Tuesday, September 29, 2020

গুরুচাঁদ চরিত পর্ব :- 97 নিখিল বঙ্গ নমঃশূদ্র সম্মেলন বা খুলনা কনফারেন্স

তের শত চৌদ্দ সালে অসাধ্য সাধন বলে


নমঃশূদ্রে রাজকার্য্য পায়।


শ্রীগুরু চাঁদের সুত শশীবাবু অগ্রদূত


পরে পরে আর সবে ধায়।।


কুমুদ বিহারী ধন্য ‘ডেপুটি’ পদের জন্য


উচ্চ আশা মনে ছিল তাঁর।


‘‘স্বদেশী ভাবনার্যস্য’’ সুফল ফলে অবশ্য


মনে প্রাণে ভাবে বারে বার।।


ওড়াকান্দী গুরুচাঁন্দে বিনয়ে চরণ বন্দে


মনোগত কথা তাঁরে কয়।


গুরুচাঁদ বল দিয়ে মীডের সাহায্য নিয়ে


মনস্কাম তাঁর পূর্ণ হয়।।


আর যাঁরা ছিল সাথ মোহন আর সাধানাথ


অন্যজন নাম সিদ্ধেশ্বর।


রাজ কার্য্য সবে পায় সবে ধন্য ধন্য কয়


নমঃ জাতি হইল উদ্ধার।।


জাতি গ্রাণে পে’ল বল যতনমঃশূদ্র বল


দুর্ব্বলতা ফেলে দিল দুরে।


জাতির শিক্ষার তবে প্রভু বলে বারে বারে


তত্ত্ববোঝে এতকাল পরে।।


পড়িল শিক্ষার সাড়া সব নমঃশূদ্র পাড়া


বিদ্যুৎ তরঙ্গ যেন ছোটে।


পঞ্চদশ বর্ষ মধ্যে নমঃশূদ্র আনে সাধ্যে


শিক্ষা সঙ্গে রাজনীতি বটে।।


জাতি তরে আন্দোলন করে কত সম্মেলন


সারা বঙ্গ জুড়ি ঢেউ চলে।


যত কিছু আন্দোলন যত হয় সম্মিলন


গুরুচাঁদ সকলের মূলে।।


তেরশ’ তিরিশ সালে নমঃশূদ্র সবে বলে


‘‘নমঃশূদ্র যত আছে বঙ্গে।


খুলনা জেলায় এসে সম্মেলন কর শেষে


এস সবে বস এক সঙ্গে।।


আর সবে ডাকি কয় ‘‘স্বজাতির এ সভায়


সভাপতি কারে করা যায়?


লিখি দাও নিজমত নিমন্ত্রণ পত্র সাথ


যাতে কার্য্য সুসমাথা হয়।।’’


প্রতি জেলা হতে কয় ‘‘আমাদের মনে হয়


ওড়াকান্দী গুরুচাঁদ যিনি।


তাহা হতে সমধিক যোগ্য কেহ নহে ঠিক


যোগ্যতম সভাপতি তিনি।।’’


খুলনা জিলার বাসী মনে তাতে বহু খুসী


বহু চেষ্টা করিলেন তাঁরা।।


কর্ম্মাধ্যক্ষ সীতানাথ মুকুন্দ বিহারী সাথ


দুই জনে হাতে হাত ধরা।।


প্রতিভার প্রিয় বীর শ্রীনিরোদ বিহারীর


দিবারাত্র কাটিছে চিন্তায়।


কি কি বস্তু আলোচনা করিবেন সব জনা


কোন কথা কে কি ভাবে কয়?

 

 

