াজে রেশমি ঘুমটা চটকে যেতে একটু বিরক্তই হয়েছিলাম।
যারা মুখ ঘুরিয়ে বসেছিল বা ঘুমচ্ছিল প্রত্যেকেই ওদের আঙ্গুলের ঠ্যালায় দু এক টাকা ইচ্ছায় অনিচ্ছায় দিচ্ছিল। অভ্যাসগত ভাবে আমিও দশটা টাকা দিলাম। খুচরো টাকা না থাকায় একটু বেশিই গেল। পরিবর্তে ভালোবেসে মাথায় হাতও বুলিয়ে কি আশীর্বাদ করল কে জানে।
ওদেরই একজনের - একজন যাত্রীর দিকে চোখ পড়তেই কেমন যেন থমকে দাঁড়িয়ে গেল। সেই যাত্রীর চোখের দৃষ্টির রেখা টেনে দেখা গেল এক ভদ্রমহিলার আনাবৃত উন্মুক্ত পিঠের ওপর স্থির দৃষ্টি আটকে আছে যেখানে দুটি সরল রেখার মত অসতর্ক অন্তর্বাসীয় ইলাস্টিক বিদ্যমান।
দু পা এগিয়ে গিয়ে মহিলার আঁচল টা নিয়ে সযত্নে ঢেকে দিল নারীর অসতর্ক লজ্জা অনেক সন্মান আর ভালোবাসা দিয়ে।
ওদের আর একজন জানতে চাইছিল
- কি হয়েছে র্যা ।
- মানুষের সাথে বাসে কিছু রাক্ষসও ওঠে বে, চোখ দিয়ে চাটছিলো শ্শালা।
চাবুক টা যেন সপাং করে আমাদের মুখের ওপর আছড়ে পড়ল।
আমিও ব্যপারটা আগেই খেয়াল করেছিলাম কিন্তু প্রতিবাদ তো করতে পারিনি।
এক বৃদ্ধ ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে বাসের গতির সাথে টাল খেয়ে পড়ছিলেন। সামনের সিটে একটা অল্প বয়সের ছেলে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে না দেখার ভান করে বসেছিল।
- অ ভালোমানুষের ছেলে। বুড়ো বাপটা সামনে দাঁড়িয়ে আছে দেখতে পাচ্ছিস না।
নিজের বাপ হলে কি কত্তিস বে।
নিমেষে বৃদ্ধ বসলেন ছেলেটির আসনে।
আমরা পারিনি।
ওরা নেমে যাওয়ার আগেই একটা বাচ্চা ছেলে বাসে উঠেই কাঁদো কাঁদো ভাবে পয়সা চাইতে লাগল।
- বাবু আমি আর মা দু দিন কিছু খাইনি।
খুবই মায়া হচ্ছিল। দু এক টাকা দিতেও যাচ্ছিলাম। কিন্তু তখনই ওদের মধ্যে একজন খেঁকিয়ে উঠে বলল।
- কি বে ঢপ দিছ্ছিস্।
- না গো সত্যি বলছি। দেখবে চলো। বাবাটা দশদিন আগে মরে গেছে। আমি ফোর এ পড়তাম। ছেড়ে দিয়েছি।
- এই লে টাকা। চাল লিয়ে বাড়ি যা শ্শালা। মা বেটায় খেয়ে লিবি। কি বে খেতে পেলে পড়বি।
- হ্যাঁ - এ্যাঁ - এ্যাঁ
- তুই তো আমাদের থেকে বড় ভিখিরি বে। চল বে তোর বাড়ি দেখে আসি। এ্যাই চল্ল্ আজ ইনকাম ইস্টপ্। লে, আর এট্টা পুষ্যি বাড়লো।
ওরা সবাই নেমে গেল।
বাস হাওয়ায় উড়ে হু হু করে চলছে।
আমি দেখলাম ওরা তিন জন বাচ্চাটার হাত ধরে বাসের অনেক আগে আগে হেঁটে চলেছে।
আমাদের তীব্র গতিতে চলা বাস ওদেরকে ছূঁতেও পারছে না।
কোনোদিনও পারবে না।
ওরা যে অনেক এগিয়ে।🍀
Monday, May 2, 2022
Tuesday, April 26, 2022
বাবা, কিছু আনোনি মেলা থেকে?
দুটোই
=======
বাবা, কিছু আনোনি মেলা থেকে?
ছোটো ছেলেটা স্লেট থেকে মাথা তুলে জিজ্ঞাসা করল।
বাবা উত্তর দিল না। ছেলেটাও আর প্রশ্ন করল না। খারাপ মনটা নিয়ে ছাদে উঠে গেল। সে যখন বড় হবে, মেলা থেকে সবার জন্য জিনিস আনবে। মায়ের জন্য শাড়ি, বাবার জন্য লুঙ্গি, দিদির জন্য টিপের পাতা, তার জন্য ব্যাটারি দেওয়া খেলনা।
অনেক দিন গেল। ছেলেটা এখন ভালো চাকরি করে। গ্রামে আসার সময় পায় না। বছরের পর বছর মেলা হয়ে যায়। দিদির বিয়ে হয়ে গেছে, সেও থাকে বাইরে। বাবা আর মা গ্রামেই থাকে। তারা আসবে না শহরে।
এক বছর সে এলো গ্রামে। তখন মেলা বসেছে। সে গেল মেলায়। কিন্তু কেনার মত কিচ্ছু পেলো না। সব ভীষণ সস্তার জিনিস।
বাড়ি ফিরল। বাবা জিজ্ঞাসা করল, কিরে কেমন দেখলি মেলা? একইরকম আছে না?
ছেলে বলল, হ্যাঁ গো।
বাবা জিজ্ঞাসা করল, কিছু কিনলি?
ছেলে বলল, না গো.. কেনার মত কিস্যু নেই....
ছেলেটা ছাদে গেল। রাতের তারারা বাতাসের কানে কানে বলল শাড়ির কথা, লুঙ্গির কথা, টিপের পাতার কথা...ব্যাটারি দেওয়া গাড়ির কথা...ছেলেটা বুঝল না কিছু...ভাবল এলোমেলো বাতাস খালি...
বাবা উঠে এলো ছাদে। হাতে জিলিপির ঠোঙা। বলল, বাবু, এই নে মেলার থেকে আনা...
ছেলে তাকালো। রাস্তার আলোয় অস্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, একবার ভাবল হাইজিনিক হবে কি? পেট ছাড়ে যদি! আবার ভাবল, যা হবে দেখা যাবে।
বাবা বলল, বাবু, জিলিপির দামটা আমি দিইনি, মানে নেয়নি...
ছেলেটা আশ্চর্য হয়ে বলল, কেন?
বাবা বলল, আরে ভুতোন কাকার দোকানের রে...সে বলল, বাবু আমায় চিনল না...তোর জন্য পাঠালো...
ছেলে বেশ কিছুক্ষণ মনে করার চেষ্টা করল। পারল না। ঘড়ি দেখল। সবে সাড়ে আটটা। সাইকেলটা বার করে ছুট লাগালো মেলায়।
খোঁচা খোঁচা দাড়ি। তার দিকে তাকিয়ে হাসছে। হাসিটা চেনা। হাসিটা ম্যাজিকের মত সব বদলে দিল। মেলায় সব কিছু বদলে গেল। মেলা জুড়ে যেন শুধু এক পর্দা সরানো হাসি। সব হঠাৎ ভীষণ দামী যেন, হাজার হাজার টাকা থাকলেও কেনা যায় না।
ছেলেটা শাড়ি কিনল, লুঙ্গি কিনল, টিপের পাতা কিনল, ব্যাটারি দেওয়া গাড়ি কিনল....
মেলা থেকে ফেরার আগে ভুতোন কাকাকে একটা ফতুয়া দিল। ভুতোন কাকার ছলছল চোখে বলল, তুই চিনেছিস এই আমার অনেক রে...
ছেলেটা বলল, না গো, তার চাইতেও বড় আমি নিজেকে চিনেছি..
ভুতোন কাকা কানে কম শোনে। তাছাড়া জোরে জোরে মাইকও বাজছে। ভুতোন কাকা বলল, কি বললি রে? জিলিপি নিবি না গজা?
ছেলেটা ঝাপসা চোখে বলল, দুটোই....
