Monday, May 11, 2020

মালগাড়ীর তলায় 16 জন শ্রমিকের মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির যথাযথ উত্তর চাই:-


1) হাইওয়ে না দিয়ে গিয়ে শ্রমিকরা রেল লাইনের ধার ধরে হাঁটছিলেন কেন ? আপনারা কোন জায়গা হেঁটে যেতে হলে পাকা সড়ক দিয়ে যান নাকি রেল লাইনের পাশ দিয়ে হাঁটেন ?

2) রেল লাইনের সাইড বরাবর 100 কিলোমিটার হাঁটলেন অথচ একটিও মালগাড়ী বা গুডস ট্রেন চলতে দেখেন নি এটা অবিশ্বাস্য। রেল লাইনের ধার দিয়ে হাঁটার সময় শ্রমিকরা নিশ্চয় একাধিক মালগাড়ী চলতে দেখেছেন। তার পরেও তাঁরা কি করে ধারণা করলেন রেল লাইনের উপরে ঘুমোনো নিরাপদ ?

3) রেল লাইনের উপরে পাথরের টুকরো ছড়ানো থাকে। কোন মানুষ ঘুমোলে রেল লাইনের পাশের জমিতে ঘুমোবেন। রেল লাইনের পাথরের টুকরোর উপরে কেউ ঘুমোবেন না। এক্ষেত্রে এতজন লোক কেন রেল লাইনের উপরে শুয়ে ঘুমোচ্ছিলেন ?

4) মালগাড়ী পাঁচ কিলোমিটার দূরে থাকলেও রেল লাইনে প্রবল কম্পন হয়। তাতে রেল লাইনে মাথা রাখা লোক অনেক আগেই বুঝতে পারবেন যে ঐ লাইনে কোন ট্রেন আসছে। এক্ষেত্রে এতজন লোক থাকা সত্ত্বেও কেউ কেন সজাগ ও সতর্ক হলেন না ?

যা ঘটেছে তা অত্যন্ত সন্দেহজনক এবং উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত প্রয়োজন। অনেকের সন্দেহ শ্রমিকদের আগেই খুন করে বা খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে তাঁদের দেহ রেল লাইনে ফেলা হয়েছিল। এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত হতে পারে। উদ্দেশ্য লক ডাউনের ফলে মানুষ মারা যাচ্ছেন এটা প্রমাণ করা এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে বদনাম করা। সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে লকডাউন তুলতে মরিয়া একটি বিশেষ গোষ্ঠী। তার জানে লকডাউন উঠে গেলে করোনা রোগ দেশে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। এটা করতে পারলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে এবং সরকার দিশাহারা হয়ে যাবে। কিন্তু এই চক্রান্ত কোন মতেই সফল হতে দেওয়া যাবে না। লক ডাউন কঠোরভাবে পালন করুন। করোনা থেকে বাঁচার এটাই আপাতত একমাত্র রাস্তা ।

Thursday, May 7, 2020

মিথ ও বাস্তব : টিপু সুলতান

       যাদের বয়স এখন ত্রিশের কোটায়, তারা ছোটোবেলাতে দেখেছে জনপ্রিয় টিভি সিরিয়াল "দ্য সোর্ড অব টিপু সুলতান"। দেশপ্রেমে ভরপুর এক রূপকথার নায়ক। জাতীয়তাবাদী মহিমাতে উজ্জ্বল। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের নক্ষত্র। 
       ভারতের ইতিহাস চর্চা ইউরোপীয় ও বামপন্থী ঐতিহাসিক ভাবাদর্শে চলে আসছে চিরকাল। তাই পদে পদে বিকৃতি। যদুনাথ সরকার বা রমেশ চন্দ্ররা ব্রাত্য এখানে  ইরফান হাবিব বা রোমিলা থাপারেরা যা গেলায় আমরাও তাই গিলি। চলুন, টিপুচর্চা করা যাক।

       টিপু সুলতান ১৭৫০ সালের ২০ নভেম্বর বর্তমান ব্যাঙ্গালোর থেকে ৩৩ কি.মি দূরে “দিভানাহালি ” নামক স্থানে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতা হায়দার আলী মহীশূর রাজ্যের সেনাপতি ছিলেন৷
          ১৭৮০ সালে টিপু সুলতান নিজেকে মহীশূরের বাদশাহ হিসেবে ঘোষণা করেন এবং মোঘল সম্রাটের মুদ্রা বাতিল করে নিজের নামে মুদ্রা প্রচলন করেন।
         এইচ ডি শর্মার মতে, টিপু সুলতান ভারতকে ইসলামী সাম্রাজ্যে রুপান্তরের জন্য আফগান সম্রাট জামান শাহ এর সহায়তা চান এবং তাকে ভারত আক্রমণের আমন্ত্রণ জানান। টিপু সুলতান হিন্দু এবং খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের জোর করে মুসলমান ধর্মে ধর্মান্তর করেন।
         ১৭৮৮ সালে তিনি কালিকট-এর গভর্নর শের খানকে চিঠি দিয়ে হিন্দুদের মুসলমান ধর্মে ধর্মান্তর করার নির্দেশ দেন। সেই বছরের জুলাই মাসে প্রায় ২০০ জন ব্রাহ্মনকে জোর করে মুসলমান ধর্মে ধর্মান্তর করা হয় এবং গরুর মাংস খাওয়ানো হয়।
         ১৭৯০ সালের ১৯ জানুয়ারি বেকাল (Bekal) এর গভর্নর “বুদরুজ্জুমান খান” কে লেখা চিঠির মাধ্যমে তিনি মালাবার বিজয়ের এবং ৪ লক্ষ হিন্দুকে মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তর করার সংবাদ দেন।
       টিপু সুলতান ২৭টি ক্যাথলিক চার্চ ধ্বংস করার নির্দেশ দেয়। এর ভেতর উল্লেখযোগ্য হচ্ছেঃ
ম্যাঙ্গালোরের Church of Nossa Senhora de Rosario Milagres, Fr Miranda’s Seminary at Monte Mariano, ওমজুড় এর Church of Jesu Marie Jose, বোলার এর Chapel, উল্লাল এর Church of Merces, মুলকি’র Imaculata Conceiciao, পেরার এর San Jose, কিরেম এর Nossa Senhora dos Remedios, কর্কাল এর Sao Lawrence, বার্কুর Rosario, বাইর্নুর এর Immaculata Conceciao, হষ্পেট এর The Church of Holy Cross