সুবক্ত বলিয়া মান্য শ্রীরাই চরণ ধন্য


বাগহাট শহরেতে বাস।


ব্যবসা মোক্তারী তাঁর শক্তি ছিল রচনার


গ্রন্থ এক করিল প্রকাশ।।


শ্রীরাজেন্দ্র মালাকার অতি শুদ্ধ শান্ত নর


ওকালতী করে বাগহাটে।


সম্মেলন হবে বলে তার যাতায়াত চলে


যত সব নেতার নিকটে।।


এই ভাবে দিন গত হল সব সুপ্রস্তুত


ক্রমে দিন ঘনাইয়া আসে।


মুকুন্দ বিহারী যিনি উচাটন হন তিনি


সভা লাগি বহুত তরাসে।।


মুকুন্দের পরিচয় বলি কিছু এসময়


ধন্য বটে সেই মহাজন।


হাইকোর্টে ওকালতী করিতেন মহামতি


কষ্ট সহে জাতির কারণ।।


খুলনা জিলায় জন্ম শুন বলি সেই মর্ম্ম


বাগহাট মহকুমাধীনে।


ঈশ্বর মল্লিক নাম পিতামহ গুণধাম


এক বাক্যে সবে যাঁরে চেনে।।


প্রসন্ন মল্লিক নাম পিতা তাঁর গুণধাম


শান্ত ধীর অতি জ্ঞানবান।


লভিলেন ষড় পুত্র বলিতেছি সেই সূত্র


শিক্ষা ক্ষেত্রে সবে ভাগ্যবান।।


কুমুদ মুকুন্দ দুই শুন পরে পরে কই


অতুল নীরোদ দুই জন।


ক্ষীরোদ পুলিন দোঁহে সবে এক সঙ্গে রহে


ষড় যত্ন অতি সুশোভন।


গুরুচাঁদ কুমুদেরে নিজগুণে দয়া করে


তাই পেল ডেপুটীর পদ।


কুমুদ দেখাল পথ সবে চলে তার সাথ


গতি ধারা কেবা করে রদ?


মহাকর্মী শ্রীমুকুন্দ মনে নাহি রাখে সন্দ


স্মৃতি শক্তি অতীব প্রখর।


কর্ম্মেতে উঠাল তাঁরে কর্ম্ম ও চরিত্র জোরে


মন্ত্রী তাঁরে করে বঙ্গেশ্বর।।


আদি মন্ত্রী নমঃ কুলে ব্যপ্ত রবে ধরাতলে


পূর্ব্ব জন্ম কর্ম্মফল ভাল।


সুতীক্ষ্ণ প্রতিভাশারী চিন্তা বলে মহাবলী


নীরোদ বিহারী ধন্য ছিল।।


আইন সভায় তিনি আসিলেন রণ জিনি


শক্তিশালী উচ্চ হিন্দু সাথে।


আদি নমঃ সভ্যপদ ব্যবস্থা সভার মাঝ


ভীষ্মদেব এল মনোনীতে।।


দৈব দেখ বলবান কিছু পরে মতিমান


যৌবনেতে প্রাণ ছাড়ি গেল।


মনে ভাবি কেন হায় কুসুম শুকায়ে যায়


ঝরে যদি কোন বা ফুটিল?


সুবিজ্ঞ আইনজীবি পরম সুন্দর ছবি


অতুল নামেতে যেই জন।


ঠাকুর বংশের কন্যা নলিনী নামেতে ধন্যা


পত্নীরূপে করিল গ্রহণ।।


এবে সাবজজ তিনি আইনেতে মহাজ্ঞানী


পঞ্চমেতে ক্ষীরোদ বিহারী।


ডেপুটীর পদে আছে পুলিন বিহারী পাছে


আছে এবে মন্ত্রীপদ ধরি।।


গুরুচাঁদ ইহাদেরে গিয়াছেন কৃপা করে


আশীর্ব্বাদ করিলেন কত।


কেবল সুখের দিনে পূর্ব্ব কথা রাখে মনে


নর-নীতি চির পরিচিত।।


সে সব বৃত্তান্ত ছাড়ি মূল গ্রন্থ ভাব ধরি


সম্মেলন কথা কিছু কই।


যাঁর কৃপা বলে নরে পায় সব এ সংসারে


তাঁরে ফেলে কিবা লয়ে রই?


আসিল সভার দিন গুরুচাঁদ ভক্তাধীন


ভক্ত সঙ্গে সভা প্রতি ধায়।


মন্মথ রঞ্জন যিনি প্রভুর সঙ্গেতে তিনি


আনন্দেতে চলিল সভায়।।


জ্ঞানী ভক্ত যঞ্জেশ্বর সঙ্গে সঙ্গে অগ্রসর


হইলেন প্রভুজীর সাথে।


এ দিকেতে খুলনায় সবে পথ-পানে চায়


সভাপতি আসে কোন পথে?