সংগৃহীত।
অনেক লোক চিকিৎসার জন্য বোম্বেতে আসেন। এই দরকারী তথ্য হতে পারে. দয়া করে এটি সংরক্ষণ করুন:
*প্রচার করুন*
*ডিমার্ট এর প্রবর্তক রাধাকিশান দামানি,* মেট্রো সিনেমা, কুইন্স রোড, মুম্বাই এর কাছে *গোপাল ম্যানশন*-এ একটি সুবিধা তৈরি করেছেন যেখানে মুম্বাইতে চিকিৎসাধীন রোগীদের পরিবারের থাকার জন্য 53টি কক্ষ রয়েছে। গতকাল এর উদ্বোধন করা হয়। এটা খুব সুন্দরভাবে করা হয়েছে। শুভাকাঙ্খীদের জন্য এই ধরনের কোনো প্রকৃত প্রয়োজনের জন্য উল্লেখ করতে পারেন।
www.gopalmansion.com
*ঠিকানা:*
গোপাল ম্যানশন
50, কুইন রোড (সিনেমা লেন)
মেট্রো সিনেমার কাছে
মুম্বাই 400 020
*যোগাযোগের ঠিকানা:*
হোয়াটসআপ অ্যাপ মুঠোফোন
৯১ ৮৮৭৯৯ ৮৬৮৯৩
*ই-মেইল:*
fd@gopalmansion.com
gm@gopalmansion.com
*টেলিফোন নম্বর:*
022-2205 5001, 02
*খুব যুক্তিসঙ্গত*
সকালের নাস্তা 30
দুপুরের খাবার থালি 75
ডিনার থালি 75
800 এ রুম
রান্নাঘর এবং ডাইনিং খুব প্রশস্ত।
ব্যাপকভাবে শেয়ার করুন।
আপনার যদি মুম্বাইতে আত্মীয় থাকে তাহলে এই তথ্যটি সবার সাথে শেয়ার করুন। আমরা রোগী ও আত্মীয়দের কোনো চার্জ ছাড়াই টিফিন প্রদান করি। এলাকা - দক্ষিণ মুম্বাই
হাসপাতাল:- জাসলোক, সাইফি, বোম্বে, নায়ার, জেজে, মুম্বাই সেন্ট্রালের কাছাকাছি এবং ভিটি।
*যোগাযোগের ঠিকানা:*
এছাড়াও আপনি আমাদের WhatsApp করতে পারেন
*কল্পেশ লোধা* 9967236006
*মনোজ পাটোয়ারী* 9820645070
*অমরত জৈন* 9029373751
অন্ততপক্ষে এমন লোকদের কাছে ফরওয়ার্ড করুন যারা অন্যদের কাছে ফরওয়ার্ড করে সাহায্য করতে সক্ষম হতে পারে।
*আর.কে. চ্যারিটেবল ট্রাস্ট* এর মতো হোম চিকিৎসা সরঞ্জাম চালু করেছে
*হুইলচেয়ার*
*সাকশন মেশিন*
*জলাশয্যা*
*এয়ারবেড*
*ওয়াকার*
ব্যবহারের জন্য বিনামূল্যে (ফেরতযোগ্য আমানত সহ)
*যোগাযোগ ব্যক্তি:*
*সঞ্জয় শাহ*
9322516628
*চিন্তন পান্ড্য* 7666311942
*যোগ করুন:*
17-ডি, নিসর্গ অ্যাপ।
IDBI ব্যাঙ্কের কাছে
মহাবীর নগর
কান্দিভালি (West)
মুম্বাই - 400 067
*সাই ভিলায়ত্রাই চ্যারিটেবল পলিক্লিনিক*
কম্বার দরবার
শান্তিলাল মোদী রোড ভুরবভাই হলের সামনে কান্দিভালি (West)
মুম্বাই
022-6581 1644
022-2865 9615
*www.kambardarbar.org*
*দিনের সময় চার্জ*
1. *সাধারণ ওপিডি* Re.1 শুধুমাত্র ওষুধের সাথে
প্রতিদিন সকাল 11-30 থেকে বিকাল 4-30
2. *এক্স-রে* Rs.100
প্রতিদিন সকাল 9:00 থেকে বিকাল 5:00
3. *ECG* Rs. 70.00
প্রতিদিন সকাল 9.00 am থেকে 11.00 am
4. *প্যাথলজি* উচ্চ ভর্তুকিযুক্ত হার।
CBC Rs. 20
প্রতিদিন সকাল 8:30 থেকে দুপুর 12:00
5. *চোখ পরীক্ষা* Rs. 20
প্রতিদিন 3.30 pm_
সকাল 9:00 বুধ, শুক্র, শনি।
*ছানি সার্জারি:* সেরা ভারতীয় লেন্স সহ বিনামূল্যে।
লেজার (ফাকো) সার্জারি:
Rs. 5,300 মার্কিন আমদানিকৃত অ-ভাঁজযোগ্য লেন্স
Rs. 10,000 UK আমদানি করা ভাঁজযোগ্য অ্যাসফেরিক লেন্স।
(বাইরে রেট Rs. 40,000)
6. *স্ত্রীরোগবিদ্যা* আইভিএফ / হিস্টেরোস্কোপি
মঙ্গল/বৃহস্পতি/শুক্র: দুপুর ১টা।
7. *স্কিন স্প্ল* Rs. 20
সোম 3.30 pm
8. *অর্থোপেডিক* Rs. 20.00
মঙ্গলবার 3.30 pm
9. *ডায়াবেটিক এবং কার্ডিও* Rs. 20
বুধবার 4.30 pm
10. *চাইল্ড স্প্ল* Rs. 20
শুক্র 5.30 pm
11. *কান/নাক/গলা* Rs. 20
বুধ / শুক্র 3.30 pm
12. *ডেন্টাল* নামমাত্র চার্জ RC চার্জ: Rs. 750
প্রতিদিন 9.00 am থেকে 1.00 pm
প্রতিদিন 2.00 pm থেকে 5.00 pm
13. *ডায়ালাইসিস* বিপিএল রোগীদের জন্য বিনামূল্যে প্রতিদিন
(ফোন: 022-2806 7645)
14. *জরায়ু ক্যান্সার* বিনামূল্যে পরীক্ষা
15. 14 বছর থেকে 24 বছর বয়সী মেয়েদের জন্য *ক্যান্সার বিরোধী ইনজেকশন।*
16. প্রকৃত খরচের 50% @ সিনিয়র নাগরিকদের জন্য *শ্রবণযন্ত্র*। জন্মসূত্রে যোগ্য শিশুদের জন্য বিনামূল্যে।
17. গ্রীষ্মের ছুটিতে সমস্ত ছাত্রদের জন্য নোটবুক এবং অন্যান্য স্টেইনারি আইটেম ছাড়ের হারে।
18. *BE, MBBS, CA, CS, BPHARM, MCA এবং নির্বাচিত MBA ছাত্রদের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের জন্য উচ্চ শিক্ষার জন্য *বৃত্তি।*
*ভিজিট করুন*
www.kambarda bar.org এবং সমস্ত প্রয়োজনীয় ঘের সহ ফর্ম জমা দিন।
অনুগ্রহ করে ইমেইল p_zijn zasainani@rediffmail.com এ যোগাযোগ করুন
*কোনও সুপারিশের প্রয়োজন নেই।*
*দয়া করে শেয়ার করুন*
নেচার'কে 'নাটুরে' (Nature) বলে উচ্চারণ করছে!
বাড়িতে পড়ানোর সময় অভিভাবক খেয়াল করলেন যে, তাঁদের ছেলে 'নেচার'কে 'নাটুরে' (Nature) বলে উচ্চারণ করছে!
কার কাছ থেকে উচ্চারণটি শিখেছে জানতে চাইলে ছেলে জানাল - স্কুলের ইংরেজি শিক্ষকের কাছ থেকে।
ইংরেজি শিক্ষকের কাছে গিয়ে অভিভাবক বিষয়টি জানতে চাইলেন।
তিনি দুঃখ ভারাক্রান্ত কণ্ঠে জানালেন, "চিন্তার কোনও কারণ নেই, ছাত্ররা একটু 'মাটুরে' (Mature) হলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।"
বিষম খেয়ে অভিভাবক প্রধান শিক্ষকের কাছে নালিশ করলেন - "কী ধরনের বিদ্যাপীঠ এটা, স্যার! ছাত্র বলে 'নাটুরে', শিক্ষক বলেন 'মাটুরে'!"
শুনে প্রধান শিক্ষক উদাস হয়ে বললেন, "সবাই শুধু বড় বড় কথা বলে। একজনও ভাল 'লেকটুরে' (Lecture) দিতে পারে না।"
ক্ষিপ্ত অভিভাবক এবার উত্তেজিত হয়ে দেখা করলেন স্কুলের গভর্নিং বডির সভাপতির সঙ্গে।
সভাপতি একটু হতাশ কণ্ঠে বললেন, "আমিও বুঝি। কিন্তু কী করবেন বলুন? এটাই যে এই অঞ্চলের 'কালটুরে' (Culture)।"
অভিভাবকের মাথা এবার বোঁ-বোঁ করে ঘুরতে শুরু করল। তিনি কোনওমতে লোকাল কাউন্সিলরের সঙ্গে দেখা করলেন।
তিনি সব কিছু শুনে প্রবল চিৎকার, চেঁচামেচি করতে করতে বললেন, "আমি জানতাম, আমি আগেই জানতাম, এই স্কুলটার কোনও 'ফুটুরে' (Future) নেই !"