    টিপু সুলতান ইসলামী আদলে রাজ্যগুলোর পুনঃ নামকরণ করেন।
যেমনঃ- দিভানহলি থেকে ইউসুফাবাদ,
             মহীশূর থেকে নাসারবাদ, 
             চিত্রদূর্গা থেকে ফারুখিয়া হিসার, 
             গট্টি থেকে ফয়েজ হিসার, 
             ম্যাঙ্গালোর থেকে জালালাবাদ, 
             কন্নড় থেকে কাশানাবাদ, 
             বেপুর (ভৈপুরা) থেকে সুলতানপত্তম/ 
                                                          ফারুকি, 
             ধরওয়াদ/ধার্বাদ থেকে কার্শেদ সওয়ার,
             রত্নাগিরি থেকে মুস্তফাবাদ,
            ডিন্দিগুল থেকে খালিকাবাদ, এবং
            কালিকট থেকে ইসলামাবাদ।

         টিপু সুলতান তার রাজত্বে শিক্ষা ও সরকারি-ব্যবসায়িক কাজকর্মের জন্য ফার্সি এবং উর্দু ভাষার প্রচলন করে। যার ফলে এখনও দক্ষিণ ভারতের কেরালা, তামিলনাড়ু এবং কর্ণাটকের মুসলমানেরা উর্দু ভাষার চর্চা করে।
        টিপু সুলতানের ৪ জন স্ত্রী, ১৫ জন পুত্র এবং কমপক্ষে ৮ জন কন্যা সন্তান ছিল। ১৭৯৯ সালের ৪ই মে ৪৮ বছর বয়সে টিপু সুলতান ব্রিটিশদের হাতে নিহত হন।

     রাজা রাজ্যজয় করবে। শত্রুপক্ষকে হত্যা করবে। এতে অস্বাভাবিকত্ব কিছু নেই। টিপুও শত্রু হত্যা করত। সমস্যা অন্যত্র। শত্রু হত্যার পাশাপাশি বিধর্মীর মুখে গোমাংস পুরে দেওয়া, জোর করে ধর্মান্তর, মন্দির ধ্বংস ( শত্রুপক্ষের মসজিদ অক্ষত, কিন্তু মন্দির ধ্বংস।) ইত্যাদি গুণাবলী টিপুকে বানিয়েছে নিছক এক জেহাদী।


Tuesday, May 5, 2020

মুমিনদের জন্য খুব কষ্ট হয়

হিশাম ইবনে উরওয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘নবী করিম (সা.)-এর মদিনায় হিজরতের তিন বছর আগে খাদিজা (রা.)-এর ইন্তেকাল হয়। তারপর দুই বছর বা এর কাছাকাছি সময় অতিবাহিত হওয়ার পর তিনি আয়েশা (রা.)-কে বিয়ে করেন। তখন তিনি ছিলেন ছয় বছরের বালিকা। তারপর ৯ বছর বয়সে বাসর যাপন করেন।’(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৮৯৬)

আয়েশা (রা.)-এর মাতা-পিতা  স্বপ্রণোদিত হয়ে তাঁকে মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন। সে সময়ের কোনো মুসলিম কিংবা অমুসলিম এ বিয়ের প্রতিবাদ করেনি।  ওহির মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাঁকে বিয়ে করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) তাঁকে বলেছেন, দুইবার তোমার চেহারা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। আমি দেখলাম, তুমি একটি রেশমি কাপড়ে আবৃতা এবং (জিবরাইল) আমাকে বলছেন, ইনি আপনার স্ত্রী, আমি ঘোমটাটা সরিয়ে দেখলাম। দেখি ওই নারী তো তুমিই। তখন আমি ভাবছিলাম, যদি তা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে, তাহলে তিনি তা বাস্তবায়িত করবেন। (বুখারি, হাদিস নং : ৩৮৯৫, ৫০৭৮, ৫১২৫, ৭০১১; মুসলিম, হাদিস নং : ২৪৩৮)।
মুমিনদের জন্য খুব কষ্ট হয়😭
মুমিনদের জন্য খুব কষ্ট হয়😭

Monday, May 4, 2020

এ_কেমন_বুদ্ধিজীবী_এবং_বিশ্ব_মানবতার_বিচার


১। ৩৬০টি মূর্তি ভেঙে মক্কা দখল করা হয়েছে সেই ইতিহাস সারা বিশ্বে গৌরবের সহিত প্রচার করা হচ্ছে এবং ধর্মীয় গ্রন্থে পড়ানো হচ্ছে। মূর্তি ভাংচুর করার কথা বলা তাদের বাক স্বাধীনতা!!! আর এতে মূর্তি পূজারী হিন্দু, বৌদ্ধ, ইহুদি,খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত লাগতেই পারে না!!!