লোক জন সর্ব্বদায় ষ্টীমার ঘাটেতে যায়


ক্ষণে ক্ষণে আনে সমাচার।


স্বেচ্ছাসেবী কর্ম্মী যত ঘুরিতেছে অবিরত


কিবা দিবা কিবা অন্ধকার।।


সুচিত্রিত অশ্বযান ঘাটে রাখে অধিষ্ঠান


বহিয়া আনিতে সভাপতি।


সেতাগণে সারি সারি ঘাটের মঞ্চের পরি


দাঁড়াইল সবে হৃষ্ট মতি।।


হেনকালে কিছু দুরে নদীর বক্ষের পরে


দেখা গেল ষ্টীমার খানি।


দৃষ্টি মাত্রে সবে কয় ‘‘জয় সভাপতি জয়’’


বহুক্ষণ করে জয় ধ্বনি।।


ধীরে ধীরে আসি তটে ষ্টীমার বাঁধিল ঘাটে


গুরুচাঁদ নামিলেন ধীরে।


সবে দৃষ্টি করে তাঁয় অপরূপ দেখা যায়


দেখে সবে জয় ধ্বনি করে।।


নেতাগণ অগ্রসর হইলেন মঞ্চোপর


দন্ডবৎ কর নত শিরে।


প্রভুজী সুহাস হেসে অতিশয় মিষ্টি ভাষে


সবারে কুশল প্রশ্ন করে।।


মুকুন্দ বিহারী যিনি করে কর ধরি তিনি


অশ্বযানে উঠাল প্রভুরে।


প্রভু তাঁরে ডাকি লয় তাই তিনি সঙ্গে রয়


মন্থথ উঠিল একত্তরে।।


স্বেচ্ছাসেবী কর্মী যারা দুই সারি রহে তারা


সারি দীর্ঘ প্রায় বিশ রশি।


গাড়ী চলে ধীরে ধীরে দুই ধারে উচ্চেঃস্বরে


জয়ধ্বনি করে সবে আসি।।


‘‘জয় গুরুচাঁদ জয় জয় সভাপতি জয়


জয় নমঃশূদ্র জয়’’ কহে।


বিরাট মিছিল দেখি অপলকে মেলি আঁখি


নর নারী সবে চেয়ে রহে।।


এ ভাবে মিছিল করে সমস্ত শহর ঘোরে


দলে দলে ছোটে নর নারী।


ঠাকুরের নাম শুনে রূপ দেখে দু’নয়নে


প্রণাম করিছে কর জুড়ি।।


এই ভাবে কিছু পরে সভা মন্ডপের ধারে


মিছিল করিল সবে ভঙ্গ।


আশ্রয় নির্দ্দিষ্ট যথা গুরুচাঁদ চলে তখা


মুকুন্দ বিহারী নিল সঙ্গ।


এই ভাবে রাত্রি যায় পর দিন সভা হয়


সভাপতি গুরুচাঁদ হ’ল।


বঙ্গবাসী প্রধানেরা নমঃশূদ্র সবে যারা


সভামধ্যে সকলে আসিল।।


সভাপতির যে ভাষণ পড়িলেন যেই জন


নিরোদ বিহারী তাঁর নাম।


কোকিল-নিন্দিত স্বরে সে ভাষণ পাঠ করে


বসে শোনে যত গুণধাম।।


এমন সুন্দর সভা রূপে গুণে মনোলোভা


জ্ঞানী গুণী মহাত্মা-মিলন।


এর পূর্ব্বে কোন দিনে দেখে নাই কোন জনে


নমঃকুলে হেন আয়োজন।।


কোন কোন মহাত্মায় এই সবা ক্ষেত্রে রয়


সংক্ষেপেতে দিব পরিচয়।


আনন্দ সাধক যিনি বরিশালে নেতা তিনি


সভাক্ষেত্রে হইল উদয়।

আসিলেন সনাতন নেতা তিনি অন্যজন


পিরোজপুরেতে তাঁর বাস।


ষড়ানন সমাদ্দার সোহাগদলেতে ঘর