অভিভাবক কাঁপতে কাঁপতে পড়ে গিয়ে মাথা ফাটিয়ে ফেললেন। জ্ঞান হারানোর ঠিক আগে শুনতে পেলেন, কে যেন বলছে, "এটা ফেসবুকে দেব... একটা ‘পিকটুরে’ (Picture) তুলে দে!"
🤦🏻♂️😝🤭😆🤣🤠
বর্ন প্রথা
🌺🌺🌺🌺 🙏🚩
আচ্ছা মাগো বল দেখি
চন্ডাল কারে কয় ।🤔
আমারা নাকি নিচু জাতি ,
ইতিহাসের পাতায় ।।🙇♀️
মানুষের মধ্যে উচু নীচু
কেমন করে হয় ,।🤔
মানুষ শ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণ জাতি।
বলেন মহাশয়।।😏
মা হেসে কয় শোনরে খোকা
চন্ডাল মোরা নয়।🧟♂️
নোংরা শাস্ত্র লিখেছে যারা
চন্ডাল তারা হয়।।👆
আমরা কোনো কালেই
ছিলাম না চন্ডাল। 🧟♂️
কিংবা কোনো পশু পাখি
কুকুর শেয়াল ।।🐕
কুটিল যত শাস্ত্র লিখে
বানিয়েছে নরকের দ্বার। 🧟♂️
বলেছে মোদের অস্পৃশ্য অসূচি
কেড়েছিলো শিক্ষার অধিকার। ।✍
আমার মতে বলি শোন
নিচু জাতি কারা।🤨
বর্ন প্রথার সৃষ্টি করে
বিভেদ করেছে যারা ।।🤨
অসহায় মানুষ কে পশু বানিয়ে
যারা বলি দেয় ।😥
বলতো তারা কেমন করে
মানুষ শ্রেষ্ঠ হয় ।।😥
অন্ধ বিশ্বাসে বোকা বানিয়ে
যুগের পর যুগ। 😓
কত অত্যাচার আর লাঞ্ছনা দিয়ে
পেয়েছে তারা সুখ।।😤
ভক্ত বাঞ্ছা কল্পতরু
হরিচাঁদ আমার ।🙏
দয়া করে পতিত জাতিকে
করিলেন উদ্ধার। ।🙏🚩
গুন ও কর্ম বিচার করে
যদি হয় ব্রাহ্মণ। 👉
তবে আমার হরিচাঁদ
পাবেন শ্রেষ্ঠাসন । 🙏🚩
Monday, April 25, 2022
গায়ত্রী কে? আর সন্ধ্যাদেবীও বা কে?
#গায়ত্রী_মন্ত্ররুপা
======================================
গায়ত্রী কে? আর সন্ধ্যাদেবীও বা কে?
শাস্ত্র বলছে,
'যা সন্ধ্যা সা তু গায়ত্রী দ্বিধাভূত্বা প্রতিষ্ঠিতা'
অর্থাৎ যে সন্ধ্যা সেই ই গায়ত্রীদেবী৷ গায়ত্রী বা সন্ধ্যা দেবীর মাহাত্ম্য অস্বীকারের জায়গা নেই৷ কি সৌরী, কি গাণপত্য, শৈব, বৈষ্ণব বা শাক্ত৷ সন্ধ্যাদেবী সকলের আরাধ্যা৷ ইষ্ট ব্যাতীতও সন্ধ্যার উপাসনা করতেই হবে৷
কেন করতে হবে?
শাস্ত্রানুযায়ী এই সন্ধ্যা বা গায়ত্রী হলেন দেবগণের আদিমাতা৷ বেদেও গায়ত্রী আছেন৷ তাই তাঁকে বেদমাতাও বলা হয়৷ আবার তন্ত্রশাস্ত্রেও তিনি আছেন৷ গায়ত্রী সর্বত্র৷
আমার কথাগুলি কিছুজনের কাছে কটু লাগতেই পারে৷ তথাপি এগুলি আমার কথা নয়৷ এ শাস্ত্রবাক্য৷ বেদবাক্য৷ তন্ত্রশাস্ত্র ও স্বীকৃত৷ তাই অস্বীকারের জায়গা নেই৷
ব্রাহ্মণের ব্রাহ্মণত্ব ও দ্বিজের দ্বিজত্ব বা অভিষিক্তের পদমর্যাদা ধরে রাখতে সন্ধ্যার উপাসনা করতেই হবে৷ বিকল্প পথ নাই দ্বিতীয়৷
এই যে আমরা দেখি হাটে ঘাটে মাঠে বাজারে আজকাল বহুজনই পূজা করেন৷ তা ভালো কথা৷ এবং জনসমাজে একটা ভ্রান্ত মত রয়েছে বা প্রবাদ রয়েছে৷ 'চেনা বামুনের পৈতে লাগেনা'৷
কথাটা কি আদৌ যুক্তিসঙ্গত? যারা এ কথা বলে তাদের কি পৈতে বা শাস্ত্রের শুদ্ধভাষায় যাকে যজ্ঞোপবীত বলা হয়, সেটির মাহাত্ম্য কি জানা আছে? এই পৈতেটা কি খালি একগাছা সাদা সুতো? এটা কি চাইলে যেকেউ গলিয়ে নিয়ে পুজো করতে পারে? এতোটাই সস্তা কি সব জিনিস????
আসলে যে বা যারা বলে তারা কখনো জানতেই চায়নি এই একগাছা সাদা সুতোর জন্য সারাজীবন কি ত্যাগ করতে হয়৷ কতটা করতে হয়৷ যদি জানত তবে এই উক্তি খাটত না৷ যদিও কথাটি একটি প্রবাদবাক্য৷ তথাপি অবজ্ঞার সুরেই এটি অনেকে বলেন৷
যাই হোক, উপনয়ন বলে একটি সংস্কার রয়েছে সনাতনধর্মে৷ বৈদিক আচারে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, বর্ণের উপনয়নের বিধান আছে৷ আবার তন্ত্রশাস্ত্র অনুযায়ী ব্রাহ্মণ আদি চতুর্বর্ণেরই তন্ত্রোক্ত সংস্কার নিয়ে উপনয়নের বিধান আছে৷ দুটি পদ্ধতি আলাদা হলেও আখেরে ঐ সাদা সুতোর জন্য নিয়মপালন একই৷ বর্তমানে বৈদিকাচারে ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যের বিশেষ উপনয়ন পদ্ধতি কেউ পালন না করায় ব্রাহ্মণবর্ণের উপনয়ন সংস্কার লক্ষ্য করা যায়৷ একজন ব্রাহ্মণের ঔরসে ও ব্রাহ্মণীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করলে সেই সন্তান ব্রাহ্মণবর্ণের হয়৷ এবং নির্দিষ্ট সময়ে তার উপনয়ন সংস্কার দিতে হয়৷
এবার বিষয়টি হল একজন ছেলে ব্রাহ্মণ হয়ে জন্মালেই কি সে যজন অর্থাৎ নিজের ঘরে পূজোপাঠ ও যাজন অর্থাৎ অন্যের ঘরে ঘরে গিয়ে পুজো করতে পারবে?
একদমই নয়৷ ব্রাহ্মণ হয়ে জন্মগ্রহণ করলেও তাকে উপযুক্ত উপনয়ন সংস্কার নিতে হবে৷ যখন উপনয়ন হল তখন তাকে বলা হবে 'দ্বিজ'৷ অর্থাৎ দ্বিতীয়বার জন্ম হওয়া বা জাত হওয়া৷ দ্বিজ হলে তখন সে যজন ও যাজনের অধিকার পাবে৷
এবার এখানেও আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ সে উপনয়ন পেলে বা দ্বিজ হয়ে গেলেই কি যজন যাজনের অধিকারী? নাহ৷ তারজন্যও সেখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য আছে৷ তা পালন না করলে পূজো করার অধিকারী হবেনা৷ সেটি হল নিত্যসন্ধ্যাবন্দনা৷ কোন উপনীত ব্রাহ্মণ বা একই ক্ষেত্রে অভিষিক্ত কোন সাধক যদি নিত্যসন্ধ্যাবন্দনা না করে তবে সে পতিত৷ বা শুদ্রের অধম৷ যিনি প্রাতঃকৃত্য করেন না, যিনি সন্ধ্যাহ্নিক করেন না তিনি শুদ্রের অধম৷ তাই তিনি ব্রাহ্মণ হলেও বা অভিষিক্ত সাধক হলেও তিনি কোন পূজাপাঠের অধিকারী হবেন না৷ সন্ধ্যাহীন ব্যক্তি কোন কার্য্যেই অধিকারী না৷ এই ত্রিসন্ধ্যার ওপর ব্রাহ্মণ্য অধিষ্ঠিত৷ অতএব বুঝলেন আশা করি যে ব্রাহ্মণ হয়ে কেবল জন্ম নিলেই হবেনা৷ যথাযোগ্য কর্মের দ্বারা তার ব্রাহ্মণ্য রক্ষাও করতে হবে৷
যে ব্রাহ্মণ কোনদিন ভোরে উঠে প্রাতঃকৃত্যাদি সন্ধ্যাহ্নিক করেন না৷ তিনি অন্যের বাড়ি পূজা করলে বা নিজের বাড়ি করলে অভিচার স্বরুপ৷ তা কোন কাজেই লাগবেনা৷ বৈদিক উপনীত ব্রাহ্মণের কয়েকটি পর্ব্বদিনে ও শ্রাদ্ধদিনে সায়ংসন্ধ্যা নিষেধ হলেও তান্ত্রিক সন্ধ্যা কোনদিনই বন্ধ করা যায়না৷ সংস্কারের দিন থেকেই আজীবন আমৃত্যু সন্ধ্যা কর্তব্য৷ নচেৎ নিত্যকর্ম বা নৈমিত্তিক কর্মে কোন অধিকার হবেনা৷
হর হর মহাদেব শ্রীদুর্গা কালী কালী৷৷ 🌺🌺
======================================
গায়ত্রী কে? আর সন্ধ্যাদেবীও বা কে?
