আজ যে বাঙালীরা বেঙ্গল কেমিক্যাল নিয়ে লাফাচ্ছে বেঙ্গল কেমিক্যাল বিক্রি করার খবর শুনেও খুব একটা কারো মনে দোলাচল হয়নি,

হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন (Hydroxychloroquine) ওষুধ নিয়ে এখন গোটা বিশ্ব তাকিয়ে রয়েছে ভারতের দিকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই ওষুধকে করোনার প্রতিষেধক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, ভারতের কাছে চাইছে এই ওষুধ। কিন্তু সঞ্জীবনী এই ওষুধের উৎপত্তিস্থল আসলে কোথায়? গোটা ভারতবর্ষের মধ্যে সর্বপ্রথম পশ্চিমবঙ্গের কলকাতাতেই তৈরি হয় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ওষুধ। আর তা প্রথম তৈরি হয় আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল কেমিক্যালসে।১৯০১ সালে এই সংস্থাটি তৈরি করেছিলেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়।

আমি শুনেছি উনি জমিদার বংশের ছেলে হয়েও কি সরল সাধারন জীবন যাপন করতেন। পরনে থাকত সস্তার মোটা ধুতি, চাদর, গেঞ্জি অথবা গায়ে একটি কোট। দাড়িগোফ মুখে অবিন্যস্ত চুল।
১৮৬১ সালের ২ আগস্ট (বাংলা ১২৬৮ সালের ১৮ শ্রাবন) খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার রাঢ়ুলি গ্রামে তাঁর জন্ম। ডাক নাম ফুলু। ফুলুর সেই আদি জমিদার বাড়ি আজও আছে বাংলাদেশে।
এরপর কলকাতায় হেয়ার স্কুল,অ্যালবার্ট স্কুল,মেট্রোপলিটন কলেজে ভর্তি হন বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টায়। এরপর প্রেসিডেন্সি কলেজ, স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে যান। পি এইডডি আরো আরো।
বাঙালীকে উদ্যোগী শিল্পের দিশা দেখান বাংলায় ফিরে এসে এই আদ্যপান্ত বাঙালী ভদ্রলোকটি। তিনি শিল্পাদ্যোক্তা,কবি,দেশপ্রেমী, শিক্ষক,গবেষক।
ব্রিটিশ সরকার ১৯৩০ সালে তাকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন।

আজীবন অকৃতদার তিনি। নিজের তৈরী ছাত্রছাত্রীকেই নিজের সন্তান ভেবেছেন। দুই বাংলাতেই তিনি ওষুধ শিল্প গড়ে তুলেছেন।
কিন্তু আমরা তাঁর জন্মদিনটা মনে রাখিনি। লোকনাথ,অনুকুল,হনুমান জয়ন্তী পালন করি আমরা কিন্তু আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের জন্মদিনটাই জানিনা। আজ প্রাণের টান পড়ায় তাঁর আবিস্কৃত ঔষধ দরকার হচ্ছে আমাদের।
আজ যে বাঙালীরা বেঙ্গল কেমিক্যাল নিয়ে লাফাচ্ছে বেঙ্গল কেমিক্যাল বিক্রি করার খবর শুনেও খুব একটা কারো মনে দোলাচল হয়নি,কেউ কি খবর রাখো --- ( গপিনাথ বেদান্তী )

Comments

Popular posts from this blog

গুরুচাঁদ চরিত পর্ব :- 3 ওড়াকান্দী ঠাকুর বংশের ইতিহাস

শ্রাবণ_সোমবারের_মাহাত্ম্য

মুশকিল হয়েছিল, শ্মশানে তাঁর পাদুটো কিছুতেই পুড়ছিল না!