উকীল শ্রীভীষ্মদেব দাস।।


যশোহরে বাস জানি বসন্ত পন্ডিত যিনি


সঙ্গে এল আর কতজন।


আসিল যাদব ঢালী মুখে হরি হরি বলি


গুরুচাঁদে করিয়া স্মরণ।।


ঢাকার শহরে বাস শ্রীরজনী কান্ত দাস


একসঙ্গে রেবতী মোহন।


শ্রীজগত সরকার ঢাকার শহরে ঘর


ত্রিপুরার জগত মন্ডল।


আর ছিল বহুতর কত নাম কব আর


সাধ্য নহে কহিতে সকল।।


বেথুড়িয়া গ্রামে বাস যজ্ঞেশ্বর বিশ্বাস


প্রভু সঙ্গে আসিল আনন্দে।


আসিল গোপাল সাধু তারা মধ্যে যেন বিধু


ভক্ত সহ গুরুচাঁন্দে বন্দে।।


এই সম্মেলন হতে নমঃশূদ্র কোন পথে


চালনা করিবে রাজনীতি।


যাহা বলে দয়াময় সভা মধ্যে পাঠ হয়


তাতে সবে জানা’ল স্বীকৃতি।।


সেই সব নীতি কথা প্রকাশ করিব হেথা


যাহা বলে প্রভু দয়াময়।


গুরু যদি দয়া করে তবে বলা যেতে পারে


মোর সাধ্যে তাহা কভু নয়।।


‘‘নমঃশূদ্র জীর্ণ দীন বিদ্যাহীন চিরদিন


রাজা মহারাজ কেহ নয়।


নাহি জানে রাজনীতি বল কিসে হবে সাথী


উচ্চ হিন্দু যে যে পথে যায়?


অন্ন-চিন্তা ভয়ঙ্করী অন্য চিন্তা কিসে করি?


মনে মনে মরি সবে জ্বলে।


গাছের আগায় এসে যারা সুখে আছে বসে


বড় বড় কথা তারা বলে।।


সে-পথ তাদের জন্য আমাদের পথ ভিন্ন


সেই পথে সবে মোরা চলি।


ভোগ হলে জাগে ত্যাগ, কিছু নাই কিসে ত্যাগ?


‘‘ভোগ চাই’’ এই মাত্র বলি।।


বিদ্যা চাই ধন চাই বসন ভূষণ চাই


হতে চাই জজ ম্যাজিষ্ট্রেট।


সাগর ডিঙ্গাতে চাই দেখি সেথা কিবা পাই


কেন রব মাথা করে হেট?


অসহযোগের নীতি নিলে আজ মাথা পাতি


এই জাতি কভু উঠিবেনা।


চিরকাল অন্ধকারে সেই যে রহেছে পড়ে


অন্ধকার আর ঘুচিবেনা।।


অবশ্য দে্শের তবে যাঁরা প্রাণপাত করে


ধন্য তাঁরা মানব জীবনে।


দেশ-প্রীতি দেশ-সেবা কভু ঘৃণা করে কেবা?


তারতম্য রয়েছে বিধানে।।


স্বাধীনতা যদি আসে, তা হতে কি শ্রেষ্ঠ আছে?


বুঝিনা যে এত অন্ধ নই।


তবে যে নামিনা পথে, বহু বাধা আছে তাতে


এড়াইতে পারি বাধা কই?


তর্কের খাতিরে বলি অনুন্নত জাতি গুলি


এক সঙ্গে দিল যোগ দলে।


কি কাজ করিবে তারা? পাবে কোন কার্য্য-ধারা?


কিবা গিয়াছে দাঁড়াইবে ফলে?


ক’জন চাকুরে তারা? আদালতে ঘোরা ফেরা


কতজনে করিতেছে তারা?


স্কুল-ছাড়া কথা হলে বলা যায় কুতুহলে


প্রায় সবে বিদ্যালয়-ছাড়া।।

 

 