শাস্ত্র বলছে,
'যা সন্ধ্যা সা তু গায়ত্রী দ্বিধাভূত্বা প্রতিষ্ঠিতা'
অর্থাৎ যে সন্ধ্যা সেই ই গায়ত্রীদেবী৷ গায়ত্রী বা সন্ধ্যা দেবীর মাহাত্ম্য অস্বীকারের জায়গা নেই৷ কি সৌরী, কি গাণপত্য, শৈব, বৈষ্ণব বা শাক্ত৷ সন্ধ্যাদেবী সকলের আরাধ্যা৷ ইষ্ট ব্যাতীতও সন্ধ্যার উপাসনা করতেই হবে৷
কেন করতে হবে?
শাস্ত্রানুযায়ী এই সন্ধ্যা বা গায়ত্রী হলেন দেবগণের আদিমাতা৷ বেদেও গায়ত্রী আছেন৷ তাই তাঁকে বেদমাতাও বলা হয়৷ আবার তন্ত্রশাস্ত্রেও তিনি আছেন৷ গায়ত্রী সর্বত্র৷
আমার কথাগুলি কিছুজনের কাছে কটু লাগতেই পারে৷ তথাপি এগুলি আমার কথা নয়৷ এ শাস্ত্রবাক্য৷ বেদবাক্য৷ তন্ত্রশাস্ত্র ও স্বীকৃত৷ তাই অস্বীকারের জায়গা নেই৷
ব্রাহ্মণের ব্রাহ্মণত্ব ও দ্বিজের দ্বিজত্ব বা অভিষিক্তের পদমর্যাদা ধরে রাখতে সন্ধ্যার উপাসনা করতেই হবে৷ বিকল্প পথ নাই দ্বিতীয়৷
এই যে আমরা দেখি হাটে ঘাটে মাঠে বাজারে আজকাল বহুজনই পূজা করেন৷ তা ভালো কথা৷ এবং জনসমাজে একটা ভ্রান্ত মত রয়েছে বা প্রবাদ রয়েছে৷ 'চেনা বামুনের পৈতে লাগেনা'৷
কথাটা কি আদৌ যুক্তিসঙ্গত? যারা এ কথা বলে তাদের কি পৈতে বা শাস্ত্রের শুদ্ধভাষায় যাকে যজ্ঞোপবীত বলা হয়, সেটির মাহাত্ম্য কি জানা আছে? এই পৈতেটা কি খালি একগাছা সাদা সুতো? এটা কি চাইলে যেকেউ গলিয়ে নিয়ে পুজো করতে পারে? এতোটাই সস্তা কি সব জিনিস????
আসলে যে বা যারা বলে তারা কখনো জানতেই চায়নি এই একগাছা সাদা সুতোর জন্য সারাজীবন কি ত্যাগ করতে হয়৷ কতটা করতে হয়৷ যদি জানত তবে এই উক্তি খাটত না৷ যদিও কথাটি একটি প্রবাদবাক্য৷ তথাপি অবজ্ঞার সুরেই এটি অনেকে বলেন৷
যাই হোক, উপনয়ন বলে একটি সংস্কার রয়েছে সনাতনধর্মে৷ বৈদিক আচারে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, বর্ণের উপনয়নের বিধান আছে৷ আবার তন্ত্রশাস্ত্র অনুযায়ী ব্রাহ্মণ আদি চতুর্বর্ণেরই তন্ত্রোক্ত সংস্কার নিয়ে উপনয়নের বিধান আছে৷ দুটি পদ্ধতি আলাদা হলেও আখেরে ঐ সাদা সুতোর জন্য নিয়মপালন একই৷ বর্তমানে বৈদিকাচারে ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যের বিশেষ উপনয়ন পদ্ধতি কেউ পালন না করায় ব্রাহ্মণবর্ণের উপনয়ন সংস্কার লক্ষ্য করা যায়৷ একজন ব্রাহ্মণের ঔরসে ও ব্রাহ্মণীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করলে সেই সন্তান ব্রাহ্মণবর্ণের হয়৷ এবং নির্দিষ্ট সময়ে তার উপনয়ন সংস্কার দিতে হয়৷
এবার বিষয়টি হল একজন ছেলে ব্রাহ্মণ হয়ে জন্মালেই কি সে যজন অর্থাৎ নিজের ঘরে পূজোপাঠ ও যাজন অর্থাৎ অন্যের ঘরে ঘরে গিয়ে পুজো করতে পারবে?
একদমই নয়৷ ব্রাহ্মণ হয়ে জন্মগ্রহণ করলেও তাকে উপযুক্ত উপনয়ন সংস্কার নিতে হবে৷ যখন উপনয়ন হল তখন তাকে বলা হবে 'দ্বিজ'৷ অর্থাৎ দ্বিতীয়বার জন্ম হওয়া বা জাত হওয়া৷ দ্বিজ হলে তখন সে যজন ও যাজনের অধিকার পাবে৷
এবার এখানেও আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ সে উপনয়ন পেলে বা দ্বিজ হয়ে গেলেই কি যজন যাজনের অধিকারী? নাহ৷ তারজন্যও সেখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য আছে৷ তা পালন না করলে পূজো করার অধিকারী হবেনা৷ সেটি হল নিত্যসন্ধ্যাবন্দনা৷ কোন উপনীত ব্রাহ্মণ বা একই ক্ষেত্রে অভিষিক্ত কোন সাধক যদি নিত্যসন্ধ্যাবন্দনা না করে তবে সে পতিত৷ বা শুদ্রের অধম৷ যিনি প্রাতঃকৃত্য করেন না, যিনি সন্ধ্যাহ্নিক করেন না তিনি শুদ্রের অধম৷ তাই তিনি ব্রাহ্মণ হলেও বা অভিষিক্ত সাধক হলেও তিনি কোন পূজাপাঠের অধিকারী হবেন না৷ সন্ধ্যাহীন ব্যক্তি কোন কার্য্যেই অধিকারী না৷ এই ত্রিসন্ধ্যার ওপর ব্রাহ্মণ্য অধিষ্ঠিত৷ অতএব বুঝলেন আশা করি যে ব্রাহ্মণ হয়ে কেবল জন্ম নিলেই হবেনা৷ যথাযোগ্য কর্মের দ্বারা তার ব্রাহ্মণ্য রক্ষাও করতে হবে৷
যে ব্রাহ্মণ কোনদিন ভোরে উঠে প্রাতঃকৃত্যাদি সন্ধ্যাহ্নিক করেন না৷ তিনি অন্যের বাড়ি পূজা করলে বা নিজের বাড়ি করলে অভিচার স্বরুপ৷ তা কোন কাজেই লাগবেনা৷ বৈদিক উপনীত ব্রাহ্মণের কয়েকটি পর্ব্বদিনে ও শ্রাদ্ধদিনে সায়ংসন্ধ্যা নিষেধ হলেও তান্ত্রিক সন্ধ্যা কোনদিনই বন্ধ করা যায়না৷ সংস্কারের দিন থেকেই আজীবন আমৃত্যু সন্ধ্যা কর্তব্য৷ নচেৎ নিত্যকর্ম বা নৈমিত্তিক কর্মে কোন অধিকার হবেনা৷
হর হর মহাদেব শ্রীদুর্গা কালী কালী৷৷ 🌺🌺
Sunday, April 24, 2022
পৃথিবীতে যত ধর্ম মত ও পথ আছে, প্রত্যেক ধর্মের মধ্যে কিছু কিছু ভাল সাধু , বুদ্ধিমান ও পবিত্র ব্যক্তি আছে
জয় শ্রী হরি।
"নিম্ন বিষয় টি পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ"
পৃথিবীতে যত ধর্ম মত ও পথ আছে, প্রত্যেক ধর্মের মধ্যে কিছু কিছু ভাল সাধু , বুদ্ধিমান ও পবিত্র ব্যক্তি আছেণ, এবং তাদের ই শত কর্ম ও মানবিক চিন্তা ধারার জন্য নিজ নিজ ধর্ম গুলি আজ ও চলছে। যেমন শ্রী হরি চাঁদ ঠাকুর তার দ্বাদশ বাণীর মধ্যে একটা বাণীতে বলেছেন " চরিত্র পবিত্র ব্যক্তির প্রতি জাতি ভেদ করিবে না " । ভারতে এর একটা জ্বলন্ত উদাহরণ, ডাক্তার আব্দুল কালাম জি, বিশাল ভারত ভূমির প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, তিনি জাতিতে মুসলমান ছিলেন, কিন্তু তার পবিত্রতার, এবং সাধু কর্মের জন্য সমস্থ মানুষের কাছে বরণীয় ছিলেন আজ ও আছে। ঠিক তেমনি শ্রী গুরু চাঁদ ঠাকুরের সময় ছিলেন ডক্টর সি.এস. মিড , ডিক সাহেব, এবং পাঁচ কড়ি মিয়াঁ । তারা সকলেই বরণীয় এবং স্বরোনীয়।
ঠীক তেমনি একটা স্বরোনীয় ঘটনা আমার সঙ্গে ঘটে ছিল, যখন জীবনে প্রথমবার বাংলাদেশে নিজের মানুষদের খুজে বের করবো এবং মতুয়া তীর্থ রাজ ওড়াকান্দি দর্শন করবো সেই উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম।
ইং:২০১৮, এপ্রিল মাসের ৩০ তারিক দার্জিলিঙ এবং সিকিম পরিবার সহ ঘুরে এসে , কোলকাতায় বসে হঠাৎ সিদ্ধান্ত করলাম পরিবার কে কলকাতা রেখে আমরা ছেলেরা বাংলাদেশ যাবো। কারন প্রথমবার যাবো তাই পরিবার সঙ্গে নিয়ে কোথায় উঠবো, কারন 48 বৎসর পর জীবনে প্রথমবার বাংলাদেশে যাচ্ছি, আত্মীয় স্বজন কেউ কে চিনি না, বাবা মায়ের মুখে যে টুকু শুনেছে সেই জ্ঞান নিয়ে সাহস করে আমরা চারজন আমি, দুজন শিক্ষক তারা হলেন শ্রী কৃষ্ণ প্রসাদ বিশ্বাস, শ্রী বিনয় কৃষ্ণ সরকার, মৃণাল চন্দ্র হালদার (ভাগ্নে) উক্ত তরিকে বোনগা পেট্রাপোল বোর্ডার দিয়ে যাত্রা করলাম।
মাজে একটু বলে যাই, আন্দামান দ্বীপ থেকে যাত্রা করার ৬ মাস আগে দুজন মুসলমান ভদ্রলোক আন্দামান সফরে এসেছিলেন এবং তারা আন্দামানের রাজধানি পোর্ট ব্লেয়ার স্থিত রিপিল রিসর্ট নামে এক হোটেলে দুদিনের জন্য ছিলেন। সেই দু ভদ্রলোকের সঙ্গে আমার এবং ভাগ্নে মৃণালের সঙ্গে ঘন্টাখানীক আলাপ হয়ে ছিল, তখন তিনি কথা প্রসঙ্গে আমন্ত্রণ করলেন যে বাংলাদেশ আসলে ঢাকা স্থিত তার বাস ভবনে একবার যাওয়ার জন্য এবং একটা ভিসিটিং কার্ড ও আমাকে দিয়েছিল। কিন্তু সে সময় স্বপনেও ভাবি নাই যে বাংলাদেশ যাবো।
মজার ব্যপার হল যখন ভিসা করবো, ঐ ভিসা তে যার বাড়িতে যাবো সেই লোকের নাম এবং ঠিকানা সহ মোবাইল নম্বর দিতে হয়। কিন্তু আমাদের কাছে কেউর সঠিক ঠিকানা জানা ছিল না, তখন আমি সেই ব্যক্তির দেওয়া ভিসিটিং কার্ড টা দিয়ে তার নাম দিয়ে ভিসা বের করি, তখন ঐ ভদ্র লোকের নাম টা পড়লাম,তার নাম হল ফির্দোজ আলি খান ঠিকানা বিশ্ব কুড়ির রোড, ঢাকা।
মনের ভিতর একটা আসঙ্ক্ষ হচ্ছিল, যে নূতন আজানা যায়গা, তবু ও মন কে সংযত করে বাবা মা ও শ্রী হরি গুরু চাঁদের নাম স্বরণ করে বাকি তিন জন কে নিয়ে পাড়ি দিলাম বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে । সর্বদা মনের ভিতরে দুটি গানের লাইন অন্তরে অন্তরে গেয়ে চলেছিল সে হল " শ্রী হরি চাঁদের রূপে নয়ন দিয়ে আজ ঘরের বাহির হয়েছি" আর " শ্রীধাম ওড়াকন্ধি চল যাই,এমন দিন আর হবে না ভাই "।
আর বেশী হৃদয় বিদীর্ণ হচ্ছিল যে আজ থেকে 48 বৎসর পূর্বে ছোট্ট একটা শিশু রাতের আধারে মা বাবা তাঁকে বুকে আক্রে ধরে ভারতে চলে এসেছিলেন । ধীরে ধীরে তাদের আচলে বড় হলাম, আজ ফেলে আসা সেই সোনার দেশে যাচ্ছি কিন্তু আজ তারা সঙ্গে নেই, তারা আমাদের রেখে সেই আজানার দেশে চলে গেছে, সেই শিশু আমি অধম, আজ আমি বাবা হয়েছি এবং আপন জনদের খুজে পাওয়ার উদ্দেশ্য যাত্রা করলাম বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে ।
লিখতে গেলে বড় হয়ে যায় কেউ পড়তে চায় না, তাই সংক্ষেপে বলছি।।আত্মীয় স্বজনদের খুব কষ্ট করে খুজে বের করলাম। যেখানে আমার জন্ম হয়েছিল সেই পিতৃ ভিটা জিকে বাড়ির (গোপাল গঞ্জ) মাটিতে স্নেহের দায়ে বহু সম্মানে বারেক ঠেকান মাথা,অস্রুসিক্ত নয়নে জন্ম ভিটার একটু মাটি সঙ্গগ্রহ করলাম , এবং মায়ের মুখে শুনেছিলাম যে ঘরের কোনায় একটা গাব গাছ ছিল , সত্যি দেখলাম সেই গাব গাছটি আজ দাড়িয়ে রয়েছে, চোখে জল আর রুক্ষতে পারলাম না, মা বলে তাঁকে একটা প্রণাম করলাম এবং তাঁকে স্বাক্ষী রেখে এলাম যে আমি এসেছিলাম সেই দুঃখীনি মায়ের বাড়িতে , যেখানে এই অধোম জন্ম গ্রহণ করে ছিল। ঘাটে মাঠে বাটে কয়েকদিন কাটিয়ে যাত্রা করলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে সেই শ্রী ফির্দোস আলি খান দাদার বাড়িতে, শুনেছি মা বাবার মুখে স্বপনের ঢাকা শহরের কথা, তাই মন টা বড় চঞ্চল হয়ে উঠেছিল ঢাকা যাবো। ভিসিটিং কার্ডের ঠিকানা অনুসারে মোবাইল ফোন যোগে শ্রী ফির্দোস আলি দাদার সঙ্গে যোগযোগ করে বললাম আমরা ঢাকা আসছি, শুরুতে উনি অবাক হলেন পরে খুব বিনয়ী ও উত্সাহের সঙ্গে আমাদের আমন্ত্রণ এবং অধির আগ্রহে প্রতীক্ষা করছিলেন। এবং তিনি , কিভাবে কোথায় ঢাকা পৌছাতে হবে সমস্থ বিবারণ বলে দিলেন। তখন পবিত্র রাম যান মাস চলছিল। মনের ভিতর ভয় হচ্ছিল, কিন্তু কেউ কে প্রকাশ করিনি কারন বাকি তিন জন আমার উপর ভরসা করে আমার সাথে এসেছে। মুক্সুদ্পুর থেকে বাসে করে , উনি যে ভাবে বলেছেন, ঠিক সেই ভাবে একটা স্টেশনে নামলাম, তখন বাজে বিকেল 4 টা , দেখি দুজন যুবক ছেলে একটা গাড়ী নিয়ে দাড়িয়ে আছে, নামতেই ওরা জিগস্সা করল, আপনি কি সুধীর বিশ্বাস ?।হ্যা বলতেই আমাদের বেদীং সব গড়িতে তুলে সকলে এক সঙ্গে ঐ গাড়িতে গেলাম। গাড়ী টা খুব আধুনিক এবং খুব সুন্দর, পরে শুনলাম বহুদামী গাড়ী (70 লখ্য টাকার গাড়ী) । ধীরে ধীরে বিশ্ব কুড়ির রোডের পাশে গাড়ি দাড় করানোর সাথে সাথে আর চার জন লোক এসে আমাদের লিপ্টে করে একটা দশ মঞ্জিলা বিল্ডিং নিয়ে গেলেন, খুব ভয় হচ্ছিল , একে তো অচেনা ব্যক্তি, দেখি লীপটের সামনে আলি দাদা দাড়িয়ে আমাদের কে স্বজত্নে ভিতরে নিয়ে গেলেন, তখন সন্ধ্যা 6 টা। বাকি দুজন খুব ভয়ে ভয়ে কথা বলছে , আমি ওদের সান্তণা দিয়ে বললাম ভয় নেই বাবা গুরু চাঁদ রয়েছেন । সঙ্গে সঙ্গে ফির্দোস দাদা, বয়স 55 yrs হবে, বললেন এসো আমরা একসঙ্গে ইফতার করবো। বিভিন্ন ধরনের ফল বড় বড় থালায় সাজিয়ে আমাদের দিলেন এবং নিজে ও খেলেন। তিনি রোজা রাখেন নি ,কারন ওনার সুগারের রোগ আছে বলল। সেখান থেকে পাশেই একটা তিন তারা হোটেল কাম রেস্টুরেন্ট এ আমাদের দুটি রূম দিলেন।।এবং রাত্রের খাবার আমরা ঐ হোটেলে করলাম। এক এক রাত একট একটা রুমের ভাড়া 10 হাজার টাকা করে। আমরা একটু চিন্তিত হলাম,কিন্তু আমি বললাম কোনো চিন্তা করো না,যা হবে দেখা যাবে, মন টা শক্ত করে আনন্দ করো। এই ভাবে অতি যন্ত ও ভক্তির সহিত তিন দিন সম্পূর্ণ ঢাকা শহর আমাদের দাদার নিজের দামিয় গাড়ী দিয়ে ঘুরালেন, যেমন ঢাকেশ্বরী মায়ের মন্দির, শহিদ বেদি, বঙ্গ বন্ধুকে যে ঘরে হত্যা করেছিল, এবং আর দার্শনিক পর্যটক স্থল, বড় বড় মল ইত্যাদি ইত্যাদি । তখন কেবল মাত্র পদ্ম সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল সেই সব বিশিষ্ট স্থানে আমাদের ঘুড়ালেণ।
আসার একদিন আগে শ্রী ফির্দোস আলি খান দাদার সম্পর্কে জানলাম যে, উনি বাংলাদেশের কয়েক জন ধনি ব্যক্তির মধ্যে একজন, উনি হিন্দু মুসলিম সমস্থ মানুষের জন্য একজন উপকারী বন্ধু, উনি 12 জন গরিব হিন্দু ছেলেদের বিদেশে ডাক্তারি (MBBS)পড়ার জন্য নিজে তাদের ব্যঙ্কে সিকিউরিটির টাকা জমা দিয়েছেন। বাংলাদেশে ফির্দোস দাদার " Standard ব্যাঙ্ক" নামে 170 টি শাখা চলছে। মুসলিম ভাইদের জন্য ৮ কোটি টাকা দিয়ে একটা সুন্দর মর্জিদ বানিয়ে দিয়েছেন। 20 টা দেশের মন্ত্রী ভিভাগদের কোট সেলাই করার টেন্ডার পেয়েছেন। তার ঢাকা শহরে দশ তলার বহু বিল্ডিং রয়েছে, সেখানে ফিল্ম আর্টিস্ট, ক্রিকেট খেলোয়ারা ভাড়া থাকেন।
এত বড় ধনি ব্যক্তি কিন্তু তার সাজ পোশাক কথা বার্তা অতি সাধারন মানুষের মত। কোন গরিমা নেই, অনেক মুসলমান ভাইয়েরা আমাকে জিগস্সা করেছিলেন যে , উনি আপনাদের কি হন ? আমি বললাম আমার দাদা, কিন্তু তারা বলে আপনি ত হিন্দু ?
সত্যি উনি একজন সাধু ব্যক্তি, যানি না আমার মধ্যে উনি কি খুজে পেয়েছেন, হয়ত এটা ও শ্রী গুরু চাঁদের ইচ্ছা।
একদিন রাত্রে আমি শ্রী ফির্দোস আলী দাদা কে ধীরে ধীরে আমাদের মতুয়া দর্শন সম্মন্ধে বললাম । শ্রী তিন কড়ি মিয়াঁর কথা, শ্রী সি.এস.মিড সাহেবের কথা অতি ভক্তির সঙ্গে বললাম। উনি খুব মন যোগ দিয়ে শুনলেন। অবশেসে আমি ওনাকে বললাম " দাদা আপনি আমার বাবা হরি চাঁদের লীলা ভূমি ,শ্রী ওড়াকান্দি ধামে এসে এমন কিছু একটা সুন্দর কাজ করে দেবেন যা চিরদিন আমরা তিন কড়ি মিয়াঁর মত আপনাকে মনে করবো।" শ্রী ফির্দোস আলী দাদা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ পরে বললেন, "ভাই সুধীর তুমি যখন বলছ তুমি আবার যখন বাংলাদেশ আসবে আমি অবশ্য তোমার সাথে শ্রীধাম ওড়াকান্দি যাবো "। আমি শুনে খুব ভাবুক হলাম এবং দু নয়নে জল ছল ছল করছিল।
আমরা ঢাকায় যাওয়ার একদিন আগে শ্রী ওড়াকান্দি ধামে গিয়েছিলাম। তাই বড় আশা করে আছি, এবার বাংলাদেশ গেলে শ্রী ফির্দোস আলি দাদা কে নিয়ে শ্রীধাম ওড়াকন্ধি যাব।
তিনদিন ঢাকা শহরে ছিলাম, আশার আগের দিন রাত্রে ফির্দোস দাদা এবং তার পরিবার সকলে এসে আমাদের চার জন কে নূতন বস্ত্র দিলেন। এবং অস্রুসিক্ত নয়নে একে অপরে আলিঙ্গন করলাম। পরদিন সকালে আমরা হোটেলের থাকা ও খাবারের পয়সা/ বিল দিতে গেলাম, হোটেল মালিক বললেন আপনাদের বিল স্বং ফির্দোস দাদা দিয়ে গেছেন, আমি বললাম সেটা কেন হবে, কিন্তু ফির্দোস দাদা কোন কথা শুনলেন না, তিনি তিনদিনে 50 হাজার টাকা বিল হয়েছিল সেটা নিজে আমাদের অজান্তে দিয়ে দিয়েছিলেন। এবং যশোরে আসার জন্য চার টি অতি আধুনিক বাসের টিকিট আমার হাতে খুজে দিয়ে নিজের সেই গাড়িতে করে, আমাদের বাসে উঠিয়ে দিলেন। আসার সময় উনি কেদে দিলেন এবং সেই সঙ্গে আমি ও খুব ভাবুক হয়ে গিয়েছিলাম।
বাসে আসার সময় মনটা উদাস হয়ে বার বার প্রশ্ন জাগছিল , এটা কি হল, কেন হল, কে করাল, বাবা হরি চাঁদ সে নিজে তার ভক্তদের এই ভাবে সম্মান দিল, বাসে বসে একা একা খুব কান্না করলাম এবং সেই সাথে বার বার মায়ের কথা মনে পড়ছিল আর নয়নে অশ্রু জল ঝড়ে ঝড়ে পড়ছিল।
এই হল আমার জীবনে একটা বড় পাওয়া। আর সেই দিনের অপেখা করছি , কবে শ্রী ফির্দোস দাদা কে নিয়ে শ্রীধাম ওড়াকান্দি যাবো। কিছু ছবি নিম্নে দিলাম।
একটু ধর্জ্য ধরে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
জয় শ্রী হরি।
সুধীর, আন্দামাণ দ্বীপ
23/4/2022
"নিম্ন বিষয় টি পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ"
পৃথিবীতে যত ধর্ম মত ও পথ আছে, প্রত্যেক ধর্মের মধ্যে কিছু কিছু ভাল সাধু , বুদ্ধিমান ও পবিত্র ব্যক্তি আছেণ, এবং তাদের ই শত কর্ম ও মানবিক চিন্তা ধারার জন্য নিজ নিজ ধর্ম গুলি আজ ও চলছে। যেমন শ্রী হরি চাঁদ ঠাকুর তার দ্বাদশ বাণীর মধ্যে একটা বাণীতে বলেছেন " চরিত্র পবিত্র ব্যক্তির প্রতি জাতি ভেদ করিবে না " । ভারতে এর একটা জ্বলন্ত উদাহরণ, ডাক্তার আব্দুল কালাম জি, বিশাল ভারত ভূমির প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, তিনি জাতিতে মুসলমান ছিলেন, কিন্তু তার পবিত্রতার, এবং সাধু কর্মের জন্য সমস্থ মানুষের কাছে বরণীয় ছিলেন আজ ও আছে। ঠিক তেমনি শ্রী গুরু চাঁদ ঠাকুরের সময় ছিলেন ডক্টর সি.এস. মিড , ডিক সাহেব, এবং পাঁচ কড়ি মিয়াঁ । তারা সকলেই বরণীয় এবং স্বরোনীয়।
ঠীক তেমনি একটা স্বরোনীয় ঘটনা আমার সঙ্গে ঘটে ছিল, যখন জীবনে প্রথমবার বাংলাদেশে নিজের মানুষদের খুজে বের করবো এবং মতুয়া তীর্থ রাজ ওড়াকান্দি দর্শন করবো সেই উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম।
ইং:২০১৮, এপ্রিল মাসের ৩০ তারিক দার্জিলিঙ এবং সিকিম পরিবার সহ ঘুরে এসে , কোলকাতায় বসে হঠাৎ সিদ্ধান্ত করলাম পরিবার কে কলকাতা রেখে আমরা ছেলেরা বাংলাদেশ যাবো। কারন প্রথমবার যাবো তাই পরিবার সঙ্গে নিয়ে কোথায় উঠবো, কারন 48 বৎসর পর জীবনে প্রথমবার বাংলাদেশে যাচ্ছি, আত্মীয় স্বজন কেউ কে চিনি না, বাবা মায়ের মুখে যে টুকু শুনেছে সেই জ্ঞান নিয়ে সাহস করে আমরা চারজন আমি, দুজন শিক্ষক তারা হলেন শ্রী কৃষ্ণ প্রসাদ বিশ্বাস, শ্রী বিনয় কৃষ্ণ সরকার, মৃণাল চন্দ্র হালদার (ভাগ্নে) উক্ত তরিকে বোনগা পেট্রাপোল বোর্ডার দিয়ে যাত্রা করলাম।
মাজে একটু বলে যাই, আন্দামান দ্বীপ থেকে যাত্রা করার ৬ মাস আগে দুজন মুসলমান ভদ্রলোক আন্দামান সফরে এসেছিলেন এবং তারা আন্দামানের রাজধানি পোর্ট ব্লেয়ার স্থিত রিপিল রিসর্ট নামে এক হোটেলে দুদিনের জন্য ছিলেন। সেই দু ভদ্রলোকের সঙ্গে আমার এবং ভাগ্নে মৃণালের সঙ্গে ঘন্টাখানীক আলাপ হয়ে ছিল, তখন তিনি কথা প্রসঙ্গে আমন্ত্রণ করলেন যে বাংলাদেশ আসলে ঢাকা স্থিত তার বাস ভবনে একবার যাওয়ার জন্য এবং একটা ভিসিটিং কার্ড ও আমাকে দিয়েছিল। কিন্তু সে সময় স্বপনেও ভাবি নাই যে বাংলাদেশ যাবো।
মজার ব্যপার হল যখন ভিসা করবো, ঐ ভিসা তে যার বাড়িতে যাবো সেই লোকের নাম এবং ঠিকানা সহ মোবাইল নম্বর দিতে হয়। কিন্তু আমাদের কাছে কেউর সঠিক ঠিকানা জানা ছিল না, তখন আমি সেই ব্যক্তির দেওয়া ভিসিটিং কার্ড টা দিয়ে তার নাম দিয়ে ভিসা বের করি, তখন ঐ ভদ্র লোকের নাম টা পড়লাম,তার নাম হল ফির্দোজ আলি খান ঠিকানা বিশ্ব কুড়ির রোড, ঢাকা।
মনের ভিতর একটা আসঙ্ক্ষ হচ্ছিল, যে নূতন আজানা যায়গা, তবু ও মন কে সংযত করে বাবা মা ও শ্রী হরি গুরু চাঁদের নাম স্বরণ করে বাকি তিন জন কে নিয়ে পাড়ি দিলাম বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে । সর্বদা মনের ভিতরে দুটি গানের লাইন অন্তরে অন্তরে গেয়ে চলেছিল সে হল " শ্রী হরি চাঁদের রূপে নয়ন দিয়ে আজ ঘরের বাহির হয়েছি" আর " শ্রীধাম ওড়াকন্ধি চল যাই,এমন দিন আর হবে না ভাই "।
আর বেশী হৃদয় বিদীর্ণ হচ্ছিল যে আজ থেকে 48 বৎসর পূর্বে ছোট্ট একটা শিশু রাতের আধারে মা বাবা তাঁকে বুকে আক্রে ধরে ভারতে চলে এসেছিলেন । ধীরে ধীরে তাদের আচলে বড় হলাম, আজ ফেলে আসা সেই সোনার দেশে যাচ্ছি কিন্তু আজ তারা সঙ্গে নেই, তারা আমাদের রেখে সেই আজানার দেশে চলে গেছে, সেই শিশু আমি অধম, আজ আমি বাবা হয়েছি এবং আপন জনদের খুজে পাওয়ার উদ্দেশ্য যাত্রা করলাম বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে ।
লিখতে গেলে বড় হয়ে যায় কেউ পড়তে চায় না, তাই সংক্ষেপে বলছি।।আত্মীয় স্বজনদের খুব কষ্ট করে খুজে বের করলাম। যেখানে আমার জন্ম হয়েছিল সেই পিতৃ ভিটা জিকে বাড়ির (গোপাল গঞ্জ) মাটিতে স্নেহের দায়ে বহু সম্মানে বারেক ঠেকান মাথা,অস্রুসিক্ত নয়নে জন্ম ভিটার একটু মাটি সঙ্গগ্রহ করলাম , এবং মায়ের মুখে শুনেছিলাম যে ঘরের কোনায় একটা গাব গাছ ছিল , সত্যি দেখলাম সেই গাব গাছটি আজ দাড়িয়ে রয়েছে, চোখে জল আর রুক্ষতে পারলাম না, মা বলে তাঁকে একটা প্রণাম করলাম এবং তাঁকে স্বাক্ষী রেখে এলাম যে আমি এসেছিলাম সেই দুঃখীনি মায়ের বাড়িতে , যেখানে এই অধোম জন্ম গ্রহণ করে ছিল। ঘাটে মাঠে বাটে কয়েকদিন কাটিয়ে যাত্রা করলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে সেই শ্রী ফির্দোস আলি খান দাদার বাড়িতে, শুনেছি মা বাবার মুখে স্বপনের ঢাকা শহরের কথা, তাই মন টা বড় চঞ্চল হয়ে উঠেছিল ঢাকা যাবো। ভিসিটিং কার্ডের ঠিকানা অনুসারে মোবাইল ফোন যোগে শ্রী ফির্দোস আলি দাদার সঙ্গে যোগযোগ করে বললাম আমরা ঢাকা আসছি, শুরুতে উনি অবাক হলেন পরে খুব বিনয়ী ও উত্সাহের সঙ্গে আমাদের আমন্ত্রণ এবং অধির আগ্রহে প্রতীক্ষা করছিলেন। এবং তিনি , কিভাবে কোথায় ঢাকা পৌছাতে হবে সমস্থ বিবারণ বলে দিলেন। তখন পবিত্র রাম যান মাস চলছিল। মনের ভিতর ভয় হচ্ছিল, কিন্তু কেউ কে প্রকাশ করিনি কারন বাকি তিন জন আমার উপর ভরসা করে আমার সাথে এসেছে। মুক্সুদ্পুর থেকে বাসে করে , উনি যে ভাবে বলেছেন, ঠিক সেই ভাবে একটা স্টেশনে নামলাম, তখন বাজে বিকেল 4 টা , দেখি দুজন যুবক ছেলে একটা গাড়ী নিয়ে দাড়িয়ে আছে, নামতেই ওরা জিগস্সা করল, আপনি কি সুধীর বিশ্বাস ?।হ্যা বলতেই আমাদের বেদীং সব গড়িতে তুলে সকলে এক সঙ্গে ঐ গাড়িতে গেলাম। গাড়ী টা খুব আধুনিক এবং খুব সুন্দর, পরে শুনলাম বহুদামী গাড়ী (70 লখ্য টাকার গাড়ী) । ধীরে ধীরে বিশ্ব কুড়ির রোডের পাশে গাড়ি দাড় করানোর সাথে সাথে আর চার জন লোক এসে আমাদের লিপ্টে করে একটা দশ মঞ্জিলা বিল্ডিং নিয়ে গেলেন, খুব ভয় হচ্ছিল , একে তো অচেনা ব্যক্তি, দেখি লীপটের সামনে আলি দাদা দাড়িয়ে আমাদের কে স্বজত্নে ভিতরে নিয়ে গেলেন, তখন সন্ধ্যা 6 টা। বাকি দুজন খুব ভয়ে ভয়ে কথা বলছে , আমি ওদের সান্তণা দিয়ে বললাম ভয় নেই বাবা গুরু চাঁদ রয়েছেন । সঙ্গে সঙ্গে ফির্দোস দাদা, বয়স 55 yrs হবে, বললেন এসো আমরা একসঙ্গে ইফতার করবো। বিভিন্ন ধরনের ফল বড় বড় থালায় সাজিয়ে আমাদের দিলেন এবং নিজে ও খেলেন। তিনি রোজা রাখেন নি ,কারন ওনার সুগারের রোগ আছে বলল। সেখান থেকে পাশেই একটা তিন তারা হোটেল কাম রেস্টুরেন্ট এ আমাদের দুটি রূম দিলেন।।এবং রাত্রের খাবার আমরা ঐ হোটেলে করলাম। এক এক রাত একট একটা রুমের ভাড়া 10 হাজার টাকা করে। আমরা একটু চিন্তিত হলাম,কিন্তু আমি বললাম কোনো চিন্তা করো না,যা হবে দেখা যাবে, মন টা শক্ত করে আনন্দ করো। এই ভাবে অতি যন্ত ও ভক্তির সহিত তিন দিন সম্পূর্ণ ঢাকা শহর আমাদের দাদার নিজের দামিয় গাড়ী দিয়ে ঘুরালেন, যেমন ঢাকেশ্বরী মায়ের মন্দির, শহিদ বেদি, বঙ্গ বন্ধুকে যে ঘরে হত্যা করেছিল, এবং আর দার্শনিক পর্যটক স্থল, বড় বড় মল ইত্যাদি ইত্যাদি । তখন কেবল মাত্র পদ্ম সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল সেই সব বিশিষ্ট স্থানে আমাদের ঘুড়ালেণ।
আসার একদিন আগে শ্রী ফির্দোস আলি খান দাদার সম্পর্কে জানলাম যে, উনি বাংলাদেশের কয়েক জন ধনি ব্যক্তির মধ্যে একজন, উনি হিন্দু মুসলিম সমস্থ মানুষের জন্য একজন উপকারী বন্ধু, উনি 12 জন গরিব হিন্দু ছেলেদের বিদেশে ডাক্তারি (MBBS)পড়ার জন্য নিজে তাদের ব্যঙ্কে সিকিউরিটির টাকা জমা দিয়েছেন। বাংলাদেশে ফির্দোস দাদার " Standard ব্যাঙ্ক" নামে 170 টি শাখা চলছে। মুসলিম ভাইদের জন্য ৮ কোটি টাকা দিয়ে একটা সুন্দর মর্জিদ বানিয়ে দিয়েছেন। 20 টা দেশের মন্ত্রী ভিভাগদের কোট সেলাই করার টেন্ডার পেয়েছেন। তার ঢাকা শহরে দশ তলার বহু বিল্ডিং রয়েছে, সেখানে ফিল্ম আর্টিস্ট, ক্রিকেট খেলোয়ারা ভাড়া থাকেন।
এত বড় ধনি ব্যক্তি কিন্তু তার সাজ পোশাক কথা বার্তা অতি সাধারন মানুষের মত। কোন গরিমা নেই, অনেক মুসলমান ভাইয়েরা আমাকে জিগস্সা করেছিলেন যে , উনি আপনাদের কি হন ? আমি বললাম আমার দাদা, কিন্তু তারা বলে আপনি ত হিন্দু ?
সত্যি উনি একজন সাধু ব্যক্তি, যানি না আমার মধ্যে উনি কি খুজে পেয়েছেন, হয়ত এটা ও শ্রী গুরু চাঁদের ইচ্ছা।
একদিন রাত্রে আমি শ্রী ফির্দোস আলী দাদা কে ধীরে ধীরে আমাদের মতুয়া দর্শন সম্মন্ধে বললাম । শ্রী তিন কড়ি মিয়াঁর কথা, শ্রী সি.এস.মিড সাহেবের কথা অতি ভক্তির সঙ্গে বললাম। উনি খুব মন যোগ দিয়ে শুনলেন। অবশেসে আমি ওনাকে বললাম " দাদা আপনি আমার বাবা হরি চাঁদের লীলা ভূমি ,শ্রী ওড়াকান্দি ধামে এসে এমন কিছু একটা সুন্দর কাজ করে দেবেন যা চিরদিন আমরা তিন কড়ি মিয়াঁর মত আপনাকে মনে করবো।" শ্রী ফির্দোস আলী দাদা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ পরে বললেন, "ভাই সুধীর তুমি যখন বলছ তুমি আবার যখন বাংলাদেশ আসবে আমি অবশ্য তোমার সাথে শ্রীধাম ওড়াকান্দি যাবো "। আমি শুনে খুব ভাবুক হলাম এবং দু নয়নে জল ছল ছল করছিল।
আমরা ঢাকায় যাওয়ার একদিন আগে শ্রী ওড়াকান্দি ধামে গিয়েছিলাম। তাই বড় আশা করে আছি, এবার বাংলাদেশ গেলে শ্রী ফির্দোস আলি দাদা কে নিয়ে শ্রীধাম ওড়াকন্ধি যাব।
তিনদিন ঢাকা শহরে ছিলাম, আশার আগের দিন রাত্রে ফির্দোস দাদা এবং তার পরিবার সকলে এসে আমাদের চার জন কে নূতন বস্ত্র দিলেন। এবং অস্রুসিক্ত নয়নে একে অপরে আলিঙ্গন করলাম। পরদিন সকালে আমরা হোটেলের থাকা ও খাবারের পয়সা/ বিল দিতে গেলাম, হোটেল মালিক বললেন আপনাদের বিল স্বং ফির্দোস দাদা দিয়ে গেছেন, আমি বললাম সেটা কেন হবে, কিন্তু ফির্দোস দাদা কোন কথা শুনলেন না, তিনি তিনদিনে 50 হাজার টাকা বিল হয়েছিল সেটা নিজে আমাদের অজান্তে দিয়ে দিয়েছিলেন। এবং যশোরে আসার জন্য চার টি অতি আধুনিক বাসের টিকিট আমার হাতে খুজে দিয়ে নিজের সেই গাড়িতে করে, আমাদের বাসে উঠিয়ে দিলেন। আসার সময় উনি কেদে দিলেন এবং সেই সঙ্গে আমি ও খুব ভাবুক হয়ে গিয়েছিলাম।
বাসে আসার সময় মনটা উদাস হয়ে বার বার প্রশ্ন জাগছিল , এটা কি হল, কেন হল, কে করাল, বাবা হরি চাঁদ সে নিজে তার ভক্তদের এই ভাবে সম্মান দিল, বাসে বসে একা একা খুব কান্না করলাম এবং সেই সাথে বার বার মায়ের কথা মনে পড়ছিল আর নয়নে অশ্রু জল ঝড়ে ঝড়ে পড়ছিল।
এই হল আমার জীবনে একটা বড় পাওয়া। আর সেই দিনের অপেখা করছি , কবে শ্রী ফির্দোস দাদা কে নিয়ে শ্রীধাম ওড়াকান্দি যাবো। কিছু ছবি নিম্নে দিলাম।
একটু ধর্জ্য ধরে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
জয় শ্রী হরি।
সুধীর, আন্দামাণ দ্বীপ
23/4/2022
Subscribe to:
Posts (Atom)
Featured Post
-
দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ সাংখ্যযোগ সাংখ্য যোগ সঞ্জয় ঊবাচ তম্ তথা কৃপয়া আবিষ্টম অশ্রুপুর্ন আকুল ঈক্ষনম্ । বিষীদন্তম ইদম্ বাক্যম্ উ...
-
অগস্ত্য উবাচ || ন গৃহ্ণাতি বচঃ পথ্যং কামক্রোধাদিপীডিতঃ | হিতং ন রোচতে তস্য মুমূর্ষোরিব ভেষজম্ || ১|| মধ্যেসমুদ্রং যা নীতা সীত...
-
“এ বংশে জন্মিল যত, শুদ্ধ শান্ত কৃষ্ণ ভক্ত” ( কবি রসরাজ) কৃষ্ণ প্রেমে মাতোয়ারা অপূর্ব ভাবের গোরা শ্রী চৈতন্য জগত ম...