২। আফগান ডাকাত মুহাম্মদ গজনি ১৭ বার ভারতবর্ষ আক্রমণ করে লুটপাট করেছে। না ভাই এটা ভারতের ইতিহাস গ্রন্থে লজ্জাজনক ইতিহাস হিসেবে স্থান পায়নি   বরং ভারতের  ইতিহাস গ্রন্থে গৌরবের সহিত পড়ানো হয়।

৩। উজবেকিস্তানের আরেক ডাকাত  তৈমুর লং যিনি একদিনে ১ লক্ষ হিন্দু হত্যা করেছিল, সে ভারতের ইতিহাস গ্রন্থে বিশ্ব খুনি নয় বরং বিশ্ব নায়ক হিসেবে স্থান পেয়েছে।  তৈমুর নামটি মুসলিমরা ঘৃণা নয় বরং গৌরবের সহিত সন্তানের নামকরণ করে তৈমুর।

৪। উজবেকিস্তানের ডাকাত বংশধর মুঘলরা ৫শ বছর খুন, লুটপাট এবং ধর্ষণ করে অবৈধভাবে ভারতবর্ষ দখল করেছিল সেজন্য তাদের উত্তরাধিকার কেউ লজ্জিত নয় বরং তারা গর্বিত এবং মুঘলরা ভারতবর্ষের ইতিহাস গ্রন্থে নায়ক হিসেবে স্থান পেয়েছে😆😆😆

৫। কিন্তু হাজার হাজার হিন্দুর রক্তের উপর তৈরি এক  বাবরী মসজিদকে হিন্দুরা ভেঙ্গেছে কেন সেজন্য ভারত সাম্প্রদায়িক দেশের তকমা পেল!!!এক বাবরী মসজিদ ভাঙ্গলো কেন সেজন্য অনেক সেকুল্যার হিন্দু নিজেদের হিন্দু বলতে লজ্জা পাচ্ছে,ছি ছি করছে। কিন্তু বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং ভারতের একজন মুসলিমও মুহাম্মদ গজনি, তৈমুর লং এবং মুঘলদের কুকর্মের জন্য নিজেদের মুসলিম বলতে লজ্জা পায় না,ছি ছি করেনা বরং গর্বিত মনে করে।

শুধু তাই নয় গজনি, তৈমুর এবং মুঘলদের কুকর্মের দায় কোন মুসলিমের নয় কিন্তু বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দায় শুধু ভারতের হিন্দুদের নয় বরং বাংলাদেশের ও পাকিস্তানের হিন্দুদেরও । সেজন্য বাংলাদেশের শান্তি প্রিয় মুসলিমরা বাবরি মসজিদ ধ্বংসের অযুহাতে  ১৯৯২ সালে মাত্র কয়েক মাস  হিন্দুদের উপর  অত্যাচার চালিয়ে ১৫% থেকে ১০% এ নামিয়ে দিয়েছে ১৯৯৩ সালে।

 তারপরও ভারত সাম্প্রদায়িক দেশ😢😢😢 এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তান অসাম্প্রদায়িক দেশ 😆😆😆😆
এ কেমন বুদ্ধিজীবী এবং বিশ্ব মানবতার বিচার???
জবাব চাই?? জবাব চাই?? জবাব চাই??

Sunday, May 3, 2020

বিনা খরচে অনলাইন ইনকাম এর সুযোগ দিচ্ছে, কোনো প্রকারের প্রতারণা নেই ,এটার জন্য কোনো খরচ লাগে না,

বিনা খরচে অনলাইন ইনকাম এর সুযোগ দিচ্ছে, কোনো প্রকারের প্রতারণা নেই ,এটার জন্য কোনো খরচ লাগে না, আপনার কোনো বন্ধুদের প্রয়োজন থাকলে তাদের জন্য সঠিক application, এই application এ অসংখ্য মানুষের জীবন পাল্টে যেতে পারে,📲সকলের জন্য দারুন একটি ইনকামের সুযোগ📲
🔰প্রিয় বন্ধু whatsapp ,facebook এগুলো তো অনেক দিন ধরে ব্যবহার করছেন,কিন্তু আজ পর্যন্ত কি কিছু পেয়েছেন,শুধু শুধু এগুলো করে আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন না, তার চাইতে আসুন আমাদের সাথে অনলাইনে মোবাইলের মাধ্যমে প্রতিদিন 1-2 ঘন্টা কাজ করুন।
💰মাসিক ইনকাম 5,000/- থেকে 30,000/-💰
কাজটি শুরু করতে কোনো টাকা লাগবে না।
কিভাবে শুরু করবেন?
👇👇👇👇
📲সবার প্রথমে নিচের লিংকেhttps://m91.co/POU_r ক্লিক করে  আপনার মোবাইলের Playstore  থেকে  Mall91 appsটি ইনস্টল করুন।
👉ইন্সটল হয়ে গেলে open করে Whatsapp মোবাইল নম্বর এবং Refer code- 3NUWB3L  এটা  দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে নিলেই কাজ শুরু করে দিতে পারবেন।
💰এই app থেকে যা ইনকাম করবেন সেই টাকা মোবাইল রিচার্জ করে,শপিং করে এমনকি ইনকাম এর টাকা bankএকাউন্ট ,paytm, upi এর মাধ্যমে ট্রান্সফার করে নিতে পারবেন।
   Note:- (কাজটি কিভাবে করবেন? এবং ইনকাম কিভাবে হবে? এই সব ডিটেলস আপনার WhatsApp নম্বরে অডিও ভিডিওর মাধ্যমে পেয়ে যাবেন তাই অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন করার সময়  Whatsapp নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করবেন।).....

Friday, May 1, 2020

সমাবর্তন উৎসবে মানুষটার জন্য একটা চেয়ার অবধি রাখা হয়নি। অথচ পদাধিকার বলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য, সমস্ত রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তাঁরই অধীনে।

সমাবর্তন উৎসবে মানুষটার জন্য একটা চেয়ার অবধি রাখা হয়নি। অথচ পদাধিকার বলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য, সমস্ত রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তাঁরই অধীনে।

লোকটা রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। লোকটা অপমানিত বোধ করেছিল।

তার মনে হয়েছিল এটা তার ব্যক্তিগত কোনো অপমান নয়। চেয়ারটা, আমাদের সংবিধান-প্রদত্ত যে চেয়ারটা---তার অপমান।

তবুও, লোকটা সেটা নিজের অপমান বলেই মেনে নিয়েছিল। 

এরপরেও লোকটা অপমানিত হয়েছে।

যখনই দেখেছে প্রশাসনের কোনো স্তরে কমিউনিকেশনের অভাব, নির্লজ্জ দলতন্ত্র জাঁকিয়ে বসেছে, যখনই তা নজরে এসেছে, সে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে চিঠি লিখে জানিয়েছে, এবং যথারীতি ফল না মেলায় অপমানিত বোধ করেছে।

লোকটা অপমানিত হয়েছে। তা নিয়ে মিম নেমেছে, তা নিয়ে ঠাট্টা হয়েছে, তা নিয়ে প্রচুর খিল্লি হয়েছে। 

কিন্তু লোকটা থামেনি।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েও লোকটাকে অসম্মানিত হতে হয়েছিল।তখন কিন্তু লোকটা বলেনি যে অপমানিত বোধ করছি। বলেছিল, ওরা ছাত্রছাত্রী, আমার ছেলেমেয়ের মতো। আমি ওদের সঙ্গে বসতে রাজী, ওদের সব কথা শুনতে রাজী।

কী দরকার ছিল বলুন তো? আগের সব রাজ্যপালদের মত চুপচাপ চেয়ারে বসে, ফিতে কেটে, দু-চারটে মিটিং করে , সব ফাইল হাসিমুখে সই করে কাটিয়ে দিতে পারত তো। কী দরকার ছিল?

কিন্তু না।

লোকটা ভেবেছিল, এই রাজ্যটার নাম পশ্চিমবঙ্গ। #বাঙ্গালীর_রাজ্য। একদা গোপালকৃষ্ণ গোখলে বলেছিলেন, "What Bengal thinks today, India thinks tomorrow." লোকটা সেই কৃষ্টি, সেই সংস্কৃতিকে উপলব্ধি করতে এসেছিল। লোকটা ভেবেছিল, 

#বাঙ্গালীর_রাজ্যে_এসে_নতুন_কিছু_শিখবে। অনেক কিছু শিখবে, অনেক কিছু জানবে।

কিন্তু লোকটা আজ দেখছে এই অবস্থা। যেখানে তথ্য লুকিয়ে রাখা হচ্ছে, যেখানে কোদালকে কোদাল বলা যায়না। বললে পুলিশের বাড়ি খেতে হয়।

লোকটা এসব দেখে অপমানিত বোধ করেছে। লোকটা ভেবেছে, এটা #বাঙ্গালার_সংস্কৃতির_অপমান। সেটা তার নিজেরই অপমান ভেবেছে লোকটা।

আজও যখন এই মহামারীর সময়ে তথ্য লুকিয়ে রাখা হচ্ছে, লোকটা বসে থাকেনি। লোকটা চিঠির পর চিঠি লিখে যাচ্ছে। বারবার চিৎকার করছে, কেন্দ্রীয় দলকে এভাবে আপনি আটকাতে পারেন না। এভাবে ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার বিষয়টি অবহেলা করতে পারেন না। আপনি চূড়ান্ত ব্যর্থ, নিজের অপদার্থতা লুকিয়ে রাখতে আপনি অন্যদের দোষারোপ করছেন। নিজের দায়িত্ব পালন করুন ।

এবং, অপমানিত বোধ করছে। নিজের জন্য নয়। আমার, আপনার জন্য। লোকটা ভবিষ্যতেও অপমানিত বোধ করবে।

আপনারা খিল্লি করতে থাকুন। মিম বানাতে থাকুন। লোকটা সীমিত ক্ষমতার মধ্যে তার নিজের যতটুকু কাজ সেটা করেই যাবে। সংবিধানের আওতায় থেকেই।

শ্রদ্ধা নেবেন, মাননীয় রাজ্যপাল জগদীশ ধনখড়ে।
(সংগৃহীত)

বিষয়: হিন্দু (HINDU) লিখেছেন শ্রী জগদীশ রায়। মতুয়া চিন্তক এবং বিশিষ্ট লেখক।

বিষয়: হিন্দু (HINDU) লিখেছেন শ্রী জগদীশ রায়। 
মতুয়া চিন্তক এবং বিশিষ্ট লেখক।

            ভারত বর্ষের সব থেকে বড় ধর্ম হচ্ছে হিন্দু ধর্ম ।এদেশের বেশীর ভাগ জনগণ হিন্দু ধর্ম বলম্বী । তারা তাদের ধর্মকে বিশ্বাস করে আবার অনেকে নিজেকে ‘হিন্দু’ বলে গর্ববোধ ও করেন । যেটা স্বাভাবিক ।
এখানে এই আলোচনায় কারো ব্যক্তিগত বিশ্বাসে আঘাত করার উদ্দেশে নয় । আর আঘাত লাগলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি । কারন কখনও কখনও বিশ্বাসে আঘাত লাগাটাও স্বাভাবিক হয়; যখন সেটাকে যুক্তি-তর্ক দিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করার চেষ্টা না করা হয় । অথবা সুদীর্ঘ  দিনের বিশ্বাসকে এক ঝটকায় ছুড়ে ফেলা অতসহজ নয় । তবুও বিশ্বাসের পাথরকে মূ্র্তিতে রূপান্তরিত করতে হলে যুক্তি-তর্ক-তথ্য ও বিশ্লেষণের ছেনি ও হাতুড়ি দিয়ে সতর্ক ভাবে কাটার চেষ্টা করলে মূ্র্তি তৈরী হ’তে পারে । যেটা তখন বিশ্বাসের পাথর না হয়ে একটা মূ্র্তিতে রূপান্তরিত হবে । 
আমি কেবলমাত্র  সেই বিশ্বাসের পাথরকে মূ্র্তিতে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করছি। মূ্র্তি হবে কি না সেটা জানি না, কারণ সেটা পাঠকরা বলতে  পারবেন । তবে আমি আবার বলছি –কারো ব্যক্তিগত বিস্বাসে আঘাত করা আমার উদ্দেশ্য নয় । উদ্দেশ্য সঠিক তথ্যকে আপনাদের সামনে তুলে ধরা ।

হিন্দু শব্দের উৎপত্তি ও অর্থ:

প্রথমেই আমরা চেষ্টা করি হিন্দু শব্দের উৎপত্তি ও অর্থ সম্পর্কে জানতে। হিন্দু শব্দটি হচ্ছে পার্শি শব্দ । যার অর্থ হীন্ বা নীচতা । যদি হিন্দু শব্দের লম্বা উচ্চারণ করা হয় তাহলে দেখা যাবে হিন্-ন্-ন্ –ন্ –দু । এখানে হিন্ শব্দটি প্রধান । আর হীন্ মানে নীচ্ বোঝায় । ‘হিন্দু’ শব্দটি কিন্তু ব্রাহ্মণদের কোন ধর্ম গ্রন্থে নেই । শ্রুতি,পুরাণ,  বেদ,গীতা রামায়ণ, মহাভারতে অর্থাৎ সংস্কৃতের কোন মৌলিক গ্রন্থে । ‘হিন্দু’ শব্দটি নেই ।

ভারতীয়দের কেন হিন্দু নাম দেওয়া হ’ল?

     ভারতবর্ষে ৭তম শতাব্দি থেকে ১২ম শতাব্দি পর্যন্ত বিশেষ করে মুসলমানদের আক্রমন হয় । আক্রমনকারী মুঘলরা ভারতবর্ষ জয় করার পর এদেশে তাদের রাজত্ব স্থাপিত হয় । এদেশে শাসন কার্জ পরিচালনা করতে গিয়ে তারা দুটো প্রধান সমস্যার সম্মুখিন হয়। 
       প্রথমত:-তারা ভাবল যে আমরা বিজেতা, আমরা এখানের লোকদের পরাজিত করেছি, সুতরাংপরাজিতদের সংঙ্গে আমাদের যেন নসল্ (রক্ত ও সংস্কৃতি) মিশে না যায় । কারণ যারা পরাজিত হয় তারা হীন তো হয়। তাদের সংঙ্গে আমাদের সংস্কৃতি ও রক্ত মিশে যাওয়া উচিত নয় । এটা হ’ল মিশ্রনের সমস্যা ।
দ্বিতীয়ত:- এই পরাজিতদের পৃথক রাখার জন্য তাদের নতুন পরিচয় দেওয়া । এটা স্বভাবিক যে পরাজিতদের কেউ ভাল নাম দেবে না । তাই আত্রমনকারী মুঘলরা এদেশের জনগনকে ‘হিন্দু’(পরাজিত,হীন্,নীচ্)নাম দিল । যেমন- ব্রাহ্মণরা ভারতের মূলনিবাসীদের নাম দিয়েছে-দাস, দস্যু, দানব, রাক্ষস ইত্যাদি ।পরবর্তিতে এরা SC, ST OBC দের ENCOUNTER করার জন্য নাম দিল –হরিজন,গিরিজন,বনবাসি ও দলিত ।
এবিষয়ে বাবা সাহেব Dr. B.R AMBEDKAR ,ANNIHILETION OF CASTE এ বলেছেন-
`সর্ব প্রথম এই চরম সত্যকে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে, হিন্দু সমাজ একটি পৌরানিক কাহিনী । হিন্দু নামটা একটা বিদেশী নাম । ‘হিন্দু’ শব্দটা (আক্রমনকারী) মুসলমানদের দেওয়া নাম। স্থানীয় অধিবাসী  এবং মুসলমানদের মধ্যে স্বাতন্ত্র বোঝানোর জন্য তারা স্থানীয় অধিবাসীদের ‘হিন্দু’ নামে অভিহিত করেছিল । ভারতে মুসলমানদের আক্রমনের পূর্বেকার সময়ে সংস্কৃত ভাষার লেখকদের ‘নেশন’(জাতি) সম্বন্ধে কোন ধারনা ছিলনা । তারা ভারতীয় অধিবাসীদের একটি সাধারণ নামকরনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনি। তাই হিন্দু সমাজের  বাস্তবে কোন অস্তিত্ব নেই । এটা শুধু জাতিগুলির একটি সমষ্টিগত নাম ।
The first and foremost thing that must be recognized is that Hindu Society is a myth. The name Hindu is itself a foreign name. It was given by the Mohammedans to the natives for the purpose of distinguishing themselves. It does not occur in any Sanskrit work prior to the Mohammedan invasion. They did not feel the necessity of a common name because they had no conception of their having constituted a community. Hindu society as such does not exist. It is only a collection of castes.’ 

ব্রাহ্মণরা নিজেদের হিন্দু বলে স্বীকার করেনি কেন?

ঐ সময়ের ব্রাহ্মণরা নিজেদের হিন্দু বলে মেনে নিতে অস্বীকার করে । তারা বলল, যদি তোমরা পরাজিতদের ‘হিন্দু’ অভিহিত করো তাহলে আমরা ‘হিন্দু’ নই । যেভাবে তোমরা আক্রমণকারী এবং বিজেতা  ঠিক একইভাবে আমরাও  আক্রমণকারী এবং আক্রমণ করে আমরাও  এখানকার লোকদের পরাজিত করেছিলাম । তাই তোমরা যদি পরাজিতদের ‘হিন্দু’ অভিহিত করো তাহলে আমরা ‘হিন্দু’ নই । এর প্রমান হচ্ছে – মুসলমান শাসকরা যখন জিজিয়া কর অর্থাৎ ধর্ম কর(RELIGIOUS TAX) চালু করেছিল সেটাতে ব্রাহ্মণদের ছাড় (EXEMPTION) ছিল । ব্রাহ্মণদের এই যে ছাড় ছিল যা প্রমান করে তারা নিজেদের হিন্দু বলে মেনে নিতে স্বীকার  করত না ।
বর্ণাশ্রমে বেষ্টিত ভারতীয়দের হিন্দু বলে প্রমানিত করার রাস্তাটা প্রসারিত হতে শুরু করে 1921সাল নাগাদ। প্রকৃত পক্ষে ব্রাহ্মণরা এখনও নিজেদের হিন্দু মনে করেনা ।এর কারন পরে বলছি । 1922 সালে তারা নাসিকে ‘হিন্দু মহাসভা’ এর স্থাপন করে । কিন্তু কেন? সে ইতিহাস ধাপে ধাপে প্রকাশ করছি । তার অগে আমরা দেখছি রাজা রামমোহন রায় 20 আগষ্ট 1828 সালে ‘ব্রাহ্ম সমাজ’ স্থাপন করেন । দয়ানন্দ সরস্বতী 1875 সালে ‘আর্য সমাজ’ স্থাপন করেন । এই ‘আর্য সমাজ’ স্থাপনের পিছনেও একটা ষড়যন্ত্র আছে । কে এই দয়ানন্দ সরস্বতী ? যিনি গুজরাটি ব্রাহ্মণ। তিনি রাজকোট জেলার টংকারা নামক স্থান থেকে  বম্বে (মুম্বাই) আসেন । বোম্বেতে কেন ? কারণ  1873 সালে মহারাষ্ট্রে মহাত্মা জ্যোতিরাও ফুলে ‘সত্যশোধক’ সমাজ’-এর স্থাপণ করেন । ‘সত্যশোধক’ অর্থাৎ সত্য কলুষিত হয়েগিয়েছিল ব্রাহ্মণদের ষড়যন্ত্রে, তাই তাকে শোধন করা দরকার পড়ে । কিন্তু শয়তানের ষড়যন্ত্রের অভাব হয় না । তাই ।‘সত্যশোধক’ কে ENCOUNTER কারার জন্য এই ‘আর্য সমাজ’-এর স্থাপন ।
এখানে একটা জিনিস আমরা দেখতে পাচ্ছি যে কেউই হিন্দু সমাজ স্থাপন করেননি  । অর্থাৎ 1921 সালের পূর্ব পর্যন্ত ব্রাহ্মণ নামেরই সংগঠণ নির্মান হয়েছে । তারা হিন্দু নামের কোন সংগঠণের নির্মান করেনি । অর্থাৎ হিন্দু নামকে স্বীকার করেনি ।

ব্রাহ্মণরা নিজেদেরকে কখন ও কেন হিন্দু বলে মেনে নিল বা হিন্দু বলে প্রচার শুরু করল ?

ইংলন্ডে 1917-18সাল নাগাদ প্রাপ্ত বয়ষ্কের ভোটাধীকারের আন্দোলন শুরু হয় । কারণ ইংলন্ডেও সকল প্রাপ্ত বয়ষ্কদের  ভোটাধীকার ছিল না । ওখানে যারা Tax দিত এবং যারা লেখাপড়া শেখা লোক ছিল  তাদেরই ভোটাধীকার  ছিল ।আন্দোলন ইংলন্ডে শুরু হয় আর বিপদের ঘন্টা ভারতের ব্রাহ্মণরা শুনতে পায় । কেন? কারন ঐসময় ভারত ছিল ব্রিটিশদের অধীন। ভারেতর ব্রাহ্মণরা মনে করল যে, ইংলন্ডে যদি বয়ষ্কদের ভোটাধীকার চালু হয়ে যায়, তাহলে তো সেটা ভারতেও লাগু হবে । কারন ব্রিটেনে যে আইন পাশ হবে  ভারতেও  সেটা যেকোন সময় লাগু হতে পারে । আর ভারতে যদি  বয়ষ্কদের  ভোটাধীকার আইন লাগু হয় , তাহলে ভারতে যে শুদ্র (OBC) ও অতিশুদ্ররা (SC & ST) আছে এদের সংখ্যা অনেক গুন বেশী; আর ভোটাধীকার হিসাবে নির্বাচণ হলে যাদের সংখ্যা বেশী রাজ ক্ষমতা তাদেরই হবে । ব্রাহ্মণরা ব্রাহ্মণ হিসাবে ভোট চাইলে সব ব্রাহ্মণও যদি এক জনকে ভোট দেয়  সেটা 3.5% ই হবে । ফলে তারা কোন নির্বাচণ ক্ষেত্রেই জিততে পারবেনা । এর ফলে তাদের যে হাজারো বছর ধরে শাসন প্রনালী চলে আসছিল সেটার সমুহ বিপদ ঘনিয়ে আসবে । কিন্তু হিন্দু নামের সংগঠন হলে নেতা ব্রাহ্মণই হবে, আর সমস্ত SC,ST, OBC দেরকে নিজেদের CONTROL এ রাখতে পারবে। এই ভাবনা থেকে তারা 1922 সালে নাসিকে ‘হিন্দু মহাসভা’ এর স্থাপন করে । আর 1925 সালে R.S.S. অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ-এর স্থাপন করে । এই হিন্দু শব্দ হচ্ছে ব্রাহ্মণদের একটা রণ কৌশলের মাধ্যম । তাই তারা প্রচার করছে ‘গর্ব করে বল আমি হিন্দু' । 

ব্রাহ্মণরা সত্যি সত্যি কি নিজেদের হিন্দু বলে মনে করে ? 

এবার ভাবুন ব্রাহ্মণরা সত্যি সত্যি কি নিজেদের হিন্দু বলে মনে করে ? যদি করে তবে তারা ব্রাহ্মণ ছাড়া অন্য জাতির মেয়েকে বিবাহ করে না  কেন? ব্যতিক্রম ২/১ টা ধরার মধ্যে নয় । কিন্তু কখনও  তাদের মেয়েকে অন্য জাতের ছেলের সঙ্গে যখন বিবাহ দেয় , সেটাও রণকৌশল হিসাবে । কারন অন্য জাতের ছেলেটি যদি মেধাবী হয় তাহলে সে যাতে তার সমাজ নিয়ে না ভাবে ,তাকে তাদের গোলাম বানিয়ে রাখার জন্য তুলে নেয় । ব্রাহ্মণরা শুধু ‍SC,ST, OBC দের সামনে এসে বলে যে তারাও হিন্দু । কিন্তু লোক গননায়ও তারা নিজেদের ধর্ম ও যাত দু’টোই ব্রাহ্মনবলে লেখায় বেশীর ভাগ ।

ব্রাহ্মণদের অনুসারে ‘হিন্দু ’শব্দের ব্যাখ্যা কি?

 ব্রাহ্মণরা প্রচার করছে ‘গর্ব করে বল আমি হিন্দু ’। এই ভাবে বহুজনদের কাছে এসে শ্লোগান দেয় । কারণ এটা ওদের কথা । ওদের  আশঙ্কা শুরু হয়েছে যদি কেউ জানতে চায় যে, কিসের ভিত্তিতে গর্ব করা হবে ? ‘হিন্দু’ নাম তো আক্রমনকারী মুসলমানদের দেওয়া ?  তাই তারা প্রচার করছে ইতিহাসের পাতায় পাতায় যে, সিন্ধু থেকে হিন্দু হয়েছে । কিভাবে ? মুসলমানরা ফার্সি ভাষায় কথা বলত । ফারসিতে ‘স’ ‘হ’ –এর মত উচ্চারিত হয়  বা তারা ‘স’ কে ‘হ’ বলত, তাই সিন্ধু থেকে হিন্দু হয়েছে ।  কিন্তু এদের কথা তর্কের খাতিরে মেনে নিলেও ,সেটাতো মুসলমানদের দেওয়া নাম । তা নিয়ে হিন্দুদের  গর্ব করা কি করে সম্ভব ? কারণ হিন্দুত্ববাদীরাতো সব সময় মুসলমানদের বিরোধীতা করছে । 
যদি সিন্ধু থেকে হিন্দু হয়ে থাকে তবে সেটা শুধু সিন্ধু অববাহিকা অঞ্চলে বসবাসকারী লোকদের   ক্ষেত্রে হিন্দু শব্দ প্রযোজ্য হওয়া উচিত ছিল । সম্পূর্ণ ভারতবর্ষের লোকদের ক্ষেত্রে হিন্দু নামাঙ্কণ হওয়ার দরকার পড়ে না । সম্পূর্ণ ভারতবর্ষের লোকদের ক্ষেত্রে হিন্দু নামে চিহ্নিত হওয়ার কারণ,সারা ভারতে মুসলমান শাসন কায়েম ছিল । তাই হিন্দু শব্দের প্রসার সারা ভারতব্যাপী হয়েছিল । আর একটা কথা সিন্ধু থেকে হিন্দু হয়ে থাকলে শুধুমাত্র সিন্ধু অঞ্চলে এই নাম সীমাবদ্ধ থাকা উচিত ছিল ।এতে প্রমাণ হয় সিন্ধু থেকে হিন্দু হয়নি । আরও একটা কথা ‘স’ কে যদি ‘হ’ বলত তাহলে ‘স’ দিয়ে আরও যে সব শব্দ আছে সেগুলোরও পরিবর্তন হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেটা তো হয়নি । যেমন মুসলমান উচ্চারণ "মুহলমান" হয়নি। পার্সি "পার্হি" শিয়া "হিয়া" সুন্নি "হুন্নি" বা সুলেমান "হুলেমান" হয়নি।
যদি সিন্ধু থেকে হিন্দু হয়ে থাকে তাহলে হিন্দুধর্ম অনুসারে‘গঙ্গা’নদীর পরিবর্তে সিন্ধু নদীকে পবিত্র হিসাবে মানা উচিত ছিল। কিন্তু সেটা মানা হয় না। অতএব সিন্ধু থেকে হিন্দু হয়েছে একথাটি মিথ্যা প্রমানিত হল। 

মুসলমানরা কি তলোয়ারের জোরে হিন্দুদের মুসলমান ধর্ম গ্রহন করতে বাধ্য করে ছিল ? যদি করে থাকে তখন ব্রাহ্মণরা কি করছিল ?

       ইতিহাস অনুসারে আমরা জানতে পারি যে, ৩য় শতাব্দীর পর বর্ণ- ব্যবস্থা জাতি ব্যবস্থায়  রূপান্তরিত হয়েছে । জাতি-ব্যবস্থার সঙ্গে ব্রাহ্মণরা অস্পৃশ্যতার সৃষ্টি ও প্রয়োগ করে । তাদের কট্টর বিরেধীদের তারা অস্পৃশ্য ঘোষণ করল । ৭ম শতাব্দীতে আমরা ইসলামের অনুগামী সুফি-সন্তদের কেরালা অঞ্চলের  আশে পাশে দেখতে পাই । এই সময় কেরালায় প্রথম মসজিদ স্থাপিত হয় । ইসলাম কেরালার মাধ্যমে সর্বপ্রথম ভারতে আসে । সুফি-সন্তদের মাধ্যমে ইসলামের প্রচার ভারতে শুরু হয়েছিল । পরবর্তীকালে ইসলামের অনুগামীরা রাজত্ব করার মানসে ভারতে আসতে থাকে । তারা এদেশের মানুষদের যুদ্ধে পরাজিত করে ।
ভারতের ব্রাহ্মণরা বলেছে যে, মুসলমানরা তরবারির শক্তিতে ভারতীয়দের ইসলাম ধর্মে পরিবর্তিত করেছে । এটা কতটা সঠিক ? না কি তারা নিজেদের অপদার্থতাকে লুকিয়ে রাখার জন্য এই চালাকি করছে ? আমরা এটা জেনেছি যে, ব্রাহ্মণ্য ধর্ম দেশের সাধারণ জনগনকে নীচ্ মনে করত, শিক্ষা,সম্পত্বি ও অস্ত্রের অধিকার হরণ করেছিল । উল্টা এদেশের মূলনিবাসীদের কে অস্পৃশ্য বলে ঘোষণা করেছিল । এবং পাশবিক অত্যাচার করত তাদের সঙ্গে । এই সব পাশবিক অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য লোকেরা ধর্মান্তর করে ইসলাম ধর্মকে গ্রহন করেছিল । তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেওয়া হয় যে মুসলমানরা তরবারির জোরে এদেশের জনগনকে ইসলাম ধর্মে  ধর্মান্তরিত করেছিল । প্রশ্ন হচ্ছে যে, তখন ব্রাহ্মণরা কি করছিল ? ব্রাহ্মণরা তাদের ধর্ম রক্ষা করার জন্য কোন সংগ্রাম বা আত্মত্যাগ বা আত্মবলিদান করেছিল কি? যদি করে থাকে তাহলে অন্তত: দু’চার জনতো সহিদ হয়ে থাকবে ? কিন্তু তার কোন নাম গন্ধ আজ পর্যন্ত কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। খুঁজে পাওয়া যাবে কি করে, থাকলে তবে তো ।যদিও গীতায় ব্রাহ্মণ লিখে রেখেছে-‘ধর্ম রক্ষোতি রক্ষম’ । অর্থাৎ তুমি ধর্মকে রক্ষা কর, ধর্ম ‍তোমাকে রক্ষা করবে ।সুতরাং জীবন দিয়ে ব্রাহ্মনদেরকে এই ধর্ম পরিবর্তন বন্ধ করা উচিৎ ছিল এবং তার জন্য আত্মবলি দেওয়া উচিৎ ছিল । কিন্তু ভারতের ইতিহাসে ধর্ম পরিবর্তন বন্ধ করার জন্য ব্রাহ্মণরা কোনপ্রকার আত্মত্যাগ করেছে এরকম কোন নিদর্শন পাওয়া যায় না । 
    আশ্চর্য জনক কথা হচ্ছে যে, যাদের উপর তরবারির জোরে ধর্ম পরিবর্তন করার আরোপ লাগানো হয়েছে ,তাদের প্রশাসন পরিচালনার দায়িত্ব ছিল ব্রাহ্মণদের হাতে ।ঔরঙ্গজেবের উপদেষ্টা ছিল শ্রীধর কুলকার্ণী নামক ব্রাহ্মণ । উল্টা ব্রাহ্মণরা ছত্রপতি শিবাজী মহারাজার বদনাম করে বলেছে ,তিনি ‘হিন্দবী’ অর্থাৎ হিন্দু স্বরাজ স্থাপন করেছিলেন । তিনি না থাকলে সকলের ছুন্নত করেদিত মুসলমানরা । কিন্তু ইতিহাস বলছে তিনি বিশেষ কোন ধর্মের জন্য পক্ষ্য পাতিত্ব কখও করেননি । কারণ তাঁর প্রশাসনে তার পরামর্শ দাতা ছিল কাজী হায়দর নামের একজন মুসলমান । বাংলায় নবাব হুসেন শাহ্-এর সময়ে  ধর্মান্তর ঘটেছে । কিন্তু তখন তার মন্ত্রী ছিলেন সুবুদ্ধি রায় নামের ব্রাহ্মণ । জানিনা তিনি কি সুবুদ্ধি দিতেন ! 
তবে একটা জিনিস খুব গুরুত্ব পূর্ণ হচ্ছে যে, অবিভক্ত ভারতের 99% মুসলমান CONVERTED FROM SC, ST AND OBC.
Collected from Prasanta Roy blogs.