তাতে বলি এই নীতি অনুন্নত যত জাতি


তাহাদের পক্ষে নাহি খাটে।


উচ্চ উচ্চ বর্ণ যারা স্কুল আদালতে ভরা


এই নীতি তাহাদের বটে।।


কিন্তু কি আশ্চর্য্য ভাই! তারা বেশী ছাড়ে নাই


প্রায় সবে আছে চাকুরীতে।


আদালতে মোকদ্দমা নিত্য তারা করে জমা


স্কুল খোলা দেখি সর্ব্বক্ষেত্রে।।


এই সব দেখে দেখে লও ভাই সবে শিখে


কোন ভাবে চলিছে সংসার।


বুদ্ধিহীন সরলতা আর নাহি চলে হেথা


কুট-বুদ্ধি বটে দরকার।।


স্বাধীনতা কথা ভাল, নেয়া ভাল দেয়া ভাল


ভাল তাতে নাহিক সন্দেহ।


‘‘কথা মালা’’ যাহা বলে পড়িয়াছে বাল্যকালে


সেই কথা ভুলিওনা কেহ।।


বাঘের গলায় হাঁড় টেনে যদি কর বার


পুরস্কার এক মুঠা ছাই।


যত সব মহাভাগ করিতেছে আত্মত্যাগ


তোমাদের জন্যে কিছু নাই।।


শুন বলি সে প্রমাণ যত সব মতিমান


আত্মত্যাগ করিছে ভারতে।


স্বাধীনতা পাবে যবে কারা উপকৃত হবে?


সেই কথা পার কি বলিতে?


কর্ত্তা আজ যারা যারা সে দিন একত্রে তারা


রচনা করিবে শাসন তন্ত্র।


রাজাদের সে সভায় তোমাদের স্থান নয়


তোমরাত শুধু বাদ্য যন্ত্র।।


যুদ্ধকালে প্রয়োজন বাদ্য যন্ত্র অগণন


যুদ্ধ শেষে কে করে সন্ধান?


যদি থাক সেনাপতি তবে হতে পারে গতি


সেই গুণে তুমি আজ আন।।


যে যে গুণে সেনাপতি কোথা পাবে এই জাতি?


শিশু মাত্র জাগরণ-পথে।


যৌবনের পূর্ণ বেগে যারা আজ চলে আগে


তুলনা কি চলে তার সাথে?


আসিবে যৌবন যবে তোমারো সে ভাব হবে


কালগুণে চলিবে আপনি।


আজ তাতে কার্য্য নাই তাই বলি শুন ভাই


ভুলে যাও সে সব কাহিনী।।


জাতির উন্নতি লাগি হও সবে স্বার্থত্যাগী


দিবারাত্রি চিন্তা কর তাই।


জাতি ধর্ম্ম, জাতি মান জাতি মোর ভগবান


জাতি ছাড়া অন্য চিন্তা নাই।।


কিবা বিদ্যা, কিবা ধনে কিবা শিল্পে, কি বিজ্ঞানে


রাষ্ট্রনীতি ক্ষেত্রে রাজ-কাজে।


সবখানে থাকা চাই তা ভিন্ন উপায় নাই


রাজবেশে সাজ রাজ-সাজে।।


নর নারী দুইজনে প্রতি কার্য্যে প্রতিক্ষণে


তালে তালে হও অগ্রসর।


অলসতা দেও ছেড়ে বল সবে বজ্র স্বরে


‘‘আগে চল নাহি অবসর।।’’


এই বাণী সমর্থন করিলেন সর্ব্ব জন


অন্য সবে বলিলেন কত।


প্রভুর ভাষণ শুনে যত নমঃশূদ্র গণে


ধন্যবাদ করে শত শত।।


সভা ভঙ্গ হল যবে প্রভুজী ডাকিয়া তবে


বলিলেন মুকুন্দের ঠাঁই।


‘‘বাবুজী শুনন কথা কার্য্য শেষ হল হেথা


মনে করি দেশে চলে যাই।।


মুকুন্দ বিহারী তায় দেখালেন সুবিনয়


প্রভু সঙ্গে চলিলেন ঘাটে।


স্বেচ্ছা-সেবী ছিল যারা সঙ্গে সঙ্গে চলে তারা


চলে প্রভু অশ্বযানে উঠে।।

সকলে বিনয় করে প্রভুকে বিদায় করে


অতঃপর প্রভু গেল দেশে।


যবে গৃহে উপস্থিত কুসংবাদ বিপরীত


দেশবাসী জানাইল এসে।।


দূরে পদ্মবিলা গাঁয় উপস্থিত কু-সময়


মুসলমানে করিছে কল্পনা


শাস্তি দিবে নমঃশূদ্রে ফেলি চক্রব্যুহ মধ্যে


এবে বলি সেই সে ঘটনা।।

 


No